দিনাজপুরের বােদা এবং রংপুরের নাগেশ্বরী থানার বিস্তীর্ণ অঞ্চলমুক্ত
মুজিবনগর, ২ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর প্রবল আক্রমণের মুখে পাকফৌজ আজ দিনাজপুর জেলার বােদা থেকে পালিয়ে যায়। বােদা থেকে মুক্তিবাহিনী দৃঢ় পদক্ষেপে ঠাকুরগাঁওয়ের দিকে এগিয়ে চলেছে। মুক্তিবাহিনীর মুক্তি বুলেটিনে বলা হয়েছে বােদা ছাড়াও রংপুর জেলার নাগেশ্বরী থানার বিস্তীর্ণ অঞ্চল মুক্তিফৌজের দখলে এসেছে। ইউ এন আই মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ বুলেটিন উদ্ধৃতি করে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলার কামালপুরে শত্রু ঘাটি বিধ্বস্ত করা হয়েছে। গতকাল শ্রীহট্ট জেলার মুক্ত শামসেরনগরে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করে তােলা হয়েছে। মুক্তিযােদ্ধারা এখন রংপুর জেলার ভারলা নদীর সমগ্র উত্তর অঞ্চলে তাদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করছে। মুক্তি বাহিনীর যে দলটি কুষ্টিয়া জেলার জীবননগর ভঁরা শহরের উত্তর পূর্বে অন্দুবেড়িয়া গ্রামটি আজ দখল করেছে। জানা গেছে মুক্তিবাহিনীর প্রচন্ড চাপের ফলে পাকফৌজের নবম ডিভিশনাল হেড কোয়ার্টার যশাের থেকে মাগুরায় স্থানান্তর করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলায় মুক্তিবাহিনীর গেরিলা উত্তরে ফটিকছাড় এবং রাওজান থানার এবং দক্ষিণে আনওয়ার থানার বেশির ভাগ অঞ্চল দখল করে নিয়েছে। পটিয়া থানা ও হাতিয়া দ্বীপের বেশির ভাগ অঞ্চল মুক্তিবাহিনীর দখলে।
সীতাকুন্ড এবং মীরের সরাই অঞ্চলে তীব্র লড়াই চলছে। রাঙ্গামাটি এলাকাতেও মুক্তিবাহিনী তার অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা যশাের শহরের পাক-ফৌজের অবস্থানের এপর গােলাবর্ষণ করছে। পটুয়াখালির উপকূলবর্তী অঞ্চলেও মুক্তিবাহিনী খুব সক্রিয়। বরিশালের দক্ষিণপূর্বে রাজাপুর এবং কাউখালি পুলিশ থানা গেরিলারা মুক্ত করেছে। রংপুর খন্ডেও মুক্তি যােদ্ধারা উত্তরদিকে পাক-ফৌজকে ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু হতাহতের পর পাকফৌজ সৃতি… এবং হাথিবান্দার থেকে পাক-ফৌজ সরে যাচ্ছে।
সূত্র: কালান্তর, ৩.১২.১৯৭১