বাঙলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গেরিলা আক্রমণ বেড়েছে
আগরতলা, ১৭ সেপ্টেম্বর (ইউএনআই) এখানে প্রাপ্ত সংবাদে জানা যায় যে গত কয়েক দিনের মধ্যে মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা বাঙলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাকঘাঁটির ওপর আক্রমণ করেছে।
গত ১১ই সেপ্টেম্বর রংপুরের ডিমলা অঞ্চলে একটি পাকসৈন্যবাহী লরী ধ্বংস করে দেওয়ায় ফল ১২ জন পাকসেনা নিহত হয়েছে।
পরদিন দিনাজপুর এলাকায় তারা একটি টহলদার বাহিনীকেও ঘায়েল করে।
আলিনগর অঞ্চলে কয়েকজন পাক দালালের বাড়ি আক্রান্ত হয়। সেই বাড়ি থেকে বহু ম্যাপ ও অস্ত্রশস্ত্র দখল করা হয়েছে।
শ্রীহট্টের কাছে একদল পাক সামরিক অফিসার ও দুইজন সৈন্য খতম করা হয়েছে। বরলেখার কাছে এক আক্রমণের ফলে দুইজন পাকসৈন্য নিহত হয়েছে। গরাইন অঞ্চলে গত ১২ সেপ্টেম্বর একটি রাজাকার শিবিরে হানা দিয়ে মুক্তিবাহিনী বহু রাজাকারকে খতম করেছে ও ৪ জনকে ধরে নিয়ে এসেছে।
চট্টগ্রামে গেরিলাদের আক্রমণে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটালে বহু কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা-ময়মনসিংহ অঞ্চলে গত ১০ই সেপ্টেম্বর কমলপুরের কাছে ১২ জন পাকসৈন্যকে খতম করা হয়েছে।
ঢাকা ও ময়মনসিংহ-এর মধ্যে একটি যাত্রীবাহী গাড়ি গেরিলারা ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। চট্টগ্রাম ও খুলনার বন্দরে এখনাে জাহাজের ভীড় কমানাে যায় নি। পাকবাহিনীতে যানবাহন ও জলযানের অভাব থাকার ফলে তারা বিশেষ কিছু করতে পারছে না।
দিনাজপুরে ঠাকুরগাঁ সেক্টরে লড়াই
জলপাইগুড়ি থেকে প্রাপ্ত সংবাদে জানা গেছে, এই জেলার চালহাটি সীমান্তের কাছে বাঙলাদেশের দিনাজপুরে পচাগড়, দেবীগঞ্জ এবং ঠাকুরগাঁ সেক্টরে পাকসেনা ও মুক্তিফৌজের মধ্যে প্রচন্ড লড়াই চলছে। আজ সীমান্তের অপর পাড় থেকে মর্টার ও গােলাগুলির আওয়াজ শােনা যাচ্ছিল।
সীমান্তের ওপার থেকে প্রাপ্ত এক সংবাদে জানা যায় যে টোকাপাড়া, ডানাকাটা এবং ঠাকুরগাঁ এলাকায় গত কয়েক দিনে মুক্তিফৌজ পাকসেনা ও দালালসহ ২০ জনকে হত্যা করেছে।
ঠাকুরগাঁ-এ পাক অধিকৃত ৩২ কি: মি:এলাকা মুক্তিফৌজ নিজেদের দখলে নিয়ে আসে।
ইতিমধ্যে মুক্তিফৌজের হাতে ১৫ জন রাজাকার গ্রেপ্তার হয় এবং তাদেরকে তেতুলিয়াতে বিচারের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। তেতুলিয়া বর্তমানে মুক্তিফৌজ নিয়ন্ত্রিত এলাকা।
সূত্র: কালান্তর, ১৮.৯.১৯৭১