কুষ্টিয়া শহরে মুক্তি সংগ্রামের আলেখ্য
(সীমান্ত সূফররত স্টাফ রিপােটার)”
কুষ্টিয়া, ৭ এপ্রিল কুষ্টিয়া শহরের মুক্তি সংগ্রামের কাহিনী জনগণ এবং আধা-সামরিক ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্ ও পুলিশের মধ্যে সংযােগ স্থাপন করে অসাধারণ সাংগঠনিক কর্মদক্ষতার আলেখ্য।
শেখ মুজিবরের সঙ্গে ইয়াহিয়ার, আলােচনার সময় থেকেই কুষ্টিয়ার তরুণরা অস্ত্র চালনায় ট্রেনিং নিচ্ছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন পূর্বপাকিস্তান ছাত্র-ইউনিয়নের শখানেক সক্রিয় কর্মী। আর এদের কাছে ছিল ৩৫টি রাইফেল ও হাজারখানেকগুলি।
২৫ মার্চ রাত্রি থেকে সারাদেশে শুরু হল সামরিক নিপীড়ন। সর্বত্র জারী হল ৩০ ঘণ্টাব্যাপী সান্ধ্য, আইন জনৈক তরুণ প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষায়- “ভাের চারটে নাগাদ যাচ্ছিলাম থানাপাড়ার: আমবাগানের দিকে ওখানে ঐ সময়ে ট্রেনিং হত আমাদের। হাইড় রােডে হঠাৎ মিলিটারি পথরােধ করল। উর্দুতে প্রশ্ন করল—কে?কি নাম? কোথায় যাবে? একজন বাঙালী অফিসার এগিয়ে এসে বাঙলায় তর্জমা করে দিলেন কথা গুলাে। জানালাম মা’র অসুখ থানাপাড়ায় যাচ্ছি মার সঙ্গে দেখা করার জন্য যেহেতু সারারাত মার’ জন্য চিন্তায় উদ্বেগে ঘুম আসছিলনা। ওরা য়েতে দিল না। সকালবেল্প রেল লাইন ধরে থানা পাড়ার দিকে এগুলাম। মিউনিসিপ্যালিটি বাজারের কাছে আমার সামনেই কে-এক তরুণকেওর গুলি করে হত্যা করল। ঘটনাটা দেখা মাত্র আমি এগিয়ে গেলামু কে পড়ে গেছে ভাল করে বােঝার জন্য। ইটের টুকরাের সঙ্গে আমার রবারের চটির সংঘাতে হঠাৎ হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেলাম!
আর তখুনি দেখলাম মিলিটারী বন্দুক উচিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। কোনমতে প্রাণভয়ে উঠে চোঁ চোঁ দৌড়ালাম থানাপাড়ার দিকে।”
সেদিন অর্থাৎ শুক্রবার, ২৬ মার্চ সকালে কুষ্টিয়ার সংগ্রামে পরিষদ সারা শহরে ব্যারিকেড তৈরির সিদ্ধান্ত নিল। সেই অনুযায়ী দিকে দিকে গড়ে উঠল ব্যারিকেড শুরু হল ইয়াহিয়ার সৈন্যদের সঙ্গে…
সূত্র: কালান্তর, ৮.৪.১৯৭১