You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.10 | বাইরে যেতে অস্বীকার করলে শরণার্থীরা রিলিফ পাবেন না | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

বাইরে যেতে অস্বীকার করলে শরণার্থীরা রিলিফ পাবেন না
(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা, ৯ জুন কেন্দ্রীয় সরকার আজ পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে জানিয়েছেন যে, ওড়িশা, বিহার, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও অন্ধরাজ্যে মােট তিন লক্ষ শরণার্থীকে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কিন্তু, ইতিমধ্যে কিছু শরণার্থী পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যাবার ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে বিরােধিতা করছেন। এই অবস্থার আজ পশ্চিমবঙ্গ মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত করেছে যে, যে সমস্ত শরণার্থী বাইরে যেতে অস্বীকার করবেন এবং বাইরে পাঠাবার জন্য ট্রেন ছেড়ে চলে যাবেন, তাদের কোনও রিলিফ দেওয়া হবে না।
আজ রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের এই কথা জানিয়ে বলেন যে, পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে কতকগুলি কেন্দ্রীয় শিবিরের স্থান নির্ণয়ের জন্য তিনি, পূর্তমন্ত্রী শ্রীসন্তোষ রায়, মুখ্যসচিব শ্রী জে, সি, সেনগুপ্ত এবং ব্রিগেডিয়ার চাচ্চা নদীয়া, জেলার কৃষ্ণনগর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ সফল করবেন। প্রয়ােজন হলে তারা জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায়ও যাবেন। প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় শিবিরগুলিতে ৫ লক্ষ শরণার্থীকে আশ্রয় দেবার ব্যবস্থা করা হবে।
বেসরকারী হিসাব অনুযায়ী ৪২ লক্ষাধিক শরণার্থীর মধ্যে ২৮ লক্ষ শরণার্থী এখনাে পর্যন্ত কোনও আশ্রয় পান নি। এবং কেন্দ্র যদি একমাসে ৩ লক্ষ শরণার্থী অপসারণ করে, সেই সময়ের মধ্যে এই রাজ্যে মােট শরণার্থী সংখ্যা দাঁড়াবে ৬০ লক্ষ। অর্থাৎ শতকরা ১০ জনকে মাত্র রাজ্যের বাইরে নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, শরণার্থীদের বাইরে পাঠানাের ব্যাপারে নতুন অসুবিধা দেখা দিচ্ছে।
গতকাল ট্রেনে ১০০০ এ বেশি শরণার্থীকে মানা ক্যাম্প অভিমুখে পাঠানাে হয়েছিল। কিন্তু আজ রেল কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারকে জানিয়েছেন যে, এই এক হাজারের মধ্যে ৮০০০ শরণার্থীই ট্রেন থেে গিয়েছেন এবং শেষ পর্যন্ত মাত্র ২০০ জন শরণার্থী মানা ক্যাম্পে গিয়েছেন। এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রােধের ব্যবস্থা করার জন্য তারা রাজ্য সরকারকে অনুরােধ জানিয়েছেন।

সূত্র: কালান্তর ১০.৬.১৯৭১