You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.23 | গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন কসবার যুদ্ধে মুক্তিফৌজের জয়লাভ | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন কসবার যুদ্ধে মুক্তিফৌজের জয়লাভ
ময়মনসিংহ ও শ্রীহট্ট শহর পাক সৈন্যের দখলে

আগরতলা, ২২ এপ্রিল (ইউএনআই) আজ আখাউড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাব সেক্টারের গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন কসবা দখলের লড়াইয়ে বাঙলাদেশের মুক্তিবাহিনী একটি গুরুত্বপূর্ণ জয়ের অধিকারী হলেও পশ্চিম পাকিস্তান বাহিনী ট্যাক্স ইউনিটের সাহায্যে ময়মনসিংহ ও শ্রীহট্ট শহর দখল করে নিয়েছে বলে সীমান্তের ওপারে সংবাদে জানা গেল।
শেষ রাত্রি ২টার পরই মুক্তিফৌজ ৩ ইঞ্জি মর্টার নিয়ে কসবা, আখাউড়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ শুরু করে। প্রায় ৬ ঘণ্টাব্যাপী তুমুল লড়াই চলে। পাকসৈন্যরা মর্টার ও হালকা ফিল্ড কামান নিয়ে প্রতি আক্রমণ চালায়। উভয় পক্ষের হতাহতের সংবাদ পুরােপুরি না জানা গেলেও মুক্তিফৌজ বাহিনী জানাচ্ছে যে তাদের “সীমাবদ্ধ উদ্দেশ্য সাধিত হয়েছে। তবে সীমাবদ্ধ উদ্দেশ্য কি তা জানান হয় নাই।
গত ২৭ দিন ধরে যে যুদ্ধ বাঙলাদেশে চলছে, তার মধ্যে এই প্রথম ময়মনসিংহ পাকবাহিনীর অধিকারে এলাে। ঢাকা থেকে নুতন সৈন্য আনিয়া সন্নিকটবর্তী মাধ্যেপুরে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ময়মনসিংহের উপর আক্রমণ চালান হয়।
মুক্তিফৌজ প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়ে শ্রীহট্টের দিকে সরে গেছে।
গতকাল চট্টগ্রাম শহরের সন্নিকটবর্তী ঐ নামেরই একটি গ্রামে গতকাল পাকবাহিনী আক্রমণ শুরু করে। মুক্তিফৌজের এক বাহিনী সেই গ্রামে ছুটে যায়।
এবং সমগ্র আক্রমণকারী পাকবাহিনীকে শেষ করে ফেলে। চট্টগ্রামের কাছে রামগড় নামক আরেকটি অঞ্চলেও পাক বাহিনীকে মুক্তিফৌজ বাধা দেয়।
কুড়িগ্রাম ও রংপুরে মুক্তিফৌজের প্রতিরােধ ব্যবস্থা ভাঙার জন্য ঢাকা থেকে ট্যাঙ্ক পাঠান হয়েছে। শ্রীহট্টে পাকছত্রীফৌজ
শ্রীহট্ট শহর দখলের জন্য অতিরিক্ত পাক ছত্রী সৈন্যদের বিমানযােগে সেখানে নামান হয়েছে। শ্রীহট্ট শহরের চারপাশের রাস্তাঘাট ধ্বংস করে দেওয়ার ফলেই বিমান যােগে এই ছত্রী বাহিনীকে পাঠাতে হয়েছে।
পাকিস্তানী বাহিনী আগর স্টেশনের বাঙলাদেশ অংশের ওপর গােলাবর্ষণ করে, তথাপি উক্ত স্টেশনটি মুক্তিফৌজের হাত থেকে নিতে পারেনি।
আজ খুব ভােরে সিঙ্গার বিলের কাছে মুক্তিফৌজ শ্রীহট্টগামী পাক সৈন্যদের একট কনভয়কে সাফল্যের সঙ্গে প্রতিহত করে।
উজালেশ্বর গ্রামের কাছে তিতাস নদীর একটি সামরিক ব্রীজও মুক্তিফৌজ ধ্বংস করে দিয়েছে। আসল ব্রিজটি ইতিপূর্বেই মুক্তিফৌজ ধ্বংস করে দিয়েছিল।
সীমান্তের ওপার থেকে পাওয়া সংবাদে জানা যায় যে, প্রচন্ড যুদ্ধের পর পাক বাহিনী কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা দখল করেছে। হরলাল নদীর দূরে প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়।

সূত্র: কালান্তর, ২৩.৪.১৯৭১