যশাের, খুলনা, ফরিদপুর ও কুষ্টিয়ার ৮০ ভাগ অঞ্চল মুক্ত
শিলং, ২৪ নভেম্বর (ইউ এন আই)- বাঙলাদেশের সমস্ত খন্ডে মুক্তিবাহিনী দুবার গতিতে এগিয়ে চলেছে। গেরিলা আক্রমণে নাজেহাল পাক সেনারা সর্বত্রই পিছু হটে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে তীব্র লড়াইয়ের পর মুক্তিবাহিনীর বিজয়ী যােদ্ধারা পাক বাহিনীর ফেলে যাওয়া প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র দখল করে নিয়েছে। স্টাফ রিপাের্টার জানাচ্ছে যশাের, কুষ্টিয়া, ফরিদপুরের শতকরা আশি ভাগ অংশ এখন মুক্তিযােদ্ধাদের দখলে।
কিশােরগঞ্জ প্রায় মুক্ত
কিশােরগঞ্জ শহরটি ছাড়া ময়মনসিংহ জেলার কিশাের মহকুমা এখন মুক্তিবাহিনীর দখলে। মুক্তিবাহিনী সুত্রে প্রাপ্ত সংবাদ অনুযায়ী জানা যায় যে মুক্তিযােদ্ধারা ৭ টি পুলিশ স্টেশনে পূর্ণ কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে, এছাড়া তারা আরও ৫ টি পুলিশ ঘাঁটি ঘিরে রেখেছে। গত সপ্তাহে মুক্তিসেনারা বগুড়া থেকে ৬৪ কিলােমিটার দূরে তাজাস অঞ্চলে এক প্লেটুন পাক সৈন্যকে খতম করেছে। নিহতদের মধ্যে দুইজন অফিসার সহ ২৭ জন সৈন্য ও ৩০ জন রাজাকার আছে। এখানে মুক্তিবাহিনী একটি ভারী মেশিনগান, একটি ১৬ মিঃ মিঃ মর্টার, একটি রাইফেলসহ প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে। এগুলাে সবই চীনা অস্ত্র বলে সংবাদসূত্র জানিয়েছে। শ্রীহট্ট খন্ডে জাকিগঞ্জ অঞ্চলে মুক্তিফৌজ দুই কোম্পানি পাক সেনাকে হটিয়ে দিয়েছে, তারা একজন ক্যাপ্টেন ও একজন জি সি ও সহ ১০ জনকে আটক করেছে। এখানে একটি ফিল্ডগান দখল করা হয়েছে।
সারাদিন লড়াই ডিগ্রাউ মুক্ত
গতকাল সারাদিন সম্মুখ যুদ্ধের পর মুক্তিবাহিনী উত্তর শ্রীহট্টের জয়ন্তীয়াপুরে ডিগ্রাউ দখল করে নিয়েছে। এই তীব্র সংঘর্ষে অন্ততঃ পক্ষে ২৩ জন দখলদারী সেনানিহত ও বহু আহত হয়েছে বলে জানান হয়েছে। এই যুদ্ধে পাক বাহিনী- বড়ধরনের সমরাস্ত্র ব্যবহার করেছে। পাকসেনারা হটে যাবার পর তারা আরও তিনবার আক্রমণ চালায় কিন্তু মুক্তিবাহিনী তাদের অধিকার বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই তিনবারের পাল্টা আক্রমণে পাকবাহিনী ৩৫০টি গােলাবর্ষণ করেছে। গতরাতে সারা রাত ধরেই দু’পক্ষে গােলা বিনিময় চলে, ইতিমধ্যে শ্রীহট্ট থেকে একটা অ্যাম্বুলেন্স ও চারটি গাড়ি বােঝাই করে পাকসেনারা তাদের হতাহতদের নিয়ে যায়। এখন গ্লিাউ শত্রু কবল মুক্ত।
সূত্র: কালান্তর, ২৫.১১.১৯৭১