You dont have javascript enabled! Please enable it!

কলেরার ভয়াবহ প্রসার

বাঙলাদেশ থেকে পশ্চিম বাঙলায় শরণার্থীদের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে কলেরা মহামারীর বীজ এ রাজ্যে প্রবেশ করেছে। অনাহার, কুখাদ্য ভক্ষণ, শবদেহ ও জীবানুপূর্ণ দুষিত পানীয় জল ব্যবহার ইত্যাদির দ্বারা এই ভয়ঙ্কর রােগ তাদের দ্বারা বাহিত হয়েছিল। ইতিপূর্বে এই রােগের ব্যাপক প্রসারের সম্ভাবনা সম্পর্কে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসােসিয়েশন বার বার সরকার ও পৌর প্রতিষ্ঠানকে হুঁশিয়ার দিয়েছিলেন এবং চরম জরুরী পন্থা গ্রহণ করে এর মােকাবিলা করার জন্য আহবান করেছিলেন। দীর্ঘকালের সেবাব্রতের অভিজ্ঞতা থেকে তারা কলেরা ও টাইফয়েড রােগের বিস্তৃতি সম্পর্কে যে যে বিপজ্জনক সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছিলেন, সরকারী দীর্ঘসূত্রতার ফলে তার প্রতিটি সম্ভাবনাই আক্ষরিকভাবে ঘটে চলেছে। প্রথমে এই মহামারী রােগ শরণার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পরবর্তী পর্যায়ে রােগের প্রকোপ কিছুটা স্তিমিত হয়ে আসে। তারপর দ্বিগুণ তেজে এই রােগ শরণার্থীদের গন্ডী অতিক্রম করে পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন জেলার অধিবাসীদের পর্যন্ত ব্যাপকভাবে আক্রমণ করেছে। আশ্রিত ও আশ্রয়দাতা উভয় স্তরের মানুষের আস্তত্বই এতাে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। যদি এই ভয়াবহ প্রসারকে রুখে না দেওয়া যায়, তবে পশ্চিম বাঙলার মানুষকেও হাজার হাজার প্রাণের মূল্য গুণে দিতে হবে। শুধু পৌর প্রতিষ্ঠানগুলির পক্ষে মহামারীর মােকাবিলা অসম্ভব। সরকারী ও বেসরকারী সমস্ত উদ্যোগের সংযােগ সাধন না করে কোন অবস্থাতেই আর সম্ভাব্য সর্বনাশের প্রতিরােধ গড়া যাবে না।

সূত্র: কালান্তর, ২২.৬.১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!