মার্কিন অস্ত্রে বাঙলাদেশে রক্ত ঝরানাে চলবে না
৮টি শরণার্থী শিবিরে কেলােগের সামনে মার্কিন বিরােধী বিক্ষোভ
বনগাঁ, ২৪ জুন- মার্কিন সরকারের শরণার্থী দপ্তরের প্রতিনিধি শ্রী ফ্রাঙ্ক কেলােগ আজ সীমান্ত অঞ্চলের শরণার্থী শিবিরগুলি পরিদর্শন করতে এলে কমপক্ষে ৮ টি স্থানে পাকিস্তানে মার্কিন অস্ত্র সাহায্যের প্রতিবাদে এক বিরাট সংখ্যক জনতার বিক্ষোভের সম্মুখীন হন। বিক্ষোভকারীরা আর সামনে খুনী ইয়াহিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ কর” ” দ্বি-মুখী নীতি বন্ধ কর” ও “মার্কিনী অস্ত্রে বাঙলাদেশে রক্ত ঝরানাে চলবে না” প্রভৃতি শ্লোগানসহ বিক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে ইউ এন আই জানিয়েছে।
যশাের রােড ও বাগদা রােডের বিভিন্ন স্থানে, বনগাঁ সদর হাসপাতালে ও মালঞ্চ শরণার্থী শিবিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রচন্ড বিক্ষোভ দেখানাে হয়। মালঞ্চ শিবিরে শ্রীকোেেগ উপস্থিত হওয়ামাত্র শরণার্থীরা তাকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নে জর্জরিত করে তােলেন। দুজন শরণার্থী তাকে সরাসরি প্রশ্ন করে জানতে চান-তার এখানে আসার উদ্দেশ্য কি। শরণার্থী দু’জন বলেন, যখন তােমার দেশ পাকিস্তানে অস্ত্র সরবরাহ করছে তখন তুমি এখানে কোন উদ্দেশ্য এসেছাে ? প্রশ্নের জবাবে শ্রীকেলােগের সহযােগী মার্কিন কনসাল জেনারেল হার্বাট বলেন যে, তারা শরণার্থীদের জন্য আরও বেশী পরিমাণ সাহায্য দানের উদ্দেশ্যেই এখানে এসেছেন। শ্রীকেলােগ বনগাঁ সদও হাসপাতালে পৌছুলে সেখানেও তাঁকে সরকার গােড়াতেই বিক্ষোভের সম্মুখীন হতে হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখযোেগ্য যে এই হাসপাতালে ইয়াহিয়ার সৈন্যদের গুলিতে আহত শরণার্থীরা রয়েছেন। চট্টগ্রাম কলেজের বাঙলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান বাঙলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের পক্ষ থেকে তাঁর কাছে এক স্মারকলিপি পেশ করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জন ডঃ টি হােসেন শ্রী কেলােগের সামনে ৪টি অল্প বয়স্ক ছেলে মেয়ে হাজির করিয়ে তাদের চোখের অবস্থা দেখান। এই ছেলে মেয়ের চোখগুলি ইয়াহিয়ার সৈন্যের আক্রমণে নষ্ট হয়ে গেছে। বলে তিনি উল্লেখ করেন। পরিশেষে শ্রী কেলােগকে স্বীকার করতে হযেছে যে পূর্ববঙ্গের অভ্যন্তরে সাংঘাতিক কিছু একটা ঘটে গেছে।
সূত্র: কালান্তর, ২৫.৬.১৯৭১