You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.05 | শ্রীহট্টে ৩০০ হানাদার খতম : স্বাধীন বাঙলা বেতারের দাবি | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

উত্তর-পূর্ব সীমান্তের ঘটিগুলি মুক্তিফৌজের দখলে
শ্রীহট্টে ৩০০ হানাদার খতম : স্বাধীন বাঙলা বেতারের দাবি

(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা, ৪ জুলাই– বাঙলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায়, বিশেষতঃ উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে, মুক্তিফৌজ গেরিলা আক্রমণ উত্তরােত্তর বৃদ্ধি করেছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্তের সীমান্ত ঘাঁটিগুলি এর ফলে বর্তমানে মুক্তিফৌজের করায়ত্ত হয়েছে। ‘স্বাধীন বাঙলা বেতার কেন্দ্র’ এই তথ্য প্রকাশ করে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে মুক্তিফৌজ ৭০ জন পাকসেনা এবং বহু মুসলিম লীগ ও জামাত-এ-ইসলামীর দালালকে হত্যা করেছে। তাছাড়া দখলদারদের বহু অস্ত্রও মুক্তিসেনাদের হাতে এসেছে।
শ্রীহট্ট ও ময়মনসিংহ গেরিলা তৎপরতা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি শ্রীহট্টে মুক্তিসেনারা ৩০০ জন পাকসৈন্যকে হত্যা করেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় ৪০০ জন পাকসৈন্যকে শ্রীহট্ট হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
ময়মনসিংহের টাঙ্গাইলে চারটি থানা এখন মুক্তি ফৌজের আয়ত্তাধীন। নেত্রকোণায় দু’জন মুসলীম লীগ দালালের গৃহ ধবংস করা হয়েছে।
রংপুরের হাতিবান্দায় এক অতর্কিত আক্রমণ হলে মুক্তিফৌজ পাকসৈন্যদের হঠিয়ে দিয়েছে।
সংবাদদাতার এক নিবন্ধে জানা গেছে, পাক দখলীকৃত ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশাের ও কুমিল্লা ক্যান্টনম্যান্টের মধ্যে বন্দী শিবিরে বহু সংখ্যক বাঙালীকে আটক করে রাখা হয়েছে।
ঐ বন্দী শিবিরগুলিতে খুব কম জায়গায় বন্দীদের রাখা হয়েছে, তাঁদের বস্ত্রাদি দেওয়া হয় না, প্রত্যেককে চাল ও জল দেওয়া হলেও যে কোন সময় বিনা অজুহাতে যে কোন বন্দীকে বাইরে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়।
প্রকাশ, চট্টগ্রামে প্রতি রাত্রে শ’খানেক বন্দীকে হত্যা করা হয়ে থাকে। প্রতি রাত্রে ঢাকায় নিহতদের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ সংখ্যা যথাক্রমে ২০ ও ২০০ জন।
বিবিসি-র প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঢাকার অবস্থা মােটেই স্বাভাবিক নয়, সেখানে সামরিক চক্রের সৈন্যদের নিপীড়ন অব্যাহত আছে।
প্রকাশ, বিদেশে যে সকল বাঙলাদেশের ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত তাদের জঙ্গীশাহী বিরােধী মনােভাবের অভিব্যক্তির দরুন তাদের বাঙলাদেশস্থিত পরিবারবর্গের উপর হামলা শুরু হয়েছে।
বাঙলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রত্যয়
বাঙলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খােন্দকার মােস্তাক আমেদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বাঙলাদেশ রাষ্ট্র বিশ্বে চিরকালের জন্য বেঁচে থাকবে। সামরিক পাকচক্রের পরাজয় অবধারিত।
পাকিস্তানের অধীনে বাংলাদেশ সমস্যার কোনরূপ রাজনৈতিক সমাধান অসম্ভব বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অবিলম্বে মুক্তিদানের দাবিও উত্থাপন করেছেন।

সূত্র: কালান্তর, ৫.৭.১৯৭১