You dont have javascript enabled! Please enable it! 1973.07 | সেনাপ্রধান হওয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব - সংগ্রামের নোটবুক

সেনাপ্রধান হওয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব

‘৭৩-এর জুলাইয়ে সেনা সদরে নতুন কর্মস্থলে যােগ দিলাম। পুরাে সেনাবাহিনীতে মাত্র দুজন মেজর জেনারেল, চিফ সফিউল্লাহ এবং ডেপুটি চিফ জিয়াউর রহমান। এঁরা দুজন একই কোর্স ১২তম পিএমএ লং কোর্সে কমিশনপ্রাপ্ত, কিন্তু পাসিং আউট মেধাতালিকায় ওপরে অবস্থান করায় জিয়াই চাকরিতে সিনিয়র। পেশাগত দক্ষতা, জ্যেষ্ঠতা বিবেচনায় জিয়াকেই সেনাপ্রধানরূপে নিয়ােগ দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার সফিউল্লাহকে সেনাপ্রধান নিয়ােগ দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যে বিভেদের বীজ রােপণ করে, তার ফল ভালাে হয়নি। সফিউল্লাহ মৃদুভাষী, সহজ-সরল মানুষ, কোনাে প্যাচগােজের ধার ধারেন না। জেনারেল ওসমানী জিয়াউর রহমানকে বিভিন্ন কারণে তেমন একটা পছন্দ করতেন না। প্রধানত তার সুপারিশেই প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান সফিউল্লাহকে সেনাপ্রধান পদে নিয়ােগ দেন। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা ঘােষণাকালে জিয়া নিজেকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতিরূপে ঘােষণা দেওয়ার কারণে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের চোখে বিতর্কিত ও উচ্চাভিলাষী একজন সেনা কর্মকর্তারূপে প্রতিভাত হন। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি আমলে সেনাশাসকদের হাতে বারবার নিগৃহীত হওয়ার কারণে বাঙালি সিনিয়র সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলতেন। সহজসরল সফিউল্লাহকেই আওয়ামী লীগ নেতারা অধিকতর নিরাপদ ভেবেছিলেন। তবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থানকারী বঙ্গবন্ধু সেনাবাহিনী কিংবা কোনাে সেনা কর্মকর্তাকে প্রতিপক্ষ বলে ভাবেননি।

সফিউল্লাহকে সেনাপ্রধান নিয়ােগ দেওয়ার কারণে জিয়া অত্যন্ত মনঃক্ষুন্ন হন। কিন্তু প্রকাশ্যে তিনি আওয়ামী সরকার কিংবা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কোনােরূপ বিরূপ মন্তব্য করেননি। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী মন্ত্রীদের কাছে নিজেকে পরবর্তী সেনাপ্রধানরূপে গ্রহণযােগ্য করে তুলতে তিনি প্রাণপণ চেষ্টা করে যান। তিনি জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বিচিত্রায় মুক্তিযুদ্ধ-সম্পর্কিত এক প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা বলে অভিহিত করে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। কিন্তু শেষ বিচারে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের আনুকূল্যলাভে সমর্থ হননি।

পরবর্তী সেনাপ্রধান হওয়ার জন্য জিয়াউর রহমানের সমান্তরালে গােপনে লবিং শুরু করেন চিফ অব জেনারেল স্টাফ ব্রিগেডিয়ার খালেদ মােশাররফ। যশােরের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার মীর শওকত আলী খালেদের কোর্সমেট কিন্তু মেধাতালিকায় উচ্চতর অবস্থানের কারণে খালেদের সিনিয়র ছিলেন। তিনি আউট অব টার্ন চিফ হওয়ার প্রতিযােগিতায় লিপ্ত হননি কিন্তু সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ গ্রুপিংয়ে জিয়াকেই সমর্থন করতেন। জিয়া ও মীর শওকত খালেদকে মােটেই পছন্দ করতেন না। এ ধরনের গ্রুপিং সেনাবাহিনীর ঐক্যে ফাটল ধরায়, যদিও জুনিয়র অফিসাররা এসব নিয়ে মাথা ঘামাতেন না। কিন্তু সদ্য স্বাধীন দেশে অফিসারদের গ্রুপিং ও অপ্রয়ােজনীয় লবিং সেনাবাহিনীর পেশাগত উৎকর্ষ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে। | জিয়াউর রহমানের একটি ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা ছিল, তিনি কলকাতা ও করাচিতে বেড়ে উঠেছেন। করাচির একটি স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করার পরই তিনি কাকুল মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেটরূপে যােগ দেন। বাংলা লিখতে-পড়তে তার অসুবিধা হতাে। ঢাকায় তাঁর বন্ধুবান্ধব কিংবা সহপাঠী কেউ ছিল না। অপর দিকে খালেদ মােশাররফ ময়মনসিংহ ও ঢাকায় বেড়ে উঠেছেন, বাংলা মিডিয়ামে পড়াশােনা করেছেন। এখানকার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর বহু সহপাঠী, বন্ধুবান্ধব রয়েছেন, যাদের সঙ্গে তিনি সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ।

