জয় সিন্ধু
শেখ মুজিবুরের ‘জয় বাংলা স্লোগানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সামরিক চক্র আজ নানা আধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ে বাঙলাদেশের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছেন। বাঙালিরাও নিজেদের সার্বভৌমত্বের জন্যে এবং শােষণের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম চালাচ্ছেন। এ ছবি শুধু পূর্বেই নয়, পশ্চিম পাকিস্তানেও নানা প্রদেশগুলাের অধিবাসীরা আর কেবল ধর্মের ভিত্তিতেই এই সামরিক শােষণ মেনে নিতে পারছেন না। সাম্প্রতিক কালে ‘জয় সিন্ধু স্লোগানের মধ্যে দিয়ে সিন্ধু প্রদেশের স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনের ক্রমপ্রসার তারই প্রমাণ।
‘জয় সিন্ধ’ স্লোগানের জন্মদাতা হচ্ছেন সিন্ধী ভাষার প্রখ্যাত বিদ্রোহী কবি এবং হারি কষকদের অবিসংবাদিত নেতা হায়দার বখশ জাতেই। শ্রীজাতেই বিভাগােত্তর ভারতেই প্রথম কবি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৪৬ সালে তাঁর ‘আজাদ-ই-কত্তম’কে সিন্ধী ভাষায় স্বাধীনতার মহাকাব্য বলা হয়েছিল। ১৯২৮-২৯ সালে তার কাব্যগ্রন্থ ‘ শিওয়াহ’ প্রকাশিত হয়েছিল। ইকবালের ‘
শিওয়াহ’তে ছিল স্বাধীনতার জন্য ঈশ্বরের কাছে একজন মুসলমানের আর্তি, কিন্তু জাতােই-এর কাব্যে আছে একজন মানুষের আর্তি।
জনাব জাতেই ১৯৪১ সালে প্রথম, হারি কৃষকদের মধ্যে সংগঠন শুরু করেন এবং শােষণমুক্তির জন্যে অবিরল সংগ্রাম করেন। পশ্চিম পাকিস্তানের এক ইউনিট প্রথার বিরুদ্ধেও তার আন্দোলন ছিল সােচ্চার। ১৯৬৭ সালে তার ‘জিয়ে সিন্ধ’ (জয় সিন্ধু) কবিতা প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি জনগণের স্লোগানে রূপান্তরিত হয়ে যায়। ১৯৭০-এর ২১ মে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
সূত্র: সপ্তাহ, ৭ মে ১৯৭১