বাঙলাদেশে মুক্তিফৌজের আক্রমণ অব্যাহত
মুজিবনগর, ৩০ জুন (ইউএনআই) গত দু’দিনে বাঙলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজের গেরিলারা কম করে ২৭ জন পাক-হানাদারকে খতম করেছেন। কাশীপুর ও বেলত এলাকায় মূলতঃ যুদ্ধ কেন্দ্রীভূত ছিল। ঐ দুটি স্থানে ১২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলার পর পাক-হানাদাররদের কাছ থেকে মুক্তিফৌজ বহু মূল্যবান কাগজ পেয়েছেন।
দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনের কমাণ্ডিং অফিসার মেজর ওসমান সাংবাদিকদের ঐ সংবাদ দিয়েছেন।
কুষ্টিয়ায় গেরিলারা গ্রেনেড আক্রমণ চালিয়ে ২ জন পাকসেনাকে খতম করেছেন। মাইন বিস্ফোরণে সাংরা-পুরুলিয়া রােডে জনৈক পাক-ক্যাপটেনসহ ৪ জন নিহত হয়েছে। কাবলীপুরেও ৪ জন পাকসেনা খতম হয়েছে। রংপুর রণাঙ্গনের অমরখানা এলাকা থেকে পাকসেনারা গেরিলা আক্রমণে ভীত হয়ে পিছু হটে গেছে। ঠাকুরগাঁও এর পূর্ব এলাকায় পাকসেনাদের একটি সীমান্ত ঘাঁটি গেরিলা তৎপরতায় বিধ্বস্ত হয়েছে। মুক্তিসেনারা গত ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন যথাক্রমে জফলগঞ্জ সােনাপুর ও রাধানগর এলাকায় পাকসেনাদের উপর আক্রমণ চালায়। চট্টগ্রাম সেক্টরে মুক্তিফৌজের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারত সীমান্তে আবার পাকগােলা
জলপাইগুড়ি থেকে ইউএনআই জানাচ্ছে : পাকসেনারা ফরের পাড়ার নিকটস্থ একটি ভারতীয় গ্রামে গােলাবর্ষণ করেছে।
জেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন যে, বহু শস্য ও পাট এর ফলে নষ্ট হয়েছে। কর্তৃপক্ষ কয়েকটি বাজার সীমান্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।
শরণার্থী শিবিরে পাক-গােলা
পাকসেনা পশ্চিম দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী ঠাকুরবাড়ি এলাকার এক শরণার্থী শিবিরে গােলাবর্ষণ করেছে।
ঢাকাস্থ সামরিক আদালত গতকাল জনৈক প্রাক্তন কর্নেলকে ১৪ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে।
জেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন যে, বহু শস্য ও পাট এর ফলে নষ্ট হয়েছে। কর্তৃপক্ষ কয়েকটি বাজার সীমান্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।
আক্রমণকারীর আত্মরক্ষা !
পাকিস্তান সৈন্যবাহিনীর সীমান্তবর্তী ঘাঁটিগুলিকে মুক্তিফৌজের আকস্মিক আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য মাইন পাতা হয়েছে বলে এখানে খবর পাওয়া গেল।
যেখানে সেখানে এই ধরণের মাইন পাতার ফলে নিজেদের ফাঁদে ১৯ জন পাকিস্তানী সৈন্যের জীবনাস্ত ঘটেছে বলে শ্রীহট্ট অঞ্চল থেকে খবর পাওয়া গেছে।
সূত্র: কালান্তর, ১.৭.১৯৭১