খালেদের আপন ছােট ভাই রাশেদ মােশাররফ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য থাকায় সেনাপ্রধান হওয়ার রেসে তিনি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন। খালেদ ২ নম্বর সেক্টর কমান্ডাররূপে ঢাকা শহরের মুক্তিযােদ্ধা তরুণ ও ছাত্রদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। স্বাধীনতালাভের পর এসব তরুণ খালেদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং খালেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখেন। পক্ষান্তরে জিয়া কিছুটা রাশভারী প্রকৃতির ব্যক্তি ছিলেন, জুনিয়র অফিসার ও বেসামরিক মুক্তিযােদ্ধাদের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতেন। করাচি ও কলকাতায় বেড়ে ওঠার কারণে ঢাকায় তার বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতজনের সংখ্যা কম ছিল। আওয়ামী লীগ নেতা, জাতীয় সংসদ সদস্য, মন্ত্রী—এঁদের সঙ্গে তাঁর পূর্বপরিচয় কিংবা ঘনিষ্ঠতা ছিল না। তবে তিনি আওয়ামী নেতাদের গুড হিউমারে রাখার ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলেন। কারণ, তারা আগাগােড়াই তাকে সন্দেহের চোখে দেখতেন।

চিফ সফিউল্লাহ ও ডেপুটি চিফ জিয়ার মধ্যে মানসিক দূরত্ব ক্রমবর্ধমান ছিল। ডেপুটি চিফ অব স্টাফ পদটি এ সময় আলংকারিক রূপ পরিগ্রহ করে। সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ কোনাে ফাইল জিয়ার কাছে আসত না। চিফ তাকে বাইপাস করে সিজিএস এবং দুজন পিএসও (প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার) এজি, সিওএলের মাধ্যমে যাবতীয় কাজ পরিচালনা করতেন। প্রকৃতপক্ষে কর্মহীন জিয়ার একমাত্র দায়িত্ব ছিল চারটি ক্যাডেট কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানরূপে দায়িত্ব পালন করা। এ দায়িত্বকে জিয়া সিরিয়াসলি নিয়েছিলেন। প্রতি মাসেই তিনি একটি ক্যাডেট কলেজ ভিজিট করতেন এবং কলেজের দৈনন্দিন কার্যক্রম, পাঠক্রম, শৃঙ্খলা ইত্যাদি বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে খতিয়ে দেখতেন। ক্যাডেট কলেজ গভর্নিং বডির সেক্রেটারিরূপে আমিই মিটিং ডাকতাম।

সেনাবাহিনীতে কোনাে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে না পারার কারণে, বিশেষ করে জুনিয়রের অধীনে চাকরিরত থাকার কারণে তিনি বিষন্ন থাকতেন। তেমন কোনাে ফাইল না আসার কারণে তাঁর তখন অখণ্ড অবসর, অফিসে এসেই তিনি একটা বই নিয়ে বসতেন। টাইম, নিউজউইক এবং আন্তর্জাতিক পত্রপত্রিকাগুলাে পড়ে সময় কাটাতেন। দুইটা বাজলেই ইন্টাররুমে তাঁর ভারী কণ্ঠস্বর ভেসে আসত, ‘Let us call it a day.’ অফিস। থেকে বেরিয়ে কালাে মার্সিডিজ স্টাফ কারে এডিসি ক্যাপ্টেন কাইয়ুমকে পাশে। নিয়ে শহীদ মইনুল রােডের বাসায় যেতেন। এই ছিল তার প্রতিদিনের রুটিন, তিন বছর ডিসিএএস থাকাকালে বিভিন্ন বিষয়ে প্রচুর পড়াশােনা করেছেন, যা পরবর্তীকালে তাঁকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে সহায়তা করেছে।

