You dont have javascript enabled! Please enable it!

৩ নভেম্বর ১৯৭৫
জেল হত্যা তদন্ত কমিশনের সদস্য সুপ্রিম কোর্টের জাস্টিস কে. এম. সােবহানের সাক্ষাৎকার
৭ জুলাই ১৯৮৭ | ট্রান্সক্রাইব : মনসুর আলী।

লেখক ও তার মা, আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়ামের সদস্য সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনসহ জাস্টিস সােবহানের মালিবাগের বাসস্থানে সাক্ষাৎকারটি টেপ-এ ধারণ করেন।

শারমিন আহমদ : জেল হত্যার তদন্ত সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতা ও বক্তব্য কী ?
জাস্টিস সােবহান : প্রথম কথা হচ্ছে যে ৫ নভেম্বর ১৯৭৫ গেজেট ননাটিফিকেশন হলাে এবং আমরা ৬ তারিখ সকালে জানতে পারলাম যে আমাকে নিয়ােগ করা হয়েছে ঐ কমিশনের একজন সদস্য হিসেবে। | শারমিন আহমদ : গেজেট নােটিফিকেশন কী ? | জাস্টিস সােবহান : ৫ নভেম্বর গেজেট নােটিফিকেশন হয়েছিল। জাস্টিস আহসান চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে, আমাকে এবং লেট সৈয়দ মহম্মদ হােসেনকে সদস্য করে একটা কমিশন করা হয়েছে। সেই কমিশন জেল হত্যার তদন্ত করবে। তাে, আমি যখন সকালে খবরটা রেডিওতে শুনলাম, ৬ তারিখে আমি কোর্টে গিয়ে আহসান চৌধুরীকে বললাম এখন তাে আমাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট হয়েছে, ব্যাপারটা অত্যন্ত জরুরি, কারণ যে-সমস্ত এভঙে থাকবে সে-সমস্ত নষ্ট করার চেষ্টা করবে, কাজে কাজেই আমাদের ৩ এক্ষুণি কাজ আরম্ভ করে দেওয়া। তাে, উনি বললেন, দাঁড়াও, দেখি কী হয়, এরকম বললেন। তারপর তাে ৭ তারিখ থেকে ব্যাপারটা অন্যরকম হয়ে গেল। তখন খালেদ মােশাররফ ক্ষমতার বাইরে চলে গেল। তাকে তাে মেরে ফেলা হলাে। কাজেই তদন্ত কমিশনের কোনাে কাজই হয়নি। এ কাগ”ে নিয়ােগ ব্যবস্থাটা হয়েছিল। কিন্তু তারপর কাজ কিছুই হয়নি।

শারমিন আহমদ : তার মানে ব্যাপারটা একেবারেই কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ ছিল ?
জাস্টিস সােবহান : হাঁ, কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ ছিল। ঐ গেজেট নােটিফিকেশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
শারমিন আহমদ : তারপর আপনারা কি নিজেরা কোনাে ধরনের চেষ্টা করেননি ?
জাস্টিস সােবহান : না, চেষ্টা করার তাে প্রশ্নই উঠল না। তারপরই তাে জিয়াউর রহমান পাওয়ারে চলে এল। জিয়াউর রহমান ডেপুটি চিফ মার্শাল ল’। অথরিটি হয়ে গেল। সে আসার পর স্রোত তাে একেবারে উল্টোদিকে ঘুরতে লাগল। কাজে কাজেই আমাদের পক্ষে আর কোনাে কিছুই করা সম্ভব হলাে । শারমিন আহমদ : আপনি কি আওয়ামী লীগের সদস্য ? জাস্টিস সােবহান : না, না।
শারমিন আহমদ : আপনাদের মধ্যে যাঁরা আছেন লিগ্যাল ডিপার্টমেন্টে তাঁরা কি এধরনের কোনাে আলােচনা করেছেন যে এই ইস্যুটাকে নিয়ে কিছু তােলপাড় করার বা পার্টির সাথে (আওয়ামী লীগ যােগসাজশ করার বা প্রেসার করার যে তােমরা পার্টির তরফ থেকে ইস্যুটাকে আবার চালু করাে ?
জাস্টিস সােবহান : না, সে-রকম কোনােকিছু করা হয়নি। কিন্তু আমি যতদূর শুনেছি একটা এফ.আই.আর (ফিল্ড ইনভেস্টিগেশন রিপাের্ট) বােধহয় করা হয়েছিল লালবাগ থানায়।
| শারমিন আহমদ : আর লালবাগ থানায় যে এফ.আই.আর, করা হয়েছিল সেটা কারা করেছিল সে-সম্বন্ধে কিছু জানেন ? (তল্কালীন ডি.আই.জি. প্রিন্স আব্দুল আউয়াল লালবাগ থানায় কেস করেছিলেন এবং তা সরকার নিষ্ক্রিয় করে রাখে। ১৯৯১ সালে সহদরা সিমিন হােসেন রিমিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি উল্লেখ করেন তৎকালীন ডিআইজি প্রিজন্স আব্দুল আউয়াল। সাক্ষাঙ্কারটি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে অবসরপ্রাপ্ত ডি.আই.জি’র বাসস্থানে ধারণ করা হয়।]
জাস্টিস সােবহান : তা বলতে পারব না।
শারমিন আহমদ : ডঃ কামাল হােসেন আমাকে বলেছিলেন যে এরকম একটা এফ.আই.আর, হয়েছিল কিন্তু ওটার পরে কী হলাে তিনি সে-বিষয়ে কিছু বলতে পারলেন না। কারণ এফ.আই.আর-এর কাজ কিছুই চালু হয়নি। কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

