You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.24 | ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে মুক্তিফৌজের তৎপরতা | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে মুক্তিফৌজের তৎপরতা

আগরতলা, ২৩ এপ্রিল (ইউএনআই)- সীমান্তের ওপার থেকে পাওয়া খবরে জানা গেল যে, ময়মনসিংহ শহরে ও চট্টগ্রাম এলাকায় বাঙলাদেশের মুক্তিফৌজের সঙ্গে পশ্চিম পকিস্তান বাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে।
পাকবাহিনীর সমর্থনে পাকিস্তানের বিমান বহর প্রচণ্ড বােমাবর্ষণ করে। গতকাল ময়মনসিংহ শহর পাকবাহিনীর অধিকারে এসেছে বলে সংবাদ পাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে আজ সেখানে প্রচণ্ড লড়াই চলছে।
ময়মনসিংহের ৮ কিলােমিটার দক্ষিণে মাধবপুর থেকে পাকবাহিনী অগ্রসর হচ্ছিল। চট্টগ্রাম এলাকাতেও মুক্তিফৌজ আক্রমণ চালিয়ে অফিসার সহ ১৫০ জন সৈন্যকে ঘায়েল করেছে। বিলােলিয় সীমান্তের ৪৮ কিলােমিটার দূরে মেরেশ্বরিয়া গ্রামেও লড়াই চলছে বলে জানা গেছে।
শেরপুর ফেরী এখনাে মুক্তিফৌজের হাতে। আজ সকালে এই ফেরী ঘাটায় ৪ বার পাকবিমান হানা দিয়েছে তাতেই বােঝা যায় পাকবাহিনী শেরপুর শহরের দিকে এগােতে পারে।
আসামের সীমান্ত বরাবর পার্বত্য চট্টগ্রামের লড়াই চলছে বলে জানা গেল।
গতকাল রাজশাহী জেলার রােহামপুরের পূর্ব-পাকিস্তান রাইফেলসের সদর দপ্তর পশ্চিম পাকিস্তানী বাহিনী করেছে বটে কিন্তু নারায়ণগঞ্জ শহরটি তারা হারিয়েছে।
বাঙলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব কামারুজ্জমান নবাবগঞ্জে ও অন্যান্য মুক্তাঞ্চল পরিদর্শন করেন।
মেহেরপুর শহরে পাল্টা আক্রমণের মুখে পাকবাহিনী পিছু হটার সময় প্রায় ৪ শত বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। চাল কল বরফের কারখানাও তার মধ্যে আছে।
আওয়ামী লীগ জানিয়েছে যে কুষ্টিয়া শহর থেকে পাকিবাহিনী ঈশ্বরদির দিকে সরে গেছে। কুষ্টিয়া শহরে প্রায় জনশূন্য শহরটি এখন এখন মুক্তিফৌজের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কুষ্টিয়ার পাশে হরিপুর গ্রামেও পাকবাহিনী আগুন লাগিয়েছে।
পাকবাহিনী দর্শনা দখল করে আছে তবে আওয়ামী লীগের সদস্য ও জাতীয় পরিষদের সদস্য আজিজুর রহমান আকাশ জানাচ্ছেন যে সমগ্র দৌলতপুর ও গঙ্গানি থানা মুক্তিফৌজের হাতে।
শ্রীহট্ট ডাউকি সড়ক ধরে পাকবাহিনীর একটি কলমকে অগ্রসর হতে দেখা গেছে।
কসবা রেল স্টেশনটি এখন মুক্তিফৌজের দখলে। আজ প্রাতে এই অংশে অকস্মাৎ আক্রমণ চালিয়ে ৫০ জন পাকসৈন্যকে তারা ঘায়েল করে।
শ্রীহট্টের মুক্তিফৌজ গেরিলা বাহিনী মুসলিম লীগ নেতা আজমল খানের বাড়ী ধ্বংস করে দেয়। এই লােকটি পাকবাহিনীকে সাহায্য করছিল। তিনি আয়ুবের রাজত্বকালে একজন মন্ত্রী ছিলেন।
মুক্তিফৌজ রাঙামাটি রামগড় পথের দুটি সেতু উড়িয়ে দিয়েছে যাতে পাকবাহিনী সেদিকে না যেতে পারে। চাঁদপুর থেকে ফেরী যাওয়ার পথে একটি সেতু উড়িয়ে দিয়ে মুক্তিফৌজ পাক বাহিনীর অগ্রগতি যুদ্ধ করেছে।

সূত্র: কালান্তর, ২৪.৪.১৯৭১