You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.14 | পূর্ববঙ্গের পার্বত্য অঞ্চল জুড়ে গেরিলা বাহিনীর তৎপরতা ‘টাইমস’ সংবাদদাতা হনসবীর রিপাের্ট | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

পূর্ববঙ্গের পার্বত্য অঞ্চল জুড়ে গেরিলা বাহিনীর তৎপরতা ‘টাইমস’ সংবাদদাতা হনসবীর রিপাের্ট
(বিশেষ প্রতিনিধি)

নয়াদিল্লী, ১৩ জুলাই পূর্ববঙ্গে মুক্তিফৌজের গেরিলাবাহিনী পার্বত্য সীমান্ত অঞ্চলকে কেন্দ্র করে তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। পাক সেনাবাহিনী গেরিলাদের আক্রমণে কোন অঞ্চলেই নিরাপত্তা বােধ করছে না।
টাইমস পত্রিকার সংবাদাতা মাইকেল হর্নসবী ঢাকা থেকে ঐ মর্মে সংবাদ পাঠিয়েছেন। সংবাদ ১০ জুলাই এর টাইমসে প্রকাশিত হয়েছে।
সংবাদে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা এবং কুমিল্লা থেকে ঢাকা রেলপথ গত দু’মাসেরও বেশি দিন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে। কুমিল্লার দক্ষিণে ফেনীর ওপরকার সেতুটিকে ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তা এখনও পর্যন্ত মেরামত হয় নি। এইসব ঘটনা যেখানে ঘটছে সেখানকার কাছাকাছি গ্রামগুলির সাধারণ মানুষের উপর সেনাদল অত্যাচার করে চলেছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির উপর আক্রমণের ফলে কুমিল্লা শহর বেশ কিছুদিন নিপ্রদীপ থাকে। কুমিল্লাব্রাহ্মনবাড়িয়া রাস্তার উপর কোন গাড়ি এখন আর সাহস করে যেতে পারে না। কেননা অনেক সময় গাড়িগুলির উপর গেরিলারা অতর্কিত আক্রমণ চালায়। কুমিল্লার অধিবাসীরা জানায় যে অধিকাংশ দিন রাতে গুলির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়।
শ্রীহট্ট সেক্টরে সড়ক ও রেলওলে সেতুগুলিকে লক্ষ্য করে গেরিলারা আক্রমণ চালাচ্ছে। জেলার উপর ও দক্ষিণাঞ্চলের চা-বাগিচাগুলির উপর মাঝে মাঝে আক্রমণ চলে। বাগিচা মালিকরা বাগিচা ছেড়ে দূরের গ্রামে চলে যেতে শুরু করেছে।
অন্যান্য শহরের মত ঢাকাতেও গেরিলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে সৈন্য দলের উপর অতর্কিতে বােমা ছোঁড়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটছে।
সৈন্যদের সঙ্গে সহযােগিতাকারী শান্তি কমিটির সদস্যদের শুধু ভয় দেখানাে হচ্ছে তাই নয় সুযােগ মত তাদের হত্যাও করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ এই ধরণের বিশটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করেছে।

সূত্র: কালান্তর, ১৪.৭.১৯৭১