জাস্টিস সােবহান : কাজ করার তাে প্রশ্নই ওঠে না। কারণ জেল হত্যাহ পর যারা ক্ষমতায় এল তারা তাে জেল হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। কাজে কাজেই জেল হত্যার অনুসন্ধান তাে অসম্ভব। তদন্ত তাে অসম্ভব। কারণ প্রথমে যেটা করা যেত, ধরা যেত, ঐ এয়ারপাের্টের কাগজ যদি সিজ করা যেত এবং জেলের কাগজ যদি সিজ করা যেত। কারণ আমি যা শুনেছি জেলে তাে একটা চিরকুট ডি.আই.জি-কে দেওয়া হয়েছিল। যে চিরকুটে লেখা ছিল এক ভেতরে ঢােকার পারমিশন দেয়া হােক। কারণ এদের (হত্যাকারীদের। জেনে প্রথমে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রাইভেট কিছু খবর নিয়েছিলাম। তাতে বলেছিল যে একটা ছােট চিরকুটে লেখা ছিল যে চিরকুটবাহককে জেলের ভেতর ঢুকতে দেয়া হবে। এবং সেই চিরকুটের জোরে তারা ভেতরে ঢুকেছিল। তারা [জেল কর্তৃপক্ষ সেই চিরকুটকে বিশ্বাস করেনি। তারা। মােশতাককে টেলিফোন করেছিল। মােশতাক তখন বলল যে হ্যা, ওটা আমার লেখা চিরকুট। ওদেরকে ভেতরে যেতে দাও।’ এই পর্যন্ত (কাজ) হয়েছিল। তারপর তাে যারা খুন করল তাদের সঙ্গী-সাথিরা ক্ষমতায় এল। তাই ওব্যাপারে তখন করার কিছু ছিল না। একমাত্র রাজনৈতিক আন্দোলন করতে পারত ওর বিরুদ্ধে। তাছাড়া আইনত যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সে পদক্ষেপ তখন নেওয়া সম্ভব ছিল না। পুলিশের পক্ষেও সম্ভব ছিল না এবং অন্য কারুর পক্ষেও সম্ভব ছিল না। | শারমিন আহমদ : আপনি কি মনে করেন এখন ডি.আই.জি-কে পেয়ে তার কাছ থেকে কথা নেওয়া সম্ভব ?
জাস্টিস সােবহান : হ্যা, তখন যিনি ডি.আই.জি. ছিলেন আমার মনে হয় তিনি বােধহয় রিটায়ার করে গেছেন। তিনি নিশ্চয়ই বলতে পারবেন কী ঘটনা ঘটেছিল।
শারমিন আহমদ : তাঁর সাথে কীভাবে যােগাযােগ করা যেতে পারে ? জাস্টিস সােবহান : তার নাম তাে জানতে পারেন। শারমিন আহমদ : নামটা আমি পেয়েছি। নাম হচ্ছে আউয়াল। জাস্টিস সােবহান : নাম পেলে তাে ঠিকানাও পেতে পারেন।
অবসরপ্রাপ্ত আব্দুল আউয়ালের ঠিকানা বহুকষ্টে যােগাড় করে তার সাক্ষাকায়াত সহদরা রিমি গ্রহণ করে ১৯৯১ সালে। তিনি তখন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে অবসর জীবনথাপ করছিলেন। | শারমিন আহমদ : জেল হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেবার অবশ্যই সে করবে। যেহেতু খুনিরা দেশে এবং খন্দকার মােশতাক প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে। কিন্তু এই ইস্যুটাকে নিয়ে নাড়াচাড়া দেওয়া দরকার।
