বাঙলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজের তৎপরতা অব্যাহত
(স্টাফ রিপাের্টার)
কলকাতা, ২ জুন- আজ সারাদিন ধরে চারিদিক থেকে মুক্তিসেনারা দিনাজপুর আক্রমণ করে পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার ফৌজদের ব্যতিব্যস্ত করে রাখে। মুক্তিসেনারা ছােট ছােট দলে বিভক্ত হয়ে এই আক্রমণ চালায়।
ধীন বাঙলা বেতার থেকে প্রচারিত সংবাদে একথা জানানাে হয়েছে। সংবাদে বলা হয়েছে ঠাকুর গায়ের রুইয়া বেল স্টেশন আক্রমণ করে মুক্তিফৌজ বড় গজ রেল লাইন তুলে দিয়েছে এ ছাড়া মঙ্গলপুর বাজানাহ মধ্যেকার সেতুটিও উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে বেতার জানিয়েছে গত বুধবার রানীসঙ্কাইল এলাকা পাকিস্তানী সৈন্যদের এবং ক্যাম্পের উপর আক্রমণ চালিয়েছে মুক্তিফৌজ বেশ কয়েকজন পাক সৈন্যকে হতাহত করেছে। পাক শত্রুসৈন্যরা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য আরও বেশি সংখ্যক সৈন্য নিয়ে সংলগ্ন এলাকার লােকজনদের বাড়ি-ঘরদোর পুড়িয়ে দিতে শুরু করে। তারা ব্যাপক গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে ঢাকার বেশ কিছু সরকারী বাড়ির উপর মুক্তিযযাদ্ধারা গ্রেনেড ও বােমা নিয়ে আক্রমণ চালিয়েছিল।
চট্টগ্রাম রণাঙ্গনের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া খবর হয়েছে, চট্টগ্রাম শহরের সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প আক্রমণ করে ৫০ জনকে হতাহত করা হয়েছে। শ্রীপুরে ৩০ জন পাকসৈন্য নিহত হয়েছে।
শ্রীহট্টের তেলিয়াপাড়া অঞ্চলে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিফৌজের জোর লড়াই চলেছে।
মনিপুরে মুক্তিবাহিনী ৮৫ পাকসৈন্যকে নিহত করেছে। ফেনীতে শত্রু সৈন্যের দু’টি জীপ গাড়ি ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।
কুমিল্লার লড়াইয়ে পিছু হটে পাকসেনারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে পালিয়ে যায়। পরে শত্রুসৈন্য এসে সাধারণ লােকদের ওপর প্রচণ্ড হামলা করে এবং ১২ ঘণ্টা কাফু জারি করে।
বেতার আরও জানিয়েছে, স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান সহ বাঙলাদেশের সমস্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকে নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ ইয়াহিয়া সরকার দিয়েছে। কোন রকম লেনদেন না করার। নির্দেশ তারা দিয়েছে।
সূত্র: কালান্তর, ১৩.৬.১৯৭১