ভারতীয় এলাকায় পাকসেনাদের গােলাবর্ষণ অব্যাহত
কলকাতা, ৩ জুন (ইউএনআই) পাকিস্তানী সেনারা যথারীতি ভারতীয় এলাকার মধ্যে অসামরিক অঞ্চল সমূহে গােলাগুলি বর্ষণ যথারীতি চালিয়ে যাচ্ছে। ইউএনআই জানাচ্ছে, গতকাল কোচবিহার জেলার সীমান্ত বর্তী চারটি গ্রামে পাক সেনাদের গােলাবর্ষণে একজন গ্রামবাসী আহত হয়। গত চারদিন ধরেই পাক সেনারা এই গ্রামগুলিতে প্রচণ্ড গােলাগুলি চালাচ্ছে। ফলে এক বিরাটসংখ্যক মানুষ গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে।
আসামের গােয়ালপাড়া জেলার সােনাহাট ও তৎসন্নিহিত গ্রামগুলিতেও গতরাতে পাকসেনারা কামান থেকে গােলা চালায়। সরকারী সূত্রের রিপাের্টে জানা যায় যে, গতকাল সকাল ১১ টা থেকেই পাকসেনারা ঐ অঞ্চলে মারাত্মকভাবে একতরফা গুলি চালাতে শুরু করে এবং আজ সকাল পর্যন্ত চালায়। ফলে অধিবাসীরা ভয়ানক সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। মনে হয়, কিছু অসামরিক ব্যক্তিকে পাকসেনারা নিহত করতে পেরেছে। অবশ্য ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী গােলাবর্ষণের যােগ্য প্রত্নত্তরও দিয়েছে।
মেঘালয়ের মুক্তাপুর গ্রাম ও খাসিয়া পার্বত্য জেলা থেকে সন্ত্রস্ত অসামরিক ব্যক্তিদের নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও সংবাদে প্রকাশ। গত ৩১ মে ঐ অঞ্চলসমূহে পাক সেনারা গুলি চালায়।
মুক্তিযােদ্ধাদের হাতে বহু খানসেনা খতম
সীমান্তের অপর পার থেকে জলপাইগুড়িতে প্রাপ্ত সংবাদে বলা হয় যে, গত ২৪ ঘন্টায় বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনী উত্তর রণাঙ্গনে গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে।
কোচবিহারের অপর পারে বঙ্গম্যারির সীমান্ত চেকপোেস্ট থেকে তারা ইয়াহিয়া বাহিনীকে হঠিয়ে দিয়েছে। এখানের যুদ্ধে কমপক্ষে সাতজন খান-সেনা নিহত হয়।
বিলহাটি ও ডােমর-এর মধ্যে তিস্তার উপর এবং কাকিস ও তুষবন্দর-এর মধ্যে সানয়াজসন নদীর উপর মােট ৩টি সেতু মুক্তিসেনারা ধ্বংস করে দেয়। ফলে লালমনিরহাটের দিকে পলায়ন পর খান সেনাদের একটি দল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
দিনাজপুরের জগদ্দলে আগুয়ান পাক সেনাদলকে মুক্তিযােদ্ধারা বাধা দেয় এবং ঠাকুর গাঁও পাওয়ার হাউসটির ক্ষতিসাধন করে। এই আকস্মিক আক্রমণের ফলে বহু পাকসেনা নিহত হয়েছে।
রংপুর জেলার ডিমলা ও বয়রাতে ইয়াহিয়ার সাতজন গুপ্তচরকে মুক্তিযােদ্ধারা খতম করে। এরা মুসলিম লীগ ও জামাত-ই- ইসলামী দলের লােক বলেও প্রকাশ।
সূত্র: কালান্তর, ৪.৬.১৯৭১