You dont have javascript enabled! Please enable it!

আত্মরক্ষার্থে ভারতীয় বাহিনীর সীমান্ত অতিক্রম
যশাের রণাঙ্গনে ১৩ টি পাকিস্তান ট্যাংক ধ্বংস

নয়াদিল্লী, ২৪ নভেম্বর- আত্মরক্ষার প্রয়ােজনে ভারতীয় সৈন্যবাহিনী এই সর্বপ্রথম সীমান্ত অতিক্রম করল। রবিবার পশ্চিমবঙ্গ যশাের সীমান্তে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিরােধমূলক অভিযানের কারণ ব্যাখ্যা করে আজ এক সরকারী মুখপাত্র এই কথা ঘােষণা করেছেন বলে ইউ এন আই জানিয়েছেন। ভারতীয় সৈন্যবাহিনী এবার থেকে আত্মরক্ষার জন্য সীমানা অতিক্রম করবে বলে ইতিমধ্যেই সংসদে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ঘােষণা করেছেন। পাকিস্তানী বাহিনীর ট্যাংক আক্রমণের মােকাবিলা করার জন্য পূর্বেকার সীমান্ত অতিক্রম না করার নির্দেশ সংশােধিত করে এই নতুন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে উক্ত মুখপাত্র জানান। ভারতীয় বাহিনীর প্রতি আক্রমণে ১৩ টি পাকিস্তানী “শাফে” ট্যাংক ধ্বংস হয়। পাকিস্তান রক্ষা আইন প্রবর্তন করে ঢাকায় ও করাচিতে কারফিউ জারি করে রিজার্ভ ফোর্স তলব করে ও ক্রমাগত সীমান্তবর্তী ভারতীয় খাটির ওপর গােলাবর্ষণ করে পাক জঙ্গী সরকার যে বেপরােয়া প্রস্তুতি শুরু করেছে তারই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকারের নতুন নির্দেশ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
ভারত সরকরের মুখপাত্র বলেন; পরিস্থিতিকে বাড়িয়ে তােলা বা সংঘর্ষকে বাঁধানাে কোনােদিনই আমাদের উদ্দেশ্য নয়। এই দিখে লক্ষ্য রেখেই আমরা আমাদের সৈন্যঝহিনীকে সীমান্ত অতিক্রম না করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু যখন শত্রুপক্ষ ট্যাংক নিয়ে দ্রুতগতিতে আমাদের দিকে ধাবিত হচ্ছে তখন আমাদের ঐ নির্দেশ বদল করে নিতে হয়েছে। আমরা আমাদের সেনাদলকে বলতে পারি না, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখ কীভাবে পাকিস্তানী ট্যাংক তােমাদের ওপর গােলাবর্ষণ করে। সােমবার বয়ড়া সীমান্তে পাকিস্তানী বিমান বহর দুটি ভারতীয় ন্যাট বিমান ধবংস করেছে বলে যে দাবি করেছে তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় অস্বীকার করেন। “আমরা আদৌ কোনাে বিমান বা ট্যাংক হারায়নি।” তিনি জানান অগ্রাভিমুখী পাকিস্তানী ট্যাংক বহরকে ভারতীয় সৈন্যরা ট্যাংক দিয়েই প্রতিহত করেছে। তিনি জানান যে, পাকিস্তানের প্রায় এক স্কোয়াড্রন শক্তিসম্পন্ন ট্যাংক ধ্বংস হয়েছে। সেক্ষেত্রে ভারতীয় ট্যাংক খােয়া যায় নি তবে সামান্য কিছু ক্ষতি হয়েছে। কতটুকু ভারতীয় সৈন্যদল এগুবে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন কোনাে দুরত্ব মেপে আগে থেকেই বলে দেয়া যায় না। স্থানীয় কমান্ডাররা স্থির করবেন, আত্মরক্ষার্থে কতটা অগ্রসর হওয়া দরকার। মুখপাত্রটি পূনর্বার ঘােষণা করেন, বাঙলাদেশে কোনাে ভারতীয় সৈন্য নেই। বর্তমানে মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তানী সৈন্যদলের সঙ্গে লড়াই চলছে। তিনি আরাে জানান যে, বর্তমানে ভারতের পশ্চিম সীমান্তের চেয়ে পূর্ব সীমান্তের অবস্থা গুরুতর।

সূত্র: কালান্তর, ২৫.১১.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!