মির্জাপুর, রাজশাহী, ঝিনাইদহ ও ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজসমূহে আমরা সামরিক জিপে চড়ে যেতাম এবং আমিই ড্রাইভ করতাম। জিয়া অল্প। কথার মানুষ। দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার সময় সাধারণত তিনি চুপচাপ থাকতেন। টুকটাক আলাপচারিতায় আমিই কথা বলতাম। তিনি ধৈর্যশীল শ্রোতা। মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলাের স্মৃতিচারণা করতাম আমরা। মৃত্যুর মুখােমুখি দাঁড়িয়ে অনেক কঠিন সময় পার করেছি আমরা।

সকালে তার অফিসে প্রথম প্রবেশের সময় সচরাচর জিজ্ঞাসা করতেন, Any News, what is happening? আমি আমার জানামতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তাকে ব্রিফ করতাম। যুদ্ধক্ষেত্রে একসঙ্গে থাকার কারণে তিনি আমাকে স্নেহ করতেন এবং মাঝেমধ্যে রাজনৈতিক বিষয় নিয়েও জানতে চাইতেন। একদিন হঠাৎ জিজ্ঞাসা করলেন, “আচ্ছা, বলাে তাে সরকার | কি আমাকে কখনাে সেনাপ্রধান বানাবে? আমার ত্বরিত জবাব, কখনাে না।’ তিনি একটু হতাশ হলেন। ‘একজন আমাকে বলেছেন আমি চিফ হবই, তিনি দৃঢ়ভাবে জানালেন। ‘কে বলেছে, স্যার? আমার জিজ্ঞাসা।।

‘একজন পামিস্ট (হস্তরেখাবিদ) বলেছেন, খুবই নামকরা ব্যক্তি, জিয়া বললেন।
‘স্যার, কিছু মনে করবেন না, আমি পামিস্ট্রিতে বিশ্বাস করি না। তবে শুনতে পাচ্ছি আপনাকে শিগগিরই রাষ্ট্রদূত করে বিদেশে পাঠানাে হবে। আমি সরাসরি জানালাম।

জিয়া বিচলিত হলেন। খুরশীদকে ডাকো, আমাকে নির্দেশ দিলেন। ব্রিগেডিয়ার খুরশীদ মেডিকেল কোরের সিনিয়র অফিসার। জিয়ার একান্ত সুহৃদ ও ভক্ত। ক্যাপ্টেন র্যাঙ্কেই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বরখাস্ত হয়েছিলেন এবং এই মামলার সুবাদে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। আমি ব্রিগেডিয়ার খুরশীদকে ফোন করে জেনারেল জিয়ার মেসেজ দিলাম। ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে খুরশীদ এলেন। জিয়ার রুমে ১০ মিনিট সময় কাটিয়ে সােজা ৩২ নম্বর রােডে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে গেলেন। সে বাড়ির শয়নকক্ষেও তার প্রবেশাধিকার ছিল। পরের দিন তিনি আমাকে পুরাে ঘটনা বললেন। তার জবানিতে শুনুন :
আমি বেডরুমে ঢুকে বঙ্গবন্ধুকে জড়িয়ে ধরে বললাম, ‘স্যার, আমার একটা কথা রাখতেই হবে।

‘আগে বল, কী কথা?’ বঙ্গবন্ধু। ‘আগে বলেন আমার কথা রাখবেন কি না? আমি আরও শক্তভাবে তাঁকে জড়িয়ে ধরি।। ‘‘আরে পাগলা, ছাড় ছাড়। আচ্ছা, ঠিক আছে, রাখব তাের কথা। বঙ্গবন্ধু। ‘স্যার, জিয়াকে বাইরে পাঠাবেন না; সেনাবাহিনীতে তার মতাে সৎ ও দক্ষ অফিসার এ মুহূর্তে খুবই প্রয়ােজন।’

