You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.10 | | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

বাঙলাদেশ মন্ত্রিসভার উপদেষ্টা কমিটি বাঙলাদেশের মুক্তিকামী সংগ্রামী জনতার সার্বিক ঐক্যের মূর্ত প্রতীক
(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা, ৯ সেপ্টেম্বর মুক্তিসংগ্রাম পরিচালনা করার ব্যাপারে বাঙলাদেশ মন্ত্রিসভার পরামর্শদাতা কমিটির প্রথম বৈঠক শীঘ্রই অনুষ্টিত হবে। মুজিবনগর থেকে বাঙলাদেশ সরকারের সূত্রে এই খবর জানা যায়। বাঙলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাঙলাদেশের বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ যারা ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী শােষণের বিরুদ্ধে সক্রিয় সংগ্রাম করছেন, এই কমিটি গঠনের দ্বারা মুক্তিসংগ্রামে তাদের অংশীদারিত্বের মনােভাব সুনিশ্চিত করবে। পরামর্শদাতা কমিটিতে আটজন সদস্য রয়েছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বাঙলাদেশের যে মুক্তিকামী জনগণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল এবং যারা আওয়ামী লীগ ও একমাত্র বৈধ গণতান্ত্রিক সরকারের প্রতি আস্থাভাজন এই কমিটি সেই জনসাধারণের সামগ্রিক ঐক্যের অভিব্যক্তি।
এখানে উল্লেখ্য, কমিটি গঠনের সংবাদ কালান্তরেই একমাত্র গতকাল প্রকাশিত হয়েছে।
নতুন গঠিত এই কমিটিতে রয়েছেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাঙলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খােন্দকার মােস্তাক আহমেদ, বাঙলাদেশে কমিউনিস্ট পার্টির মণি সিং, ন্যাপের অধ্যাপক মােজাফফর আহমেদ, মােলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বাঙলাদেশ ন্যাশনাল কংগ্রেসের মনােরঞ্জন ধর। আওয়ামী লীগ থেকে আরও দুইজন সদস্য নেওয়া হবে। মুজিবনগরে বাঙলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে বিভিন্ন নেতারা গতকাল সকাল ও রাতে দুই দফায় দীর্ঘ বৈঠকে বসেন। বৈঠকে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে যােগদান করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন, খােন্দকার মােস্তাক, কাপ্টেন মনসুর আলি, কামরুজ্জামান, আবদুস সামাদ (সকলেই আওয়ামী লীগ), মৌলানা ভাসানী, বাঙলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মনি সিং, ন্যাপের অধ্যাপক মােজাফফর আমেদ, কংগ্রেসের মনােরঞ্জন ধর। বৈঠক থেকে সাতটি প্রস্তাব গৃহীত হয়।…
সাবাস জাফরগঞ্জ, (কুমিল্লা) সম্প্রতি পাকসেনারা এখানকার গ্রামসমূহে হানা দেয়। জোর জবরদস্তি করে ডাবনারকেল খায়, মেয়েদের উপর অত্যাচার করে, জিনিসপত্র লুঠ করে।।
পাকসেনাদের একটি দল এমনিভাবে এক গ্রামে যায়, মেয়েরা পাড়ার ছেলেদের দিয়ে ডাব পাড়ায়, প্রথমে তিনজন মহিলা ডাব নিয়ে পাকসেনাদের কাছে যায়, তাদের মধ্যে দু’জন শাড়ির মধ্যে দা লুকিয়ে রাখে, অপরজন তার দা দিয়ে ডাব কেটে পাকসেনাদের দেয়। পাকসেনারা যখন ডাব খাচ্ছিল তখন উক্ত মহিলা ও অপর দু’জন তাদের দা বের করে তিনজন পাকসেনাকেই খতম করে। মুজিবনগর থেকে প্রকাশিত ন্যাপের মুখপত্র “নতুন বাঙলা” থেকে উপরােক্ত সংবাদ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: কালান্তর, ১০.৯.১৯৭১