সেমসাইড!
জিনহটা, ৩১ আগসট (সংবাদদাতা খান সেনাদের মধ্যে মুক্তিবাহিনীর আতঙ্ক এত বেশি মাত্রায় ছাড়িয়েছে যে, কখনও কখনও তারা ভুলবশতঃ আত্মঘাতী হচ্ছে। বিলম্বে প্রাপ্ত এক সংবাদে জানা গেল, ২০ আগস্ট কুড়িগ্রামের পরের স্টেশন টোগরাই হাটের কাছে পাকবাহিনীর দুটি দল পরস্পরকে মুক্তিবাহিনী মনে করে আক্রমণ চালায়। এই গােলাগুলি বিনিময়ের কালে একদিকে ৪ জন ও অন্যদিকে ১ জন নিহত হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, কিছু দিন আগে সিঙ্গের ডাবরা স্টেশনের কাছে একটি রেল সেতু মুক্তিবাহিনী ধ্বংস করে। সেই থেকে কুড়িগ্রাম রেলপথের সমস্ত সেতুর কাছে পাক সৈন্যদের প্রহরা শুরু হয়। ২০ আগস্ট রাতের বেলা টোগরাই হাটের কাছে কোনাে এক বাড়িতে কাঁচা বাঁশ ফাটার পট পট শব্দ হয়। পাকিস্তান সৈন্যরা ভাবল, ঐ বুঝি মুক্তিবাহিনী এসে গেছে। একদল গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগােতে থাকে এবং ওয়ারলেসে শত্রু আগমনের বার্তা ঘােষণা করে। অপরদিক থেকেও টহলদার বাহিনীগুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে এগােতে থাকে। দু’পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়। কুড়িগ্রাম থেকে তখন কর্তৃপক্ষ হুশিয়ার করে দেয়। ইতােমধ্যে আত্মঘাতি সংঘর্ষে ৫ জন শেষ।
উল্লেখযােগ্য, ঐদিনই লালমনিরহাট থেকে কুড়িগ্রামবাসী বড় সড়কটির একটি সেতু (কংক্রেটের) মুক্তিবাহিনী উড়িয়ে দেয়। ঘটনাটি ঘটে কুড়িগ্রাম থেকে ৪/৫ মাইলের মধ্যে। বর্তমানে নাগেশ্বরী, ভুরঙ্গামারী, ফুলবাড়ি ও লালমনিরহাট থানার একটি বড় অংশ মুক্তিযােদ্ধাদের পুরােপুরি নিয়ন্ত্রণে। তারা মাঝে মাঝে ইয়াহিয়া চনুদের ওপর হানা দিচ্ছে এবং অত্যন্ত বেকায়দায় ফেলে দিচ্ছে। ফলে খানসেনাদের মনে যথেষ্ট আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র: কালান্তর, ১.৯.১৯৭১