You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.02 | খেতাব প্রদানে স্বজনপ্রীতি - সংগ্রামের নোটবুক

খেতাব প্রদানে স্বজনপ্রীতি

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তড়িঘড়ি করে কয়েকজন মুক্তিযােদ্ধাকে গ্যালান্ট্রি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। একজনকে বীরশ্রেষ্ঠ, তিনজনকে বীর উত্তম, চৌদ্দজনকে বীর বিক্রম এবং পঁচিশজনকে বীর প্রতীক খেতাব দেওয়া হয়। ১ম ইস্ট বেঙ্গলের মাত্র উনিশজনকে খেতাব দেওয়া হয়। সিপাহি হামিদুর রহমানকে বীরশ্রেষ্ঠ, শহীদ ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন মােমতাজকে বীর উত্তম এবং আমাকে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করা হয়। এঁদের যুদ্ধ চলাকালেই বাছাই করা হয়। যেহেতু সে সময় অল্প কয়েকজনকে দেওয়া হয়েছে, এটি নিয়ে তেমন কোনাে প্রতিক্রিয়া হয়নি। কিন্তু স্বাধীনতালাভের পর স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে খেতাব বণ্টনের তালিকা করা হয়, যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলাে। পুরস্কার প্রদান কমিটির সদস্যরা সুযােগ পেয়ে নিজেরাই নিজেদের বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করেন, অথচ তারা কোনাে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। সেক্টর কমান্ডাররা (জিয়া ও খালেদ মােশাররফ ছাড়া) ৯ মাস ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থান করেছিলেন। অথচ তারা বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হলেন। মাত্র দুজন সেক্টর কমান্ডার।

মেজর ওসমান ও মেজর জলিলকে রাজনৈতিক কারণে খেতাব দেওয়া হলাে না। তাঁর পরিবর্তে সাব-সেক্টর কমান্ডার শাহজাহান উমরকে বীর উত্তম খেতাব দেওয়া হলাে। কমিটির প্রধান এ কে খন্দকার বিমানবাহিনীর কয়েকজন অফিসারকে কোনাে অপারেশনে অংশগ্রহণ না করা সত্ত্বেও খেতাব দিলেন। পৃথিবীর কোনাে সেনাবাহিনীতে যুদ্ধ না করেও সাহসিকতা পুরস্কার বাগিয়ে নেওয়ার দৃষ্টান্ত বিরল। এতে সাধারণ সৈনিক, যারা সামনাসামনি যুদ্ধে অংশ নেয় তাদের বঞ্চিত করা হয়। আমি বীর বিক্রম খেতাব পেয়ে নিজেকে অবমূল্যায়িত মনে করি এবং সারা জীবন গ্লানিতে ভুগি। [1, pp. 133–134]

References:
[1] হাফিজ উদ্দিন, সৈনিক জীবন গৌরবের একাত্তর রক্তাক্ত পচাত্তর [Military life, seventy one the pride, seventy five the blood bath], 1st ed. Prothoma, 2020.