You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.23 | ত্রিপুরার ভিতর পাক গুলিগােলা | ত্রিপুরা - সংগ্রামের নোটবুক

ত্রিপুরার ভিতর পাক গুলিগােলা

আগরতলা, ১৭ জুন- গত ১০ জুন রাত প্রায় ৮-১৫ মিনিটের সময় পাক বাহিনী পাকিস্তানের সােনাপুর গ্রামে হালকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। কয়েকটি বুলেট আমাদের আমলীঘাট বি.ও.পিতে পড়েছে। কেহ হতাহত হয়নি।
আগরতলা, ১৭ জুন। গত ১৫ জুন রাত্রিতে পাক বাহিনী সিধাই থানা সীমান্ত এলাকার অপর পার্শ্বস্থ পাকিস্তানের গ্রামগুলােতে গােলাবর্ষণ শুরু করে। ফলে সীমান্ত বরাবর পাকিস্তানের গ্রামগুলাে থেকে অগণিত সংখ্যায় জনসাধারণ সিধাই সীমান্ত দিয়ে আশ্রয়ের আশায় ত্রিপুরায় চলে আসছেন।
আগরতলা, ১৭ জুন। গত ১৩ জুন বেলা প্রায় ১১-১৫ মিনিট থেকে ১২ ঘটিকা পর্যন্ত পাকিস্তানের বিবির বাজার এলাকায় মুক্তিফৌজ ও পাক সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রচণ্ড গােলাগুলি বিনিময় হয়। পাক বাহিনীর কিছু গােলাগুলি ভারতীয় এলাকায় এসে পড়ে। সােনামুড়া মহকুমার সােনাপুর গ্রামের ভারতীয় নাগরিক হাজেরা খাতুন পাকিস্তানি বুলেটের আঘাতে মৃত্যুমুখে পতিত হন। পাকিস্তানের অন্তর্গত শাহপুরের অধিবাসী জনৈকা মুসলমান বালিকা ত্রিপুরায় আশ্রয়ের আশায় প্রবেশ করার কালে পাক বাহিনীর গােলার আঘাতে আহত হন, তাকে চিকিৎসার জন্য সােনামুড়া হাসপাতালে পাঠানাে হয়েছে।
আগরতলা, ১৮ জুন। গত ১৪ জুন রাত প্রায় ৮ ঘটিকার সময় পাকবাহিনী বক্সনগর এলাকার বিপরীত পার্শ্বস্থ পাকিস্তানের গ্রামগুলােতে অনবরত থ্রি ইঞ্চি মর্টার ছুঁড়তে থাকে। গােলাবর্ষণ একনাগাড়ে রাত প্রায় ২ ঘটিকা পর্যন্ত চলে। কয়েকটি বােমা ভারতীয় সীমানায় এসে পড়ে।
আগরতলা, ১৮ জুন। গত ১৬ জুন বেলা দুটো থেকে তিন ঘটিকা পর্যন্ত পাক বাহিনী উজানীসার থেকে পাকিস্তানের গ্রাম মনিয়ন, তুলসীমাইল, বড়পােঘর এবং লক্ষ্মীপুর গ্রামগুলােকে লক্ষ করে গােলাগুলি বর্ষণ শুরু করে। তুলসীমাইল গ্রামের বাসিন্দা পাক নাগরিক শ্রীমতি নূরজাহান গুলির আঘাতে আহত হন। তবে তিনি আশ্রয়ের আশায় ভারতে চলে আসেন ও তাকে গােবিন্দ বল্লভ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। তার স্বামী আবদুল মজিদ গােলা বর্ষণের ফলে মারা যান।
আগরতলা ১৯ জুন। গত ১৬ জুন (১৯৭১) সকালে পাক সেনাবাহিনী তাদের চম্পরাই চা বাগান এলাকা থেকে কমলপুর মহকুমার ভারতীয় গ্রাম সােনারাই এর দিকে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এর ফলে সােনারাই ক্যাম্পের দু’জন পাক শরণার্থী গুলিবিদ্ধ হন। আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য কমলপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সূত্র: ত্রিপুরা
২৩ জুন, ১৯৭১