যশাের-খুলনা রণাঙ্গন
ভারতীয় বাহিনী গতকাল যশােরে বহু সহস্র টন অস্ত্র ও গােলা বারুদ পাকবাহিনীর কাছ থেকে উদ্ধার করেছে। পাক বাহিনী তাড়াতাড়ি করে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে এগুলি যশােরের ঝিনাইদহে ফেলে গিয়েছিল। যশােরের রূপাদিয়া অঞ্চলে ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে গতকাল রাতে পাক বাহিনীর ২৭ নং বেলুচ রেজিমেন্টের একজন মেজর ও ৪০ জন সৈনিক নিহত হয়েছে। সাতক্ষীরা আশুগঞ্জেও গতকাল তিনশত রাজাকার ভারতীয় সৈনিকদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ লেঃ জেনারেল আরােরা সাংবাদিকদের কাছে এই তথ্য জানান।
বিমান বাহিনী ও নৌ বাহিনী কার্যক্রম
শ্রী আরােরা বাঙলাদেশ ভারতীয় বিমান বাহিনী এখন আর পাক বিমান বাহিনীর আক্রমণের সম্মুখীন হচ্ছে না। তিনি বলেন, ভারতীয় বিমান বাহিনী ভারতীয় জওয়ানদের অগ্রগতিতে সহায়তা করছেন। পদ্ম ও মেঘনা নদী পথের উপর ভারতীয় বিমান বাহিনী এখন নজর রাখছে। শ্রী আরােরা আরও জানান যে, ভারতীয় নৌ-বাহিনী গত ৪৮ ঘন্টায় চালনা, খুলনা এবং কক্সবাজারে নৌ-আক্রমণে চমৎকার সাফল্য অর্জন করেছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে শ্রী আরােরা বলেন, মুক্তিবাহিনীও এই যুদ্ধে চরম সাফল্য অর্জন করেছে এবং ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী পরস্পর ঘনিষ্ট যােগাযােগ রেখে পাক বাহিনীর উপর আক্রমণ পরিচালনা করছে। তিনি বলেন বাঙলাদেশের গেরিলা যােদ্ধারা শত্রুদের নিয়মিত খবরাখবর সংগ্রহ করে এবং পাক বাহিনীর উপর নানাবিধ আক্রমণাত্মক অভিযানের মাধ্যমে ভারতীয় বাহিনীর এই সাফল্য অর্জনে সহায়তা করেছে।
কুমিল্লা ও যশাের সংবর্ধনা
শ্রী আরােরা গতকাল কুমিল্লায় ও আজ যশােরের মুক্তাঞ্চল তিনি পরিক্রমণ করেন। বাঙলাদেশের জনসাধারণ ভারতীয় বাহিনীকে আন্তরিক সংবর্ধনা জানাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
সূত্র: কালান্তর, ১০.১২.১৯৭১