আলােচনা ইয়াহিয়ার বন্ধু-ডায়াস হুঁশিয়ার
ইংরেজ আমলের আই.সি.এস. গভর্নর ডায়াস পশ্চিম বাংলায় তার নিজের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করে ফ্যাসিস্ট ইয়াহিয়ার মুখে হাসি ফুটাচ্ছেন। কর্মচারী আন্দোলনের ১৩ জন নেতাকে ছাঁটাই করে যারা কয়েক লক্ষ কর্মচারীকে লড়াই এর ময়দানে ঠেলে দিতে পারেন, তারা কী করে অপরের গণতন্ত্রের জন্য দরীদ হবেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামীদের মনেও আজ সে প্রশ্নই জাগছে। পশ্চিম বাংলার ৬০ লক্ষ শরণার্থীর জীবন আজ ডায়াসের উস্কানিমূলক কাজে বিপন্ন হতে পড়ছে।
মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির নেতা কমরেড প্রমোেদ দাশগুপ্ত বলেছেন, ডায়াস বাঙালির শারদোৎসবকে পণ্ড করার উদ্দেশ্য নিয়েই এ সময় এই জঘন্য আক্রমণ শুরু করেছেন।
সরকারি কর্মচারী আন্দোলনের নেতাদের অপরাধ কী? ইন্দিরাজী ট্যাক্স বাড়াবেন, তার পুলিশ পাহারায় চোরাকারবারী নিত্যপ্রয়ােজনীয় পণ্যের দর বাড়াবেন, কিন্তু কর্মচারীরা বেতন ও ভাতা বাড়ানাের দাবি জানাতে পারবেন না। বেতন ও ভাতা বাড়ানাের জন্য দাবি জানানাে চাকরির আইন-কানুন বিরােধী। টাটা, বিড়লার সেবা দাস কংগ্রেস সরকার পশ্চিম বাংলায় যে আধাফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম করেছে, সরকারি কর্মচারীর উপর এই আক্রমণ তাকে আরাে নগ্ন করে দিল।
পশ্চিম বাংলার সংগ্রামী জনতা এই আক্রমণকে মেনে নেননি, নেবে না। গত কদিন ধরে সরকারি দপ্তরগুলাের কাজ অচল হয়ে পড়েছে, লক্ষ লক্ষ কর্মচারীর দৃপ্ত মিছিলে শহরগুলাে কেঁপে উঠছে। ছাত্রসমাজ ধর্মঘট করে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। পশ্চিম বাংলা দক্ষিণপন্থী কমিউনিস্টদের বিভেদ নীতিকে পরাস্ত করে আর একটি বন্ধ’-এর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
ত্রিপুরার সংগ্রামী জনতা জানেন, এ আক্রমণ শুধু পশ্চিম বাংলার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপরে নয়, সমগ্র ভারতের পক্ষে বিপদ সংকেত। ত্রিপুরার ফ্যাসিস্টদের রুখবার জন্যই প্রয়ােজন, পশ্চিম বাংলার সংগ্রামী সরকারি কর্মচারীদের পেছনে দাঁড়ানাে।
সূত্র: দেশের ডাক
২০ আগস্ট, ১৯৭১
০৩ ভাদ্র, ১৩৭৮