You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.05 | বাঙলাদেশের সংগ্রামী সেনারা এগিয়ে চলেছে | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

বাঙলাদেশের সংগ্রামী সেনারা এগিয়ে চলেছে
(স্টাফ রিপাের্টার)

বাঙলাদেশের ভেতর থেকে এখন চারপাশে শুধু গােলাগুলির আওয়াজ, এগিয়ে চলেছে মুক্তিযােদ্ধারা, ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, আওয়ামী লীগ প্রভৃতি সংগ্রামী দলের বীর সৈন্যরা মরণপণ লড়াই শুরু করেছেন বাঙলাদেশের ভেতরে। সহযােগী বন্ধু হয়েছেন ভারতীয় সৈনিকরা, যুদ্ধরত মুক্তিবাহিনীর মধ্যেই যুবকের সংখ্যাই বেশি। কিশােরের সংখ্যাও কম নয়। এক একটি গ্রামের উপর দিয়ে যখন বীর যােদ্ধারা যাচ্ছেন তখন গ্রামবাসীরা তাদের পরিপূর্ণ সহায়তা করেছেন। যুদ্ধ করার মাঝে মাঝে খবর নিচ্ছেন অন্য সেক্টরের। এখন সম্মিলিত শক্তির শুধু একটাই কথা চরৈবাত, চরৈবাত, জয় অনিবার্য।
পূর্ব রণাঙ্গনে
ত্রিপুরার আগরতলা বিমান বন্দরের কাছে নরসিংগড়ে পাকিস্তানীরা আজ সকালে গােলাবর্ষণ করে। কিন্তু তাতে কোনও ক্ষয় ক্ষতি হয় নি বলে জনৈক সরকারী মুখপাত্র জানান। সকালে দু’বার পাকিস্তানী বিমানকে আগরতলার দিকে আসতে দেখা যায়, কিন্তু বিমান বিধ্বংসী কামানের গােলার বেড়াজাল অতিক্রম করে তারা এগুতে পারে নি। আজ ভারতীয় বিমানবাহিনী বাঙলাদেশের মধ্যে ১১ টি সামরিক লক্ষ্যবস্তুর উপরে সফল আক্রমণ চালায়। পাকিস্তানী সামরিক জুন্টার আক্রমণের সমুচিত জবাব দেবার জন্য ভারতীয় সামরিক বাহিনীর তিনটি শাখা স্থলবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী এই সব প্রথম একটি মাত্র সামরিক অধিনায়কত্বে একযােগে অভিযান শুরু করেছে। পূর্ব রণাঙ্গনে এই তিন বাহিনীই একযােগে অভিযান চালিয়ে বাঙলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাকিস্তানী বাহিনীকে হঠিয়ে দিয়েছে। ভারতের নৌবাহিনীর বিমান, চট্টগ্রাম বন্দর ও কক্সবাজারের সামরিক লক্ষ্যবস্তুর উপরে সফল আক্রমণ চালিয়েছে। চট্টগ্রামের তৈলাগার বিধ্বস্ত হয়েছে, বন্দর জ্বলছে। দুটি পাকিস্তানী গানবােট বিধ্বস্ত হয়ে জ্বলে ডুবে গিয়েছে ও একাধিক হ্যাঙ্গার ধ্বংস হয়েছে। বাঙলাদেশের সমস্ত বন্দর এখন কার্যত অবরুদ্ধ।

সূত্র: কালান্তর, ৫.১২.১৯৭১