নৈমুদ্দিন আহমদের বিবৃতি
পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মিঃ নৈমুদ্দিন আমেদ [আহমদ] বলেন, পাকিস্তানের শতকরা ৬৬ জন অধিবাসীর মাতৃভাষাকে পাকিস্তান ডােমিনিয়নের সরকারী ভাষা করার দাবী করিয়া সে আন্দোলন সুরু [শুরু] হইয়াছে, নাজিমুদ্দিন মন্ত্রিসভা তাহা দমন করতে চেষ্টা করিয়া ফ্যাসিস্ট নীতিরই অনুসরণ করিতেছেন। তাঁহারা নিরীহ ছাত্রদের উপর গুলী ও লাঠি চালাইয়াছেন এবং অনেককে গ্রেপ্তার করিয়াছেন। ছাত্রেরা ইহাতে আতঙ্কিত না হইয়া বাঙলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য তাহাদের দাবী পূরণ করিবে বলিয়াই আমার বিশ্বাস। আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবী পূরণের জন্য আমরা যে আন্দোলন সুরু [শুরু করিয়াছি তাহাতে যােগদানের জন্য আমরা পাকিস্তানের সমস্ত ছাত্রকে আহ্বান করিতেছি। গতকল্যকার ঘটনায় প্রায় ২০০ জন আহত হইয়াছে। তাহাদের মধ্যে ১৮ জন গুরুতর আহত হইয়া হাসপাতালে প্রেরিত হয়। ৯০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাহাদের মধ্যে অনেককে ছাড়িয়া দেওয়া হইয়াছে। ৬৯ জনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হইয়াছে। | গতকল্যকার ঘটনা সম্পর্কে যাহারা গ্রেপ্তার হইয়াছেন তাহাদের মধ্যে প্রাদেশিক মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য (পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সদস্য] সেখ [শেখ] মুজাবর [মুজিবুর রহমান, ঢাকা সিটি স্টুডেন্টস মুসলিম লীগের আহ্বায়ক মিঃ ওয়ালী [অলি] আহাদ এবং স্থানীয় বাঙলা সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘ইনসান’ এর সম্পাদক মিঃ আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী অন্যতম। অন্যান্য ব্যক্তির সহিত তমদুন মজলিসের সম্পাদক অধ্যাপক এ কাসেম এবং স্থানীয় বাঙ্গলা সাপ্তাহিক জিন্দিগী’র সহযােগী সম্পাদক মিঃ কাজী সামসুল ইসলাম আহত হইয়াছেন।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৩ মার্চ ১৯৪৮
ভাষা আন্দোলনে শেখ মুজিব কতিপয় দলিল -ড. এম আবদুল আলীম