You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.12 | যুদ্ধের তৃতীয় সপ্তাহে পূর্বাঞ্চলের পরিস্থিতি | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

যুদ্ধের তৃতীয় সপ্তাহে পূর্বাঞ্চলের পরিস্থিতি

বাঙলাদেশে অসম যুদ্ধের তৃতীয় সপ্তাহে পূর্ব সেক্টার পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁচেছে যেখান থেকে মুক্তিফৌজ বা পাকফৌজ কেউ কাউকে এতটুকু সুবিধা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত নয়।
পাকফৌজের হাতে বর্তমানে দুটি প্রধান সুরক্ষিত অঞ্চল হল— শহর, বিমান বন্দর এবং সেনাবিনাসে সমেত কুমিল্লা এবং শ্রীহট্টের শালুটিকার বিমানবন্দর ও তার নিকটস্থ সুরক্ষিত ফৌজী ঘাঁটি।
অন্যদিকে মুক্তিফৌজের হাতে আছে পাকফৌজকে বেষ্টন করে সমস্ত গ্রামাঞ্চল আর তার চারপাশে সহানুভূতি সম্পন্ন জনগণ। কিন্তু যুদ্ধ জয় সম্পূর্ণ করতে হলে মুক্তিফৌজকে, পাকফৌজকে তার সুরক্ষিত ঘাঁটি থেকে বিতাড়িত করতে হবে অথবা তাদের এমনভাবে অনাহারে রাখতে হবে যাতে তারা নিরুপায় হয়ে আত্মসমর্পণ করে।
তবে শ্রীহট্ট শহর এখন জনশূন্য এবং আপাতত কারও নিয়ন্ত্রণে নেই। কুমিল্লা এবং শ্রীহট্ট, ফৌজী বাসে সরবরাহের পথগুলি মুক্তিফৌজের হাতে থাকায় বিমান পথই একমাত্র ভরসা। কিন্তু এই কালবৈশাখীর মাসে তাও খুব দুরূহ কাজ।
কুমিল্লা, শ্রীহট্ট এবং ময়মনসিংহ এর গ্রামাঞ্চল মুক্তিফৌজের হাতে থাকার অর্থ হলাে খাদ্য উৎপাদনের অঞ্চলটি দখলে থাকা। এই অঞ্চলই আবার পাকিস্তানের আয়ের উৎপাদন ক্ষেত্র। এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলের পশ্চিম অঞ্চল আবার পৃথিবীর মধ্যে সব চেয়ে বড় মৎস্য উৎপাদন এলাকা।

সূত্র: কালান্তর, ১২.৪.১৯৭১