You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাঙলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে ব্যাপক গেরিলা তৎপরতা চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর তেলবাহী গাড়ি বিধ্বস্ত
(স্টাফ রিপাের্টার)

মুজিবনগর, ৮ অক্টোবর বাঙলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুক্তিবাহিনীর এক ব্যাপক কমাণ্ডো তৎপরতা চলছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর থেকে প্রকাশিত যুদ্ধ বুলেটিনে এ সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।
ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম রণাঙ্গন
গত ১ অক্টোবর চট্টগ্রামে মুক্তিবাহিনীর গেরিলাদের এক ভয়াবহ আক্রমণে একটি তেলবাহী গ্রীক গাড়ি মারাত্মকভাবে বিধ্বস্ত হয়। কুমিল্লা জেলায় কয়েক দিনের মধে গেরিলাদের আক্রমণে পাকসেনাদের জনৈক মেজর ও অফিসারসহ ১৪১ জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা জেলার বিভিন্ন রাস্তার ও রেল সেতু, কালভার্ট ইত্যাদি ধ্বংস করে এবং জেলার প্রধান যােগাযােগ ব্যবস্থা অচল করে দেয়। ফলে পাকসেনাদের কাছে খাদ্য ও অন্যান্য জিনিস পত্র পাঠানাে বন্ধ হয়ে গেছে। এই অঞ্চলেই একদল রাজাকার প্রচুর অস্ত্র ও গােলাবারুদসহ মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করে।
আশুগঞ্জের কাছে মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা ৩ হাজার টনের একটি মালবাহী জাহাজ এবং একটি ট্রেনের ৩টি কামরা ধ্বংস করে দেয়। সমস্ত জেলাতেই গেরিলারা রেললাইন তুলে ফেলে এবং রেল যােগাযােগ ব্যবস্থা অচল করে দেয়।
কুষ্টিয়া-খুলনা-যশাের রণাঙ্গন
৫ অক্টোবর বেরিলবাড়ির কাছে মুক্তিবাহিনী একটি শত্রুঘাটির উপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালায় এবং ৩৫ জন পাকসেনা খতম করে। এই আক্রমণে ৪ জন পাকিস্তানী সৈন্য আহত হয়।
একই দলে মুক্তিবাহিনী একসাবালিয়াডাঙ্গার, মধ্যে টেলিফোন যােগাযােগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং নবকাট্রিতে শত্রুপক্ষের একটি জীপ ধ্বংস করে। গত ৩ অক্টোবর বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জের কাছে দখলদার পাকসেনা ও রাজাকারদের এক যুক্ত বাহিনীর উপর গেরিলারা অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে ৪ জন পাকসেনা খতম করে।
গত ৪ অক্টোবর বরিশালের উপর পশ্চিমে মুক্তিবাহিনী দুটো থানা আক্রমণ করে এবং বরিশাল থেকে প্রায় ১০ কি:মি: দূরে একটি সেতু উড়িয়ে দেয়।
রংপুর দিনাজপুর রাজশাহী রণাঙ্গন
এখানে গত ৪ অক্টোবর মুক্তিবাহিনী বৈঠামারির কাছে মাইন বিস্ফোরণ শত্রু পক্ষের একটি জীপ ধ্বংস করে।
বিলম্বে প্রাপ্ত এক সংবাদে জানা যায় যে, দিনাজপুর জেলার চিরির বন্দরে দখলদার পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে মুক্তিবাহিনীর দুদ্ধর্ষ যােদ্ধারা ৪ জন শত্রু সৈন্য হত্যা করে এবং মুক্তিবাহিনীর হাতে একটি রাইফেল হস্তগত হয়।
৫ অক্টোবর দিনাজপুর জেলা খানপুরে মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের সঙ্গে এক সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ও ৪ জন খানসেনাকে খতম করে। এই সংঘর্ষে আরও ৯ জন শত্রুসেনা আহত হয়।
রংপুর সেক্টরে গত ২ অক্টোবর চিলাহাটির ২৩ কি:মি: দক্ষিন পশ্চিমে মুক্তিবাহিনীর অতর্কিতে আক্রমণের ফলে বহু সংখ্যক পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়।

সূত্র: কালান্তর, ৯.১০.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!