রংপুর-ময়মনসিংহ-কুমিল্লায় বাঙলাদেশ মুক্তিফৌজের প্রচন্ড পাল্টা আক্রমণ
কলকাতা, ২৫ এপ্রিল (ইউএনআই) গত দু’দিন বাঙলাদেশ মুক্তিফৌজ রংপুর-ময়মনসিংহ-সিলেট এবং কুমিল্লা সেক্টরের পাকসৈন্যদের বিরুদ্ধে প্রচন্ড পাল্টা আক্রমণ চালায়। স্বাধীন বাংলাদেশ বেতার কেন্দ্র থেকে এ সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।
সংবাদে বলা হয়েছে যে, রংপুর জেলার কুড়িগ্রামের পটেশ্বরীতে পাক বাহিনীর ঘাটিতে মুক্তিফৌজ ঝাপিয়ে পড়ে এবং পাকিস্তানী সৈন্যরা প্রচণ্ডভাবে ঘায়েল হয়। এই সেক্টরের আর একটি সংঘর্ষে ৭ জন পাকসৈন্য নিহত হয়।
ময়মনসিংহ সেক্টরে শ্রীচদ্দীতে মুক্তিফৌজ একটি সেতু ধ্বংস করে ও পাকসৈন্যদের যােগাযােগ ব্যবস্থা অচল করে দেয়।
ময়মনসিংহে ভৈরব বাজারের পশ্চিম দিকে পুরানাে ব্রহ্মপুত্রের উপর যে রেল সেতুটি ছিল তা মুক্তিফৌজ গত রবিবার পুনরায় উড়িয়ে হয়ে।
এই কাজের সঙ্গে যুক্ত জনৈক গেরিলা যােদ্ধার রিপোের্ট থেকে জানা যায় যে, ১৫ দিন আগে ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সঙ্গে যে রেল যােগাযােগ চালু হয়েছিল উপরােক্ত সেতুটি ধবংস হওয়ার ফলে রেল চলাচল পুনরায় বন্ধ হয়ে যায়।
জামাকন্দি এবং নলপুঞ্জিতে সীমান্তের দুটো পাকিস্তানী ঘাঁটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
কুমিল্লার একটি স্থানে মুক্তিফৌজ মাইন সংযােগে বিস্ফোরণ ঘটায়, ফলে পাক সেনাবাহিনীসহ একটি ট্রাক ধ্বংস হয়ে যায়।
কুমিল্লা সেন্টারে কসবায় পাকিস্তানী সৈন্যদের অস্ত্র ও খাদ্য বােঝাই একটি ট্রালিকে মুক্তিফৌজ সম্পূর্ণভাবে পুড়িয়ে দেয়।
জীবননগর থানায় নতুন পাড়ায় পাকিস্তানী ঘাটির উপর মুক্তিফৌজের গেরিলা স্কোয়াড অতর্কিতে আক্রমণ চালায়, ফলে ৬ জন পাকসৈন্য নিহত হয়।
অস্ত্র ও গােলাবারুদসহ একটি জীপ ও মৃতদেহগুলি ফেলে রেখে পাকসৈন্য পালিয়ে যায়।
সর্বশেষ সংবাদে জানা যায় যে, মুক্তিফৌজের গেরিলা ইউনিট ঢাকা শহরে গ্রেনেড দিয়ে আক্রমন শুরু করেছে।
সূত্র: কালান্তর, ২৬.৫.১৯৭১