প্রধানমন্ত্রী গম্ভীর হয়ে গেলেন। এক মিনিট চিন্তা করে খুরশীদকে বললেন, ‘তােকে নিয়ে আর পারলাম না। এসব তদবির আর করবি না। শেষবারের মতাে তাের কথা রাখলাম। জিয়ার বিদেশে পােস্টিংয়ের সিদ্ধান্ত ক্যানসেল হলাে। জিয়া অবশ্যই ভাগ্যের বরপুত্র।

১৯৭৩-এর শেষ ভাগে সেনানিবাসের দৃশ্যপটে বেশ কিছু নাটকীয় পরিবর্তন দেখা গেল। পাকিস্তানে আটকে পড়া প্রায় ২০ হাজার বাঙালি সৈনিক এবং ৫০০ অফিসারের রিপ্যাট্রিয়েট হয়ে বাংলাদেশে আসা শুরু হলাে। পাকিস্তান-প্রত্যাগত সিনিয়র অফিসাররা মুক্তিযােদ্ধা সফিউল্লাহ, জিয়া, খালেদ, মীর শওকতের তুলনায় অনেক সিনিয়র। Repatriation প্রক্রিয়া সমাপ্ত হওয়ার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ পদসমূহে কাদের বসানাে হবে, এ নিয়ে মুক্তিযােদ্ধা অফিসারদের মধ্যে অস্থিরতার সৃষ্টি হলাে। পাকিস্তান-প্রত্যাগতদের মধ্যে রয়েছেন সর্বজ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল খাজা ওয়াসিউদ্দিন। তিনি ঢাকার নবাব পরিবারের সদস্য। পেশাগতভাবে ততটা দক্ষ না হলেও রাজনৈতিক বিবেচনায় আইয়ুব ও ইয়াহিয়ার আমলে প্রমােশন পেয়ে উচ্চপদে আসীন হন। তিনি নিজেকে প্রকাশ্যে বাঙালি দাবি করলেও তার পুত্র শফি ওয়াসিউদ্দিন ও অন্যরা নিজেদের কাশ্মীরি বলে পরিচয় দিতেন। ওয়াসিউদ্দিন প্রত্যাগত হয়ে ঢাকায় এলেও আমার কোম্পানি অফিসার শফি পাকিস্তানেই থেকে যায়, পিতার সঙ্গে আসেনি। ৩০ মার্চে যশােরে আমাদের বিদ্রোহকালে সে বিদ্রোহে যােগ দেয়নি, পাকিস্তানি অফিসারদের সঙ্গে বসে থাকে। ১৯৭৪ সালের গােড়ার দিকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল খাজা ওয়াসিউদ্দিন ঢাকা এয়ারপাের্টে অবতরণ করলে জাহাজ চলাচল ও বেসামরিক পরিবহনমন্ত্রী সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ওসমানী তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগতম জানান এবং প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নিয়ে যান। তিনি ওয়াসিউদ্দিনকে সেনাপ্রধানরূপে নিয়ােগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরােধ জানান। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি ভেবে দেখবেন বলে জানান।

সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল সফিউল্লাহ ওয়াসিউদ্দিনের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেন। তাকে ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে (পাঠান) সেনা সদরের উল্টো দিকে অবস্থিত ভিআইপি মেসে থাকতে দেন। রাতে তাঁর সম্মানে এএইচকিউ মেসে পার্টির আয়ােজন করা হয়। সেখানে আমি তাকে বােকার মতাে এক প্রশ্ন করে বসি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, “স্যার, আপনি তাে এলেন, আপনার পুত্র শফি যশােরে আমার কোম্পানি অফিসার ছিল। সে কি এসেছে? ওয়াসিউদ্দিন একটু বিব্রত হলেন। কোনাে উত্তর দিলেন না। অন্যদের কাছে জানলাম, শফি ঢাকায় আসেনি, সে পাকিস্তানে থাকার অপশন দিয়েছে। পরদিন সফিউল্লাহ, জিয়া ও অন্য মুক্তিযােদ্ধা অফিসাররা হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন। সরকার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াসিউদ্দিনকে সেনা চাকরি থেকে অবসর দিয়ে জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধিরূপে নিয়ােগ দিয়েছে।  [1, pp. 140–145]

References:

[1]      হাফিজ উদ্দিন, সৈনিক জীবন গৌরবের একাত্তর রক্তাক্ত পচাত্তর [Military life, seventy one the pride, seventy five the blood bath], 1st ed. Prothoma, 2020.