You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.02 | পুর্ণ স্বাধীনতার জন্য বাঙলাদেশের বীর জনগণ শেষ রক্তবিন্দু বিসর্জন দেবে | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

পুর্ণ স্বাধীনতার জন্য বাঙলাদেশের বীর জনগণ শেষ রক্তবিন্দু বিসর্জন দেবে
– ন্যাপ সম্পাদক সৈয়দ আলতাফ হােসেন
(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা, ১ অক্টোবর পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত থেকে বাঙলাদেশ সমস্যার সমাধানের সাম্রাজ্যবাদী অপচেষ্টার বিরােধিতা এবং মাতৃভূমি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত স্বাধীনতা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সংকল্পে বাঙলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ অবিচল রয়েছেন। মুজিবনগর থেকে প্রচারিত বাঙলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ওয়ালি মুজফফর) সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলতাফ হােসেন ১ অক্টোবর এক বিবৃতিতে সেই সংকল্পই দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেছেন। সৈয়দ হােসেন তাঁর বিবৃতিতে বলেন, “আমি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি এবং তার অনুগত ভৃত্যরা ইয়াহিয়ার সামরিক জুন্টার গণহত্যা, অগ্নিসংযোেগ, লুঠতরাজ এবং বাঙলাদেশের জনসাধারণের সম্পত্তির বিনাশ সাধনের ফলে উদ্ভূত সমস্যা এবং অপরপক্ষে মুক্তিবাহিনী এবং বাঙলাদেশের জনগণের দ্বারা সাহসিকতার সঙ্গে এই অত্যাচারের মােকাবিলা করার ঘটনা থেকে সুকৌশল দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে পাকিস্তানের সাথে যুক্ত থেকেই বাংলাদেশ সমস্যার সমাধানের জন্য গােপনে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে এবং সেইমতে বিবৃতি ইত্যাদি প্রচার করছে।
পাকিস্তানী সামরিক জুন্টার স্বৈরাচারী অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পাবার জন্য এবং মাতৃভূমির পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য বাঙলাদেশের জনগণের সংগ্রাম ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে। আমাদের মুক্তিবাহিনী, যুব সমাজ, শ্রমিক, কৃষক, বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় এক কথায় মুষ্টিমেয় কয়েকজন ‘কুইসালিং’ বাদ দিয়ে জনগণের সমস্ত অংশই বীরত্বের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করছেন এবং প্রত্যহই নূতন নূতন বিজয়ের গৌরব অর্জন করছেন। আওয়ামী লীগ, বাঙলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী লীগ, ন্যাপ (ভাসানী) বাঙলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি এবং বাংলাদেশ জাতীয় কংগ্রেস-এর প্রতিনিধিদের নিয়ে মন্ত্রিসভা উপদেষ্টা কমিটি গঠনের ফলে আমাদের বীর জনগণের ঐক্য আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
উপদেষ্টা কমিটিতে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত প্রস্তাবের প্রতিপূর্ণ সমর্থন জানিয়ে আমরা পুনর্বার ঘােষণা করতে চাই যে বাঙলাদেশের জনগণের কাছে বাংলাদেশ সমস্যার একমাত্র গ্রহণযােগ্য সমাধান হল মাতৃভূমির পূর্ণ স্বাধীনতা। আমাদের দেশের জনগণ তাদের বহু আকাক্ষিত লক্ষ্য বাঙলাদেশের পূর্ণ স্বাক্ষরতা অর্জন করার জন্য শেষ ব্যক্তির শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত বিসর্জন দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

সূত্র: কালান্তর, ২.১০.১৯৭১