You dont have javascript enabled! Please enable it!

পঞ্চায়েত ব্যবস্থা প্রবর্তন | দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২

স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার স্বৈরাচারি সরকারের কুখ্যাত গণধিকৃত মৌলক গণতন্ত্র ব্যবস্থার অবসান ঘোষণা করছেন এবং তদস্থলে অবিলম্বে দেশের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। সোমবার বাংলাদেশ সরকারের কৃষি, স্থানীয় স্বায়ত্বশাসন ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শেখ আব্দুল আজিজ বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েটে এক সাংবাদিক সম্মেলনে উপরোক্ত তথ্য প্রকাশ করেন। মন্ত্রী জানান, চার পর্যায়ে নয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তিত হবে। ইউনিয়ন পঞ্চায়েত. জেলা বোর্ড, পৌরসভা (মিউনিসিপ্যাল কমিটি) ও শহর কমিটি। শেখ আব্দুল আজিজ আরও জানান যে, সরকার কর্তৃক মনোনীত প্রশাসকগণ স্থানীয় স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাসমূহ পরিচালনা করবেন। স্থানীয় লোকদের মধ্যে হতে সরকার উপরোক্ত প্রশাসক মনোনয়ন করবেন। সরকার কর্তৃক নয়া নীতি ও কর্মসূচি ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত উপরোক্ত ব্যবস্থা চালু থাকবে। এক প্রশ্নের জবাবে শেখ আজিজ বলেন, মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থা বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে যাবতীয় বি.ডি ট্যাক্স বাতিল করা হবে। কৃষিমন্ত্রী শেখ আব্দুল আজিজ বলেন, চাষাবাদ পরিপূর্ণভাবে চালু করার জন্য বাংলাদেশে ৩ লক্ষ গরুর প্রয়োজন হবে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের গবাদি পশু হত্যা করে প্রায় শেষ করে দিয়েছে। তিনি জানান, বাংলদেশ সরকার গরু সরবরাহের জন্য ভারত সরকারের নিকট অনুরোধ জানিয়েছে।
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহের আবদেন : কৃষিমন্ত্রী বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থার একটি করুণ চিত্র সাংবাদিকদের নিকট তুলে ধরেন। তিনি বিশ্বের বন্ধুরাষ্ট্র সমূহের নিকট ডিজেল তেল, সর ইত্যাদি সরবরাহ ও অন্যান্য সাহায্য দানের জন্য আবেদন জানান। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে ৮৫ লক্ষ গ্যালন ডিজেল তেলের প্রয়োজন। ভারত সরকার ১১ লক্ষ গ্যালন ডিজেল সরবরাহ করতে সম্মত হয়েছে। তিনি আরও জানান চলতি মৌসুমে ৮৫ হাজার পাওয়ার পাম্পের প্রয়োজন। তদস্থলে দেশে এখন ২৫ হা‌‌‌জার পাওয়া পাম্প রয়েছে।

মৎস্য চাষ : কৃষিমন্ত্রী বলেন, হানাদার পাকিস্তান বাহিনী বাংলাদেশের মাছের চাষ প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা জেলেদের নৌকা ও বাড়িঘর পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে। জেলেদেরও অনেকে পাকিস্তান বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে কিংবা অন্যরা প্রাণের ভয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেছে। তাদের পুনর্বাসনের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন।
বনসম্পদ : শেখ আজিজ বলেন, সাবেক পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের বনসম্পদ একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। উপরোক্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে সরকার বন হতে কাঠ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে। কেবল নিউজপ্রিন্ট মিল, ম্যাচ ফ্যাক্টরী ও কাগজের মিলগুলিকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের জন্য কাঠ আহরণ করতে অনুমতি দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। ৪৬

Unicoded by Nizam Ali
Ref:
দৈনিক ইত্তেফাক, ১৭ জানুয়ারি ১৯৭২
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২ অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, pp 46-47

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!