জাস্টিস সােবহান : বর্তমানে ব্যাপারটা এখন রাজনৈতিক। রাজনৈতিক যদি হয় তাহলে সে রাজনৈতিক ব্যাপার রাজনৈতিক দলকেই করতে হবে। অন্যের পক্ষে সম্ভব নয়। রাজনৈতিক দল, যতটুকু জানি, তাদের লিগ্যাল ডিপার্টমেন্ট আছে, ল’ইয়ার আছে, তাদের সাহায্য নিয়ে [করতে হবে। মূলত ব্যাপারটাকে রাজনৈতিকভাবে দেখাতে হবে। রাজনৈতিকভাবে না দেখলে তাে সম্ভব না।
| শারমিন আহমদ : আপনি কি মনে করেন এই যে এফ.আই.আর, করা হলাে এর ভিত্তিতে নতুন তদন্ত কমিটি কি আবার বসবে? | জাস্টিস সােবহান : আমার তাতে সন্দেহ আছে। যারা খুন করেছে তারা তাে আর্মির লােক। তাে আর্মির লােক যদি খুন করে থাকে, যেমন ফারুক সে এখন দেশে আছে। তারপর বজলুল হুদা এরা তাে প্রকাশ্যে বলছে যে তারা শেখ সাহেবকে – বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছে। কেউ তাে জিনিসটাকে নিয়ে নাড়াচাড়া করছে না। প্রকাশ্যে একজন লােক যদি বলে আমি খুন করেছি, তবে সেই খুনিকে আইনত তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে সরকার বাধ্য।
শারমিন আহমদ : মােশতাক অর্ডিনেন্স জারি করল যে ‘৭৫-এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে পারবে না। (পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সংবিধানের পঞ্চম সংশােধনীর মাধ্যমে তা স্থায়ী করে নেন)। এটা আইনগতভাবে পাল্টাবার অধিকার কি তাদের আছে ? | জাস্টিস সােবহান : আইন যদি পাল্টিয়েও থাকে, যদি ধরে নেওয়া যায়, তাহলেও প্রশ্ন হচ্ছে যে যেভাবে সংবিধান পাল্টিয়েছে, সেই আইন কি সত্যি এটা বন্ধ করেছে ? আমার রিডিং এবং আমি অনেক জায়গায় আমার বক্তব্যও রেখেছি যে – যে আইন করেছে সে আইনে জেলহত্যার বিচার বন্ধ হতে পারে
। বিচার চলবে কারণ যেভাবে আইন করেছে, সেভাবে হত্যার বিচার বন্ধ হয়নি। কাজে কাজেই কেউ যদি বিচার করতে চায় তাহলে ঐ সংবিধানে যে পরিবর্তন করা হয়েছে সেটা বাধা হবে না।
শারমিন আহমদ : সংবিধান তত ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড) ওপর পরিবর্তন করা হয়েছিল, কারণ তখন খুনিরা দুইমাস পাওয়ারে ছিল, মােশতাক ছিল। ৩ নভেম্বরের পরপরই মােশতাক ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং তারপর খুনিরা সাথে সাথেই পালিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর পরই।
জাস্টিস সােবহান । সুতরাং তারা খুব একটা সময় পায়নি। হয়তাে তারা (ক্ষমতায়) থাকলে সেটাও করতে সচেষ্ট অবশ্যই থাকত।
শারমিন আহমদ : কিন্তু ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড, যা তারা সংশােধনীতে আনল যে তাদের বিচার করতে পারা যাবে না, এই আইন যে তারা আনল, এটা কি কোনাে দেশের আইনে আনা যায় ?

