You dont have javascript enabled! Please enable it!

আগরতলা ও সােনামুড়া সীমান্তে প্রচণ্ড লড়াই বহু পাক সেনা হতাহত
আগরতলা শহরে পাক ফৌজের গুলি বর্ষণ

আগরতলা, ১১ মে। গতকাল আগরতলা আখাউড়া সীমান্ত অঞ্চলে পাক ফৌজের সাথে মুক্তিফৌজের তীব্র লড়াই হয়েছে। গতকাল পাক বাহিনীর বেপরােয়া গুলি বর্ষণে আগরতলা শহরের অনেক অঞ্চলে বহু সংখ্যক অসামরিক লােক আহত হন। আগরতলা শহরে সচিবালয়, পুলিশ ব্যারাক এবং এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিসের সামনে পর্যাপ্ত গােলা এসে পড়ে। শহরের সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলের বহু লােক সন্ত্রস্ত হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন। অসামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শশাচনীয় বিপর্যয়ে জনমনে তীব্র বিক্ষোভ পরিলক্ষিত হয়। পাক বাহিনী সীমান্তের চেকপােস্টে ঘাঁটি গেড়েছে এবং পাক পতাকা তুলেছে। আখাউড়া সীমান্তে মুক্তিফৌজ ৩ জনকে হারিয়ে প্রায় তিনশত পাক ফৌজকে নিশ্চিহ্ন করে দেন।

সােনামুড়ায়
সােনামুড়া সীমান্তের বিবিরবাজারে প্রচণ্ড লড়াই চলেছে। এখানেও ভারত সীমান্তের অভ্যন্তরে বুলেট বর্ষিত হয়েছে। কদিন পূর্বে একদল পশ্চিম পাকিস্তানি সেনা স্ত্রীলােকের ছদ্মবেশে এক প্লাটুন সেনাকে আড়ালে রেখে সামনের দিকে এগুতে থাকে। মুক্তিফৌজের সন্দেহ হওয়ায় তারা সাথে সাথে এদের আক্রমণ করেন এবং প্রচুর পাক সেনাকে খতম করেন। মুক্তিফৌজের জনৈক সদস্যের মতে, এখানে প্রায় পৌনে দুশাে পাক সেনা নিহত হয়েছে।

৬ ফেব্রুয়ারি কমিটির সাহায্য
গতকাল আখাউড়া সীমান্তে দেড়শ জন মুক্তিফৌজের একটি দলকে ৬ ফেব্রুয়ারি কমিটির পক্ষে অজয়। বিশ্বাস ও অনিল সরকারের নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা টিফিনের ব্যবস্থা করেন। জানা গেল এরা দুদিন ধরে অনাহারে থেকে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সাথে এমপি বীরেন দত্তের সাক্ষাৎকার
১০ মে: শরণার্থী ও ত্রিপুরার শ্রমজীবী জনগণের ভয়াবহ দুর্দশা সম্পর্কে এমপি শ্রী বীরেন দত্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী ময়নুল হক চৌধুরীর আমন্ত্রণে তার সাথে সাক্ষাৎকারের সময় বিস্তারিত আলােচনা করেন। শ্রী দত্ত বিলােনিয়ার পশ্চিম পাহাড়ে হাজার হাজার উদ্বাস্তুর অবর্ণনীয় দুর্দশা প্রত্যক্ষ করিয়া আসিয়াছেন। বিভিন্ন স্থানে গাছতলায় পড়িয়া আছে হাজার হাজার নরনারী। তিনি সরকারের গতানুগতিক পদ্ধতি ও পক্ষপাতমূলক আচরণ সম্পর্কে হুঁশিয়ারি দিয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বলিয়াছেন- যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যে জরুরি ব্যবস্থা দরকার তাহাই এখানে অবলম্বন করিতে হইবে। বিশেষ প্লেন যােগে তাঁবু, টিন ও আবাস নির্মাণের মাল, ওষুধ, খাদ্যও আমদানি করিতে হইবে। অন্যথায় সমগ্র রাজ্যে খাদ্য সঙ্কট ও এপিডেমিক দেখা দিতে বাধ্য। চোরাকারবারীদের সম্পর্কে কংগ্রেসি সরকার একেবারে নীরব। এরা রাজ্যে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করিতেছে বলিয়া তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানান।

সূত্র: দেশের ডাক
১৪ মে, ১৯৭১
৩০ বৈশাখ, ১৩৭৮

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!