You dont have javascript enabled! Please enable it!

স্বাধীন বাংলা আন্দোলনে ত্রিপুরা আন্দোলিত

পূর্ব বাংলার মুক্তি আন্দোলন তথা জঙ্গি শাসকের গণহত্যালীলা উত্তরােত্তর বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র ত্রিপুরা রাজ্যে উদ্বেগ-উত্তেজনার প্লাবন উত্তাল তরঙ্গের ন্যায় গণচিত্তকে চঞ্চল করিয়া তুলিতেছে। অস্থিরতা আর উত্তেজনায় আচ্ছন্ন যুবসমাজ। বিক্ষোভ মিছিলের অন্ত নাই। প্রত্যহ কয়েকটি করিয়া মিছিল ও সভা অনুষ্ঠিত হইতেছে। টিক্কা খা ও ইয়াহিয়া খর কুশপুত্তলিকা দাহের হিড়িক পড়িয়া গিয়াছে। ২৭ মার্চ হইতে রাজধানী আগরতলার আকাশ বাতাস ‘মুজিবর জিন্দাবাদ’ আর ‘ইয়াহিয়া মুর্দাবাদ’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত। ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় ঘাের কালবৈশাখীর ঝড় বৃষ্টিকে উপেক্ষা করিয়া মােটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন কর্মীগণ বিরাট মশাল শােভাযাত্রা বাহির করে; মিছিলটি বর্ডারে যাইয়া জঙ্গি শাসকদের কুশপুত্তলিক দাহ করে।
২৯ মার্চ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলা সরকারের প্রতি সমর্থন জানায় এবং তীব্র ও কঠোর ভাষায় জঙ্গি শাসকের নিন্দা করে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বিরাট একটি মিছিল সারা শহর পরিক্রমা করে। সকালের দিকে শিশুপার্কে এক সভায় রাষ্ট্র সঙ্ঘর আশু হস্তক্ষেপ এবং ভারত কর্তৃক স্বাধীন বাংলা সরকারকে স্বীকৃতি ও সর্বপ্রকার সাহায্য দানের দাবিতে বিভিন্ন বক্তা জোরালাে ভাষায় বক্তব্য রাখেন। উক্ত সভায় পূর্ববাংলার ছাত্রনেতা মহম্মদ ইকবাল আসরফি পূর্ব বাংলার সাম্প্রতিক ঘটনার রােমহর্ষক বিবরণ প্রদান করেন। আমরা বাঙ্গালী’ নামক একটি সংস্থা সন্ধ্যার দিকে পথসভায় স্বাধীন বাংলা সরকারকে স্বীকৃতি ও অস্ত্রশস্ত্রাদি দিয়া সাহায্য করিবার জন্য বক্তব্য রাখে। সরকারি কর্মচারী সমিতির পক্ষ হইতে নির্বিচারে গণহত্যার প্রতিবাদে বিরাট মিছিল বাহির হয়। ছাত্রদের নেতৃত্বে গঠিত হইয়াছে সংগ্রামী সহায়ক কমিটি। ফরােয়ার্ড ব্লকের সদস্যগণ সংগ্রাম সহায়ক পরিষদ গঠন করিয়াছে। শিবনগর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন রােডে জয় বাংলা মুক্তি ফ্রন্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান পূর্ব বাংলার মুক্তির জন্য সর্বস্ব ত্যাগে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়াছে।

সূত্র: ত্রিপুরা
৩১ মার্চ, ১৯৭১
১৭ চৈত্র, ১৩৭৭

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!