You dont have javascript enabled! Please enable it!

দিনাজপুরের পচাগড় শহর পাক-কবল মুক্ত
(স্টাফ রিপাের্টার),

কলকাতা, ২৬ নভেম্বর বাঙলাদেশের বীর মুক্তিবাহিনী গতরাতে দিনাজপুরের পচাগড় শহর থেকে দখলদার পাকফৌজকে হঠিয়ে ৮ কিলােমিটার দূরবর্তী ময়দান দীঘির দিকে এগিয়ে চলেছে। পাকিস্তানীরা পালাবার পথে অনেকগুলি বাড়ি জ্বালিয়ে গিয়েছে এবং করতােয়া নদীর উপরের একটি সেতুর আংশিক ক্ষতি করে গিয়েছে। পাকবাহিনী পিছু হঠে ঠাকুরগাঁও এ আশ্রয় নিয়েছে। মুজিবনগরে অবস্থিত বাঙলাদেশ ফৌজের সদর দপ্তর থেকে প্রচারিত বুলেটিনে আরও জানা যায় যে, গত ২৫ নভেম্বর শ্রী হট্টের গােয়াইনঘাট বাধানগর এলাকা থেকে মুক্তিবাহিনী পাক ফৌজকে হঠিয়ে দিয়েছে। এই সংঘর্ষে ১০ জন পাক সৈন্য নিহত হয়েছে ও মুক্তিবাহিনীর হাতে একটি লাইট মেসনগান একটি টেলিফোন সেট, একটি ব্যারেল ও প্রচুর গােলাবারুদ এসেছে। অফিসার সহ ১৩ জন পাক সৈন্য নিহত ও ১৫ জন আহত হয়। নােয়াখালী জেলায় দূর্গাপুরে ২২ নভেম্বর মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ৭ জন পাকিস্তানী নিহত ও ১০ জন আহত হয়। ইউ এন আই জানাচ্ছে: আজ সকালে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় বাঙলাদেশ মুক্তিপরিষদের সভাপতি শ্রীজহুর আমেদ কসবা থানায় বাঙলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। প্রবল হর্ষধ্বনি ও মােনাজাতের মধ্যে এই পতাকা উত্তোলন পর্ব সমাধা হয়। সম্প্রতি যে সব এলাকা মুক্ত হয়েছে, সেইসব এলাকায় পরিষদ কতগুলি প্রশাসনিক দপ্তর চালু করবে। যশাের শহরের উপকণ্ঠে তীব্র লড়াই চলছে। কুষ্টিয়ার মেহেরপুর শহর তারা ঘিরে ফেলেছে। গত ১৯ নভেম্বর কুমিল্লার ব্রাক্ষণবাড়িয়া মহকুমার মুকুন্দপুর মুক্তিবাহিনীর দখলে এসেছে। এখানে ৩১ জন শত্রুসৈন্য বন্দী, ২ টি স্টেনগান, ২টি এল এম জি এবং ৩ ইঞ্চি মর্টার মুক্তিবাহিনী হস্তগত হয়েছে। খুলনা জেলার সাতক্ষীরা মহকুমা সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর এসেছে। সাতক্ষীরাভেটকালী হাইওয়ে বরাবর এলারচর ও বিবরঘাঁটি থেকে পাকিস্তানীরা গােলাবর্ষণ করেছে। গত ২৩ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী খুলনার শ্রীরামপুরে পাক ঘাঁটি আক্রমণ করে ৬ জন শত্রুসৈন্য আর কয়েকজন রাজাকারকে খতম করে। কুমিল্লা জেলার লক্ষান্ধরে অনুরূপ অভিযানে ৭ জন শত্রুসৈন্য নিহত হয়। ঐ দিনই কৈয়মপুর এলাকায় ৬ জন শত্রুসৈন্য নিহত হয়।

সূত্র: কালান্তর, ২৭.১১.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!