You dont have javascript enabled! Please enable it!

গুরুত্বপূর্ণ বন্দর চাঁদপুর মুক্ত
(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা ৯ ডিসেম্বর-বাঙলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর চাঁদপুর আজ ভারতীয় বাহিনী দখল করেছে। বাঙলাদেশের প্রতিটি রণাঙ্গনেই ভারতীয় বাহিনী এবং মুক্তিবাহিনী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ তীব্রতর করে তাদের গতি অব্যাহত রেখেছেন। কুমিল্লা সম্পূর্ণ মুক্ত করে ভারতীয় বাহিনী মেঘনা নদীর তীর পর্যন্ত পৌঁছেছেন। এখান থেকে ঢাকার দুরত্ব ৩০ কিঃমিঃ। অপরদিকে পাক বাহিনী উত্তর পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিমের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দ্রুত সরে এসে ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে সমবেত হওয়ার করছে। পূর্ব রণাঙ্গনের জি ও সি লেফটানেন্ট জেনারেল জগজিত সিং আরােরা সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন।
শ্রী আরােরা বলেন যে, ভারতীয় বাহিনী যশাের থেকে এখন খুলনা ও কুষ্টিয়া অভিমুখে অভিযান করছে। যশাের থেকে পাক বাহিনী পিছু হঠে গিয়ে এখন পদ্মা নদী পথে বরিশাল অভিমুখে যাচ্ছে। কিন্তু খুলনা অঞ্চলে নদী পথে যাতে কেউ সরে যেতে না পারে সে বিষয়ে বিমান বাহিনী তীক্ষ্ণ নজর রেখেছে। শ্রীআবােরা জানান, রণাঙ্গনে হালুয়াঘাট থেকে ভারতীয় বাহিনী ময়মনসিংহ অভিমুখে অভিযান শুরু করেছে এবং জামালপুরকে কার্যতঃ ঘিরে রেখেছে।
ঢাকার পথে
শ্রী আরােরা বলেন, কুমিল্লা দখলের পর তাদের অগ্রগতি অব্যাহত রেখে চাঁদপুর থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত সমস্ত অঞ্চল মুক্ত করা হয়েছে। পাক বাহিনী এখান থেকে পশ্চাদপসরণের সময় মেঘনার উপর ভৈরব ব্রীজটি ধ্বংস করেছে। ভারতীয় বাহিনী এখন মেঘনা নদী আক্রমণের প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা করেছে। মেঘনা নদী অতিক্রম করার পরও এই পথে ঢাকা যেতে হলে ভারতীয় বাহিনীকে আরাে ২টি নদী অতিক্রম করতে হবে। তিনি বলেন, শুধু ভৈরব ব্রীজ নয় বাঙলাদেশের বিভিন্ন নদীর উপর ব্রীজগুলি ধ্বংস করে দিয়ে পাকবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর অগ্রগতির পথে বাধা দিচ্ছে।
রংপুর রণাঙ্গন
ভারতীয় বাহিনী ঠাকুরগাঁও থেকে পীরগঞ্জ এবং ভােরেমারী, কালিগঞ্জও থেকে পলাশবাড়ি পর্যন্ত মুক্ত করেছেন। এর ফলে বাঙলাদেশের উত্তর-পশ্চিম রণাঙ্গনের বিরাট অংশ মুক্ত হয়েছে। পীরগঞ্জ অঞ্চলে ৩২ নং বেলুচ রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসারের মৃতদেহের সঙ্গে আরাে পাঁচজন পাকসেনার মৃতদেহ ভারতীয় বাহিনী উদ্ধার করেছে।

সূত্র: কালান্তর, ১০.১২.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!