আখাউড়ার রেল জংশন মুক্তিফৌজের হাতছাড়া
পূর্ব রণাঙ্গনে গঙ্গাসাগরের কাছে পাকফৌজ ৪৮ ঘণ্টার তীব্র সংগ্রামের পর প্রথম দিকে পিছু হঠে । ইউএনআই এর সংবাদে প্রকাশ, শনিবার শেষ পর্যন্ত আখাউড়ার রেল জংশনটি পাকফৌজ দখল করেছে।
রেল জংশন দখলের সঙ্গে সঙ্গেই আখাউড়ার বাজার এবং সংলগ্ন গ্রামগুলি পাকফৌজ জ্বালিয়ে দিয়েছে।
তিতাস নদীর পাড়ে গঙ্গাসাগর সেতুর কাছে সংঘর্ষের তীব্রতা ছিল অনেক বেশি। এখানেই গত তিনদিন ধরে পাকফৌজ বর্ষার জলে আর জলায় আটকে পড়েছিল। আখাউড়ার পশ্চিমে এক বিলের কাছে শ’তিনেক ছত্ৰীসৈন্য নামিয়ে ঐ অবরুদ্ধ ফৌজকে শক্তিশালী করা হয়।
শ্রীহট্ট থেকে সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, শালুটিকার বিমান ক্ষেত্রটি প্রবল বর্ষণের ফলে অকেজো হয়ে পড়েছে। পাকফৌজী বিমানগুলি অবরুদ্ধ গ্যারিসনের সাহায্যে রসদ নিয়ে নামতে পারছে না। ওদিকে মুক্তিফৌজ এই সৈন্যদেলের উপর চাপ আরও শক্ত করার জন্য পাকফৌজের অবস্থা সঙীন হয়ে পড়েছে।
উত্তর-পশ্চিম রণাঙ্গনে মুক্তিযােদ্ধা সাফল্যের সঙ্গে সৈয়দপুরের কাছে এক আচমকা আক্রমণ চালায় এবং কিছু অস্ত্রশস্ত্র বাজেয়াপ্ত করে।
জানা গেছে ঠাকুরগাও এ যেখানে শুক্রবার থেকে লড়াই চলছিল সেখানে পাকফৌজের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে।
ময়মনসিংহ এখনও মুক্তিফৌজের দখলে। এখানে পাকফৌজের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে। রংপুরে নতুন পাকফৌজ যাচ্ছে।
চট্টগ্রামের উপর নৌ-বাহিনীর ক্রমাগত গােলাবর্ষণের ফলে শহরের অবস্থা খুবই অস্বাভাবিক।
শুক্রবার সারারাত ধরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবং আখাউড়া উপর মেশিনগান ও গুলি এবং মাঝে মাঝে মর্টারের আওয়াজ শােনা গেছে। মর্টারে আওয়াজ সীমান্তের এপারে আগরতলা সদর দপ্তর ত্রিপুরার ঘরবাড়ি আসবাবপত্র কাঁপিয়ে দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাছে চট্টগ্রাম শ্রীহট্ট রাজপথের ধারে আরও অনেকগুলি গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: কালান্তর, ১৮.৪.১৯৭১