জাস্টিস সােবহান : আইনত আনা যায় না। কিন্তু এখন যে সংশােধনী (জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় এসে, সপ্তম সংশােধনীর মাধs মার্শাল ল’ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে তার সব কর্মকাণ্ডকে বৈধ করে নেন। হয়েছে, তার আগে পঞ্চম সংশােধনী সেভাবেই করেছে। জিয়া কব. জিয়ার মার্শাল ল’তে ঐ ‘৭৫-এর ১৫ আগস্ট থেকে ‘৭৮-এর শেষ পর্যন্ত যা করেছে সমস্ত ভ্যালিডেট করল। এবং তাতেই ঐটা ভ্যালিডেট হয়ে গেল।
শারমিন আহমদ : এটা জিয়াউর রহমানের আমলে হয়েছে ?
জাস্টিস সােবহান : হ্যা। এটা জিয়ার আমলে হয়েছে। এই পঞ্চম সংশােধনী।
শারমিন আহমদ : তারপর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেও তাে করলেন যে, সংবিধানে ছিল যে আপনারা যারা সরকারি চাকুরিরত তাঁরা ইলেকশনে নামতে পারবেন না, কিন্তু উনি তাে CMLA থেকেই সরকারি বেতনভুক্ত অবস্থায় ইলেকশনে contest করলেন। | জাস্টিস সােবহান : আমি তখন দেশে ছিলাম না। কিন্তু আমি যেটা শুনেছি যে সে contest করেছিল । (প্রথমে) একটা গেজেট ছাপাল ব্যাক- ডেট দিয়ে । ব্যাক-ডেট দিয়ে গেজেট ছাপিয়ে তখন তিনি রিজাইন করে গেলেন।
শারমিন আহমদ : আচ্ছা, আচ্ছা! আগেই তিনি রিজাইন করেছেন? জাস্টিস সােবহান : হঁ্যা। গেজেট ছাপালেন পরে। রেজিগনেশনের পরে। শারমিন আহমদ : আপনার সাথে কি তাজউদ্দীন আহমদের পরিচয় ছিল ? জাস্টিস সােবহান : ঘনিষ্ঠ কিছু নয়। সামান্য পরিচয় ছিল। শারমিন আহমদ : আপনার যে চাকরিটা গেল, কী কারণে গেল ?
জাস্টিস সােবহান : কারণ তাে তারা কিছু বলেনি। কিন্তু কারণ পরিষ্কারভাবেই বুঝা যায় যে জিয়াউর রহমানের সময় মার্শাল ল’কে চ্যালেঞ্জ করে কতগুলাে কেস ফাইল করা হয়। প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল যে মার্শাল ল’ ও সংবিধান, যখন দুটি বিষয় পাশাপাশি আসবে, তখন কোনটা বলবত থাকবে বেশি ? সেখানে আমার বক্তব্য ছিল যে যদি সামরিক ব্যানারে বা সামরিক আইনে কোনাে অপরাধ হয় তাহলে সে অপরাধের বিচার সামরিক আদালতে করতে পারবে। কিন্তু যদি সাধারণ অপরাধ যেগুলাে হয়েছে সে-অপরাধের বিচার সংবিধানের অধীনে যে-সমস্ত আদালত আছে, সেই আদালত দেখবে। স্পেশালি যে কেসটা এল, সেটা হচ্ছে বাজিতপুর মার্ডার কেস। এটা যখন হলাে, সুপ্রিম কোর্টে যখন আপিল এল, তখন আমার বক্তব্য ছিল যে এই ঘটনাটা ঘটেছে ‘৭৪ সালে এবং ‘৭৪ সালে পুলিশ এনকোয়ারি করে ফাইনাল রিপাের্ট দিয়ে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে পার্টি, ঐ বিরােধী যারা ছিল, বাদিপশ যারা ছিল, ঐ যারা মারা গিয়েছে তাদের আত্মীয়স্বজন কোর্টে কেস করেছে,
সেই কোর্টের কেসে তারা হেরেছে। তারপর হঠাৎ করে দু’বছর আড়াই বছর পরে ওটা আবার কেসটাকে revive করল। কেসটা করে সাতদিনের মধ্যে। পলিশ চার্জশিট দিয়ে দিল। চার্জশিট দেওয়ার পরে যখন ট্রায়াল হচ্ছে সেশন কোর্টে তখন মার্শাল ল’ কেস withdraw করে নিল। মার্শাল কোর্টেতে ট্রায়াল হচ্ছে, তাে তার বিরুদ্ধে এরা সুগ্রিম কোর্টে এল । তাে তখন আমার বক্তব্য ছিল যে সাধারণ আইনে ঘটনাটা হয়েছে, পুলিশ এটা এনকোয়ারি করে রিপাের্ট দিয়েছে এবং তারপর যদি সেশন কোর্টে ট্রায়াল হয়, দায়রা জজের সামনে ট্রায়াল হলে, দায়রা জজ তখন বিচার করবে কেসটা। কারণ সামরিক আইনের অধীনে কোনাে অপরাধ হয় নাই। আমি একা ছাড়া বাকি চারজন জজ বললেন,
ওটা ঠিকই হয়েছে। এরকম আরাে বিভিন্ন ধরনের চারটে কেস ছিল। এবং সবকটারই একই কথা ছিল যে মার্শাল ল’ যদি থাকে তাহলে মার্শাল ল’ সুপিরিয়ার না কন্সটিটিউশন সুপিরিয়র ? আমার বক্তব্য ছিল যে যদি conflictএ না আসে, মার্শাল ল’র সঙ্গে যদি কন্সটিটিউশনের কোনাে conflict না হয় তাহলে কন্সিটিটিউশন সুপিরিয়ার। তার ফলে আশি সালে আমাকে অ্যাম্বাসেডর করে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিদায় দেওয়া হয়। তারপর বিরাশি সালে (‘৮২তে জেনারেল এরশাদ মার্শাল ল’র মাধ্যমে ক্ষমতায়) মার্শাল ল’ যখন হয় তখন আমাকে ফেরত আনা হলাে। ফিরিয়ে আনার ষােলােদিন পর আমাকে বলল যে তােমাকে সামরিক আইনের বদৌলতে রিমুভ করা হলাে।

Ref: ৩ নভেম্বর-জেল হত্যার পূর্বাপর – শারমিন আহমদ, pp 74-79

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!