You dont have javascript enabled! Please enable it!

চাঁদপুরে মুক্তিফৌজের গণআদালতে ৫১ জন দালালের প্রাণদণ্ড

আগরতলা, ৯ জুন (ইউএনআই)– কুমিল্লার চাঁদপুরের বাঙলাদেশ মুক্তিফৌজ গণ আদালত বসিয়েছে। আদালত এ পর্যন্ত ৫১ জনকে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করেছে। এদের মধ্যে ইয়াহিয়া সৈন্যদের দালাল ২০ জন, ২৫ জন ডাকাত এবং একজন পাকগুপ্তচর রয়েছে। বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের নিদের্শ না মানার অপরাধে ও ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড হয়।
লাখসাম ও চাঁদপুর বিধ্বস্ত রেলপথ পুর্ননির্মানে ইয়াহিয়া বাহিনীকে সহায়তা করার অপরাধে মুক্তিফৌজ ৭ জন রেলকর্মীকে একজন (একজন গার্ড ও একজন ইঞ্জিনিয়ার সহ) গ্রেপ্তার করে। চাঁদপুর স্টেশনের কাছে একটি চলন্ত ট্রেন থেকে এদের গ্রেপ্তার করা হয়। সংঘর্ষে গাড়িটির চালকসহ মােট আটজন নিহত হয়। পরে বন্দীদের গণআদালতে হাজির করলে সকলকেই প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়।
এছাড়া চাঁদপুরে শহরতলীতে আকস্মিক আক্রমণে মুক্তিযােদ্ধারা ৯ জন হানাদার পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যকে নিহত করেন। বহু আহত ও হয়। মেহেরপুর রেলস্টেশনের কাছে ঠাকুর বাজারেও মুক্তিফৌজ ১০ জন পাকসৈন্য মৃত্যু ঘটায় নিহতদের মধ্যে একজন সুবেদার মেজর আছে।
সর্বত্রই মুক্তিবাহিনী গেরিলা পদ্ধতি নেওয়ার পাক সৈন্যরাও চোরাগুপ্তা খুনের পদ্ধতি নিচ্ছে বলে মুজিবনগর থেকে প্রাপ্ত অপর এক সংবাদে বলা হয়। ঢাকায় মুক্তিযােদ্ধারা বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রেনেড আক্রমণ চালালে ইয়াহিয়া বাহিনী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে এবং সৈন্যঘাটিতে কামান বসিয়েছে।
রংপুর রণাঙ্গনের বুরুঙ্গমারি এলাকার গত চার জুলাই থেকে পরপর তিনদিন ধরে পাহারারত সৈন্যদল এবং ঘাঁটিতে মুক্তিবাহিনী আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রীহট্টের কানাইঘাট থানায় আক্রমণ চালিয়ে বাঙলাদেশের দেশপ্রেমিকরা কিছু অস্ত্র ও গােলাবরুদ হস্তগত করেন। জাকিয়াগঞ্জে একটি সেতু তারা ধ্বংস করেন। কোনাে বাধা দেওয়া ইয়াহিয়া জঙ্গীচক্রের পক্ষে সম্ভম হয় নি। ঐ এলাকার মুসলীম লীগ দপ্তরটি তছনছ করা হয়।
আখাউড়ার কাছে গত ৪ জুলাই পাকসেনাদের তাবেদার দুজন মুসলীম লীগ নেতাকে মুক্তিসেনারা খতম করেন। ঐদিন ঢাকা-ময়মনসিংহ রণাঙ্গণে কমলপুরের একটি স্থানে এক মুখােমুখি লড়াই চালিয়ে দেশপ্রেমিক বাহিনী ৯ জন পাকিস্তানী সৈন্যর প্রাণনাশ করতে সক্ষম হন।

সূত্র: কালান্তর, ১০.৭.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!