বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের কমিটিতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ
১৯ জুন ১৯৭৫
বঙ্গভবন, ঢাকা
… আজকে প্রথম দিন আমরা বসেছি সকলের সাথে দেখাশোনা করবার জন্য, যাকে বলা হয় গেট টুগেদার। যাতে আমরা মেম্বার যারা রয়েছি, সকলে একসাথে বসতে চাই, সকলকে যেন চেনা যায়, আলোচনা করা যায় এবং জানা যায়, কি অবস্থা। শিগগিরই এসেম্বলি সেশন হবে। বাজেট সেশন আগস্ট মাসে সেন্ট্রাল কমিটি বৈঠক বসবে। একদিন দু’দিনের নয়, দরকার হলে পাঁচ সাত দিনের জন্য বসবে। এবং সেই সেন্ট্রাল কমিটির মিটিংয়ে বিভিন্ন এজেন্ডা দেওয়া হবে। সেই এজেন্ডা অনুযায়ী কনফারেন্সকে ভাগ করে কতকগুলো সাব-কমিটি বা কমিশন করে দেওয়া হবে। বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট এবং বাইরের কাউকে যদি দরকার হয় তাদের নিয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে একটি প্রপোজাল সাবমিট হবে কনফারেন্সের কাছে। যেমন ফুড, এগ্রিকালচারাল, ইন্ডাস্ট্রি, ফ্লাড কন্ট্রোল, এডুকেশন ইত্যাদি। বিভিন্ন সাবজেক্টের সাব কমিটি করে তাদের কাছে ভার দেওয়া হবে। রেসপেক্টিভ মিনিস্টার সেখানে থাকবেন। সরকারি কর্মচারীরা থাকবেন। যদি দরকার হয়, বাহির থেকে যারা আমাদের কমিটি মেম্বার নন, কিন্তু যারা কন্ট্রিবিউট করতে পারেন, তাদের আমরা ইনভাইট করতে পারবো। সেখানে বসে কতটুকু কি করা হয়েছে, কতটা ভুল হয়েছে, কি ক্রটি হয়েছে বা কি করলে আমরা দেশের ইমপ্রুভমেন্ট করতে পারবো, সে সম্পর্কে সাজেশন দিল তখন সেন্ট্রাল কমিটি থেকে। এটা প্রস্তাব করে গভর্ণমেন্ট সেই অনুযায়ী তাদের কাজকর্ম করবেন। এই আমাদের ইচ্ছা। আগষ্ট মাসে একটা ফুল এজেন্ডা নিয়ে কাজ শুরু করা।
আপনাদের কাছে বক্তৃতা করে বোঝানোর দরকার নাই। তবে এটুকু বলতে পারি, কেন আমরা এ নতুন পদ্ধতি সৃষ্টি করলাম আর কেনই বা আমরা একে বিপ্লব বললাম। সেদিন ডক্টর এনামুল হক সাহেবের একটা লেখা পড়লাম। তিনি বলেছেন যে, বাংলাদেশ যে স্বাধীন হয় নাই, সেকথা সত্য নয়। বাংলাদেশ অনেকবার স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু স্বাধীনতা রাখতে পারে নাই। বিদেশীদের ডেকে আনতে হয়েছে, ডেকে এনেছে। এই বাঙালিরাই। কথাটা আমার মনে লাগল। কিন্তু আমি তো তাঁর মতো শিক্ষিত নই। তিনি তো আমার চেয়ে অনেক গুণীজন, গুরুজন। তাকে আজো ভক্তি করি আমি। আমি যা চিন্তা করতাম বা ইতিহাসে যা পড়েছি, তা তার কথা পড়ে আমি কনফার্ম করলাম। আজকে স্বাধীনতার পরে বিনা কারণে এইভাবে সিস্টেম চেঞ্জ করি নাই। বাংলাদেশে নির্বাচন দিয়েই ৯৭ পারসেন্ট সীটস, আউট অব থ্রি হানড্রেড ফিফটিন, থ্রি হানড্রেড সেভেন সীটস আমাদের পার্টি আওয়ামী লীগের ছিল। যদি তার পরেও ইলেকশন দিতাম, এখনো বিশ্বাস করি দুই এক পারসেন্ট বাদ যেতেও পারে, কিন্তু নব্বই পার্সেন্টের কম পাবে না আমাদের পাটি। সেজন্য এই সিস্টেম ক্ষমতাচ্যুত হবার সম্ভাবনা আমাদের অনেক দিন ছিল না, যদি ক্ষমতায় থাকতে চাইতাম। আর ক্ষমতার জন্য রাজনীতি যদি করতাম, তাহলে আমরা অনেকবারই ক্ষমতায় আসতে পারতাম। যদি নিগোশিয়েসন বা আপোসে আমরা ক্ষমতা চাইতাম, তাহলে কেন আমরা এই পরিবর্তন করলাম।
আজ দুনিয়ার দিকে আমাদের চাইতে হবে। স্বাধীনতার পর আমাদের কি দশা হলো। ধ্বংসস্তুপের মধ্যে আমরা স্বাধীনতা পেলাম-এবং রক্তের বিনিময়ে পেলাম। সাড়ে ৭ কোটি লোক, ৫৪ হাজার স্কোয়ার মাইল সম্পদ বলতে কোন পর্দাথ আমাদের ছিল না। সমস্ত কিছু ধ্বংস। আমরা কিন্তু চেষ্টা করলাম যে, ঠিক আছে। একদম যাকে বলে ফ্রি বক্তৃতা করো। বাধা নাই, ফ্রি হ্যান্ড। আমাদের অনেক পুরানো নেতা আছেন, আমার মনে পড়ে না, দশ-বিশ বছরের মধ্যে তাদের কেউ পল্টন ময়দানে দাঁড়িয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে গালাগালি না করে ফিরে গেছেন। এ আমার জানা নাই বিশ-পঁচিশ বছরের মধ্যে। কিন্তু তাও বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে বললাম, যদি কিছু ভালো কথা বলতে চাও বলো। যদি দেশের মঙ্গল হয়, বলো। কিন্তু দেখতে পেলাম কি? আমরা যখন এই পন্থায় এগুতে শুরু করলাম, বিদেশী চক্র এ দেশে মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো। তারা এ দেশের স্বাধীনতা বানচাল করার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করল এবং ফ্রি স্টাইল শুরু হয়ে গেল। হুড়হুড় করে বাংলাদেশে অর্থ আসতে আরম্ভ করলো। দেশের মধ্যে শুরু হলো ধ্বংস, একটা ধ্বংসাত্বক কার্যকলাপ।
এ ছাড়াও আরো দেখা গেল, যাদের আমরা এ সমস্ত ভোগ করতে দিলাম, তারা রাতের অন্ধকারে মানুষ হত্যা করতে আরম্ভ করলো। আমরা বলেছি, বাবা, ঠিক আছে, পাঁচ বছর পরে ইলেকশন হবে, ইলেকশন করো, ইলেকশন যদি ডিফিট খাই, আর একজন এসে বসবে। হাইকোর্টেও একজন এক্স-জাজ আমাদের ইদরিস সাহেবকে ইলেকশন কমিশনার করা হয়েছিল। তাকে আমি ইলেকশনের ব্যাপারে বলেছি, কোন কথা নাই। যা ভালো বুঝবেন, তাই করবেন আপনি, ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন হবে। তারপরও যারা ইলেকটেড মেম্বার তারা পার্লামেন্ট, রাতের অন্ধকারে তাদের হত্যা করা হলো। যারা স্বাধীনতা সংগ্রামে যুদ্ধ করেছেন, দেশত্যাগ করেছেন, ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। যাদের সম্পত্তি, তাদের রাতের অন্ধকারে হত্যা করা হলো। মোট কয়েক হাজার ককে হত্যা করা হলো, যারা নিঃস্বার্থভাবে যুদ্ধ করেছে। মুক্তিবাহিনীর ছেলে, তাদেরও হত্যা করা হলো। চরম ষড়যন্ত্র। এতো অস্ত্র উদ্ধার করি, তবু অস্ত্র শেষ হয় না। এই রাজনীতির নামে হাইজ্যাক, ওই রাজনীতির নামে ডাকাতি, টেলিফোন করে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করে বা মানুষের বাড়িতে গিয়ে গহণা কেড়ে নেয়। রাজনীতির নামে, একটা ফ্রি স্টাইল শুরু হয়ে গেল। নব্য কিছুদিন আগে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত একটা দেশে এই অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। পিপল-এর মধ্যে যে ডিমরালাইজিং ইফেক্ট হয়, তার ফল খুব খারাপ হয়। আমরা জানি, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। আমরা জানি, বন্যা হয়েছে, এক কোটি লোক চলে গিয়েছিল, তারা ফিরে এসেছে। তাদের রিহ্যাবিলিটেশন দরকার। ওয়ার্লড ইনফ্লেশন, যা আমার হাতে আপনার হাতে নয়। জিনিসের দাম বেড়ে গেল। ড্রাউট হলো বাংলাদেশে, এই সাউথ-ইস্ট এশিয়াতে ফ্লাড এলো। সাড়ে ৭ কোটি লোক, ২০০ বছরের গোলামি, অর্থনৈতিক কাঠামো নাই। সেন্ট্রাল গভর্ণমেন্ট বলে কোন গভর্ণমেন্ট নাই, সব কিছু রয়েছে ইসলামাবাদে। একটা প্রভিন্সিয়াল গভর্ণমেন্ট ছিল, (অস্পষ্ট) তাও নয় মাসে আর্মি কন্ট্রোলে নিয়ে নিলো। তাদের স্ট্রাকচার ধ্বংস করে দিলো। নাই একটা ফরেন অফিস, নাই একটা প্ল্যানিং অফিস, নাই একটা কোন কিছু। আমাদের সব কিছু আরম্ভ করতে হয়েছিল গোড়া থেকে। এই সুযোগ আমাদের যারা স্বাধীনতার নামে অনেক চেষ্টা করেছিল, নিজেদের একটা বেস করা যায় কিনা, ভবিষ্যতে তাদের এ দেশে সরকার চালাতে পারে কিনা, তারা তার ফিকির খুজতে লাগলো। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে এবং আগে যে পলিসি আমরা নিয়েছি, বৈদেশিক নীতি, বাংলাদেশের মানুষ, শিক্ষিত সমাজ এবং দুনিয়া এটাকে এ্যাপ্রিশিয়েট করেছে।
আমরা নন-এলায়েড, আমরা ইন্ডিপেন্ডেট পলিসিতে বিশ্বাস করি, আমরা পিসফুল কো-এক্সিসটেনস এ বিশ্বাস করি। আমরা দুনিয়ার নির্যাতিত পিপলের সাথে আছি, আমরা কারো সাথে শত্রুতা করতে চাই না। আমরা সকলের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই। আমরা আন্ডার ডেভেলপড কান্ট্রি, আমরা বিশ্বে শান্তি চাই। আমরা কারো ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। আমাদের ব্যাপারে কেউ হস্তক্ষেপ করুক এটা আমরা চাই না। আমরা দেশকে গড়তে চাই, আমরা সকলের শান্তি চাই, আমাদের লোক বাঁচতে চায়। এই পলিসি সকলেই, প্রায় whole world পছন্দ করলো। আমার দেশবাসী এতে সমর্থন জানাল। আমরা মনে করি, আমাদের বৈদেশিক নীতি সম্পূর্ণরূপে সাক্সেসফুল হয়েছে। আজ আমরা নন-এলায়েনড কান্ট্রিতে আছি, আজ আমরা ইসলামিক সামিট-এ আছি, আজ আমরা কমনওয়েলথ এ আছি, আজ আমরা ইউ.এন.ও তে আছি। ইউ.এন.ও’র চাটারে বিশ্বাস করি। আমরা সকলের সাথে বন্ধ করতে চাই। ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্সএ আমাদের প্রয়োজন নাই। এতে আমাদের কোন স্বার্থ নাই। যেখানে কোন অপ্রেসড ইন্টারন্যাশনাল পিপল থাকবে, আমরা তাদের মোরাল সমর্থন দিতে পারি এবং দেব। যেখানেই থাকুক না কেন আমরা দেব। আমরাও অপ্রেসড পিপল। আমরাও যুগ যুগ ধরে এটার সাথে পরিচিত। আমরাও মার খেয়েছি। দুনিয়ার শোষকগোষ্ঠী ইম্পিরিয়ালিস্ট পাওয়ার আমাদের সম্পদ লুট করে নিয়েছে। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আমাদের স্বজন হারানো অর্থ কি? এর অর্থ হলো, আমাদের অর্থনীতির মালিক আমরা এবং আমাদের দেশ সেই সম্পদ ভোগ করবে। পাকিস্তানের সাথে বন্ধত করবার জন্য আমরা চেষ্টা করেছি। আমরা এতো রক্ত দিয়েছি, এতো আমরা আঘাত পেয়েছি, এতো আমাদের ইনটেলেকচুয়ালকে হত্যা করা হয়েছে, মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, আমাদেও রাস্তাঘাট ধ্বংস করা হয়েছে, তবুও। আমরা বলেছি, আমরা সকলের সাথে বন্ধুত্ব চাই। ১৯৫ জন যারা কমিটেড ক্রাইম এগেইনস্ট হিউম্যানিটি, তাদের পর্যন্ত আমরা মাফ কর দিলাম। উদ্দেশ্য এই ছিল যে, আমরা এ দেশে সাউথ-ইস্ট এশিয়া, পারটিকুলারলি সাব-কন্টিনেন্টে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে এ দেশে ডেভেলপমেন্টের কাজ করবো। আমাদের এটেনশান থাকবে মানুষের মঙ্গল করা, দেশকে গড়া। কিন্তু পাকিস্তান, দুঃখের বিষয়, একটা পয়সা পর্যন্ত দিলো না। আমরা ছিলাম ৫৬ পারসেন্ট পপুলেশন, কেন্দ্রীয় সরকারের কোন সম্পদ আমাদের ছিল না। ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ আমাদের দিল না। গোন্ড রিজার্ভ আমাদের দিলো না। আমাদের কোন একটা জাহাজ দিলো না। কোন কিছুই তারা আমাদের দিল না। আমরা আমাদের দিক দিয়ে শত চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তারা এগিয়ে এলো না। দ্যাটস অল রাইট। মাটি আছে, মানুষ আছে, দেশ আছে। ইনশাআল্লাহ, কষ্ট হয়েছে আমার মানুষের, না খেয়ে সত্য কথা, কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে যে সম্পদ আছে, যদি গড়তে পারি, অনেস্টলি কাজ করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশের কষ্ট একদিন দুর হয়ে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা চেষ্টা করছিলাম, আমরা এখনো পর্যন্ত চেষ্টা করছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তারা এগুচ্ছে না। কারো সঙ্গে দুশমনি নাই। চায়না রিকগনিশন দিলো না। কিন্তু আমার সাথে বন্ধুত্ব আছে রাশিয়ার, আমার বন্ধুত্ব আছে ভারতবর্ষের সাথে, আমার বন্ধুত্ব আমেরিকার সাথে। এ বন্ধুত্ব সকলের সাথে চাই। আমরা কারো সাথে গোলমাল করতে চাই না। কারণ, আমি আমার দেশকে গড়তে চাই। এই পলিসিতে আজ পর্যন্ত আমরা এগিয়ে চলেছি। কিন্তু দেশের মধ্যে এজেন্সি শুরু হয়ে গেল। বহুদিন রাজনীতি করেছি। ১৮ বছর বয়স থেকে। তখন বোধহয় ১৯৩৮ সাল। তারপর চোঙ্গা মুখে দিয়ে রাজনীতি করেছি, রাস্তায় হেঁটেছি, পায়ে হেঁটেছি, ফুটপাতে ঘুমিয়েছি। সেই রাজনীতি থেকে আজ পর্যন্ত এসেছি। আমি বলতে চাই না যে, আমি সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছি। সাধারণ মানুষ থেকে আমি চোঙ্গা ফুকেছি, সাইকেলে ঘুরেছি, গ্রামে গ্রামে ঘুরে রাজনীতি করেছি। আমি জানি, একটা খবরের কাগজ চলতে পারে না, যদি অ্যাডভারটাইজমেন্ট না পায়। বছরের পর বছর এই টাকা কোন পলিটিক্যাল পার্টি ব্যয় করতে পারে বলে আমার জানা নাই। আর আমি হলাম বিগেষ্ট পলিটিক্যাল লিডার। আমি দেশে একটা পার্টি গড়ে তুলেছি এবং চালিয়েছি, যেটা নাম্বার ওয়ান পলিটিক্যাল পার্টি, আমি একটি ডেইলি কাগজ চালাতে পারিনা। বরং মানিক ভাইয়ের এবিলটি এবং এক্সপেরিয়েন্স ছিল, ইত্তেফাক কাগজ চালাতেন তিনি। তা থেকে আমাদের সমর্থন করতেন, অথচ এই তিন বছরের মধ্যে দেখা গেল, এমন কাগজও মিললো, যে কাগজ বছরে এক ইঞ্চি অ্যাডভারটাইজমেন্ট পায় নাই। কিন্তু একটা কাগজ করতে মাসে কমপক্ষে এক লাখ- সোয়া লাখ- দেড় লাখ টাকা খরচ হয়। আজকে এই টাকা তারা কোথা থেকে পায়? কে দেয় তাদের এই টাকা, কোথা থেকে আসে? তারপর (অস্পষ্ট) বলতে যে পদার্থ বাংলাদেশে আছে, তাদের এতো টাকা আছে বলে আমার জানা নেই। ছিল কিনা, তাও জানি না। এখন কিছু লোক নতুন টাকার মানুষ হয়েছে। কিন্তু তো আমরা নিয়ে নিলাম। দেখা গেল যে, বিদেশের কিছু কিছু জায়গা থেকে পয়সা পেয়ে তারা দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, গোলমাল সৃষ্টি করে।
দ্বিতীয় কথা হলো, আমরা এই সিস্টেম ইন্ট্রোডিউস করলাম কেন? এই যে আমাদের সমাজ এখানে দেখতে পাই-আমি অনেক চিন্তা করেছি, বহুদিন কারাগারে একলা বসে বসে চিন্তা করতে আমি সময় পেয়েছি, এই সব বিষয়ে যে, আমার দেশের ২০% লোক শিক্ষিত। তারমধ্যে আমরা ১০% বা ৫% লোক লেখাপড়া কিছুটা জানি। এর মধ্যে এক গ্রুপ আমরা পলিটিসিয়ান হয়ে গেলাম। এক গ্রুপ আমরা বুদ্ধিজীবী, এক গ্রুপ স্কুল টিচার, যারা এই ঘোরপ্যাচের মধ্যে আসতে চায়না। এক গ্রুপ আমরা সরকারি কর্মচারী হয়ে গেলাম। কেউ ডাক্তার হয়ে গেলাম, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে গেলাম, কেউ অমুক হয়ে গেলাম। আর কিছু সংখ্যাক লোক হয়ে গেলাম রাজনীতিবিদ। কি একচুয়াল যেটা পিপল, তাদের সহ সবাইকে একতাবদ্ধ করতে না পারলে সমাজের দুর্দিনে দেশের মঙ্গল হতে পারেনা।
সেজন্য আমরা চিন্তা করলাম, সমাজের যেখানে যিনি আছেন, তিনি বুদ্ধিজীবী হন, ডাক্তার হন, ইঞ্জিনিয়ার হন, সরকারি কর্মচারী হন, রাজনীতিবিদ হন, ল-ইয়ার হন, আর যাই হন, কারণ আমার সমাজে তো শতকরা ২০ জনের বেশি শিক্ষিত নন। এদের মধ্যে সমস্ত লোককে একতাবদ্ধ করে দেশের মঙ্গলের জন্য এগিয়ে যেতে না পারি, তবে দেশের মঙ্গল করা কষ্টকর হবে। সেজন্য নতুন সিস্টেমের কথা বহুদিন পর্যন্ত চিন্তা করেছি। আমার মনে হয়, বাংলাদেশবাসী এটাকে গ্রহণ করেছে এবং ভালোভাবে গ্রহণ করেছে।
আর একটা জিনিস আমি মার্ক করলাম। সেটা হলো এই যে, একদল বলে, আমরা পলিটিশিয়ান, একদল বলে আমরা ব্যুরোক্র্যাট। তাদের অ্যাটিচিউড হলো হাউ টু ডিস্ক্রেডিট দি পলিটিসিয়ান। পলিটিসিয়ানরা তাদের স্ট্রেংথ দেখাবার জন্য বলত যে, অল-রাইট, গেট আউট। এই নিয়ে সমস্ত দেশে একটা ভাগ-ভাগ অবস্থার আছে থাকতো। এই সন্দেহটা দূর করা দরকার। এবং দূর করে সকলেই যে দেশকে ভালোবাসে এবং মঙ্গল চায়, এটা প্রমাণ করতে হবে সমাজে যে সমস্ত গুণীজ্ঞানী লোক আছেন ও অন্য ধরণের যতো লোক আছেন তাতে নিয়ে আমার একটা পুল করা দরকার। এই পুল আমি করতে পারি, যদি আমি নত একটা সিস্টেম চালু করি এবং একটা নতুন দল সৃষ্টি করি-জাতীয় দল, যার মধ্যে কে মত, এক পথ, এক ভাব-এক হয়ে দেশকে ভালোবাসা যায়। যারা বাংলাদেশকে ভালোবাসে, তারা এসে একতাবদ্ধ হয়ে দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যেতে পারে।
আর দ্বিতীয়ত, পয়সা কড়ি খরচ করে অন্য ধরনের রাজনীতি করা যায়। কিন্তু আমি যেটা বলেছি শোষিতের গণতন্ত্র, কেন বলেছি? শোষিতের গণতন্ত্র এ জন্য বলেছি যে, আজকে বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে মানুষ। বঙ্গবন্ধু বলে দিয়েছে, অল রাইট, যাও তুমি। যেয়ে কনটেস্ট করো। আমি যেয়ে কিছু বক্তৃতা করে দিয়ে এলাম, যাও পছন্দ হয় না। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছেন, আর করবো কি, ভোটটা দিয়েই দিলাম। এ-ও হয়েছে অনেক জায়গায় হয়। কাজেই সেজন্য সিস্টেম চেঞ্জ করে বলেছি যে, কনস্টিটিউয়েন্সিতে চারজন কি তিনজন কি দুইজন লোক আছে, তাদের সম্বন্ধে সকলকে বলে দেওয়া হলো, এই তিনজন চারজন পার্টির লোক আছে তাদের মধ্যে যাকে আপনারা পছন্দ করেন, ভোট দিন। ফলে জনগণ সুযোগ পেলো এ্যাকডিং টু দেয়ার ওন চয়েস ভালো লোককে পাঠাবার জন্যে। না হলে আমরা অনেক সময় জিন্দাবাদ মুর্দাবাদ দিয়ে পাস করে নিয়ে আসি। তাতে দেখা গেছে যে, সত্যিকারের ভালো লোক অনেক সময় নাও আসতে পারে। কিন্তু এতে সত্যিকারের ভালো লোক আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সেজন্য এই সিস্টেম করা হয়েছে।
তৃতীয়ত, জাতীয় ঐক্য, যেটা বলেছি আমি, জাতীয় ঐক্য আমরা করতে পারবো। যারা দেশকে ভালোবাসে না, দেশের সাথে বেঈমানি করছিল, তাদেও সকলকে আমরা ক্ষমা করলাম। স্বাধীনতার সাথে যারা বেঈমানি করলো, রাজাকার হলো, তাদেরও আমার ক্ষমা করে দিলাম। অন্য দেশে বিপ্লবের পরে এভাবে ক্ষমা করে নাই। একেবারে নির্মূল করে দিয়েছে। কিন্তু আমরা ক্ষমা করলাম। বললাম যে, ঠিক আছে, তওবা করো, আল্লাহ তোমাদের ঈমান দিক। তোমার দেশের কাজ করো। কিন্তু চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। তাদের মধ্যে একটা গ্রুপ সেই শক্র যে শক্র আমাদের এখানে ম্যাসাকার করলো, তাদের মাধ্যমে লন্ডনে বসে অর্থ খরচ করে বাংলাদেশের মধ্যে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে আরম্ভ করলো। তাদের কি অধিকার আছে বাংলাদেশে রাজনীতি করবার? ক্ষমা করতে পারি। প্রভিশন হবে ৬০ টি জেলার। প্রত্যেক জেলার জন্য একজন গভর্ণর থাকবেন। সেখানে ডিষ্ট্রিক্ট ম্যাজিষ্ট্রেট থাকবেন। তার অধীনে এস.পি. থাকবেন। দলের প্রতিনিধিগণ থাকবেন, সংসদ সদস্যরা থাকবেন, জনগনের প্রতিনিধিরা থাকবেন। কাউন্সিলে সরকারী কর্মচারীরাও থাকবেন। প্রত্যেক জেলায় অর্থাৎ বর্তমানে মহকুমাসমূহে একটি করে এ্যাডমিনিসট্রেটিভ থাকবে এবং তার একজন গভর্নর থাকবেন। তিনি স্থানীয়ভাবে শাসন ব্যবস্থা চালাবেন।
আসন ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। জেলা গভর্ণরের কাছে যাবে আমার এক ওয়ার্কার্স প্রোগ্রামের টাকা। তার কাছে যাবে আমার খাদ্য সামগ্রী। তার কাছে যাবে আমার ১ম রিলিফ, লোন, বিল ও সেচ প্রকল্পের টাকা। কেন্দ্রীয় প্রশাসনের ডাইরেক্ট কন্ট্রোলে অ্যাডামনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পরিচালনা করবে। তবে, ব্রিটিশ আমলারা বলে গেছেন, সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট থাকতে হবে, এস.ডি, ও সাহেব যা করবেন, সেটাই হবে ফাইনাল কথা, সি.ও. শাসন করবে থানায় বসে, সেই অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রাখতে হবে। এতে দেশের মঙ্গল হবে না। কারণ আমি যে টাকা দেব একটা খানায়, সেই টাকা দেব সি.ও. সাহেবকে। এনি পলিটিক্যাল ওয়ার্কার ইজ বেটার দ্যান এনি সি ও, ইফ দি পলিটিক্যাল ওয়ার্কার ইজ সিনসিয়ার। অন্যথায় ক্যাশ টাকা সেখান থেকে লুট হয়ে যাবে। আমি অর্ডার দিয়েছি, আজকে অর্ডার হয়ে গেছে। ১৫ জুলাই থেকে এই ৬০ জন গভর্ণরকে ট্রেনিং দেওয়া হবে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিস্ট্রিক্ট হয়ে যাবে। এক বছরের মধ্যে থানা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিল করতে হবে। সেখানে বাকশালের রিপ্রেজেন্টেটিভ থাকবে, কৃষকের রিপ্রেজেন্টেটিভ থাকবে, শ্রমিকের থাকবে, যুবকের থাকবে, মহিলাদের খাকবে। একজন গভর্ণর থাকবেন, যিনি হবেন হেড অব এডমিনিস্ট্রেশন। সেখানে মেম্বার অব পার্লামেন্ট গভর্ণর হতে পারেন। সেখানে পার্লামেন্টের মেম্বার নন, এমন পলিটিক্যাল ওয়ার্কার হতে পারেন। সেখানে সরকারি কর্মচারী যাকে বিশ্বাস করি তিনিও হতে পারেন। আবার নাক উচু করা চলবে না। পাটির মেম্বার হবার পরে দে উইল টেক রেসপনসিবিলিটিজ অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।।
এই তো গেল এক দিক, তবে আমি কাজ বাড়িয়ে দিয়েছি আইন মন্ত্রীর। আমি অর্ডারগুলো করে দিয়েছি, কিন্তু তার জান শেষ। মানে এইগুলো করতে তার জান শেষ হয়ে যাবে। বুঝেছি, শুনে মুখ কালো করে ফেলেছেন। অর্ডার আমি দিয়েছি, আইন তার বদলাতে হবে আইন-টাইন আমি বুঝি না। আমি বলেছি, কাজ করে জান, যা কিছু দরকার হয়। এই এডমিনিস্ট্রেশন, তারপর আমাদের সেক্রেটারিয়েট, সব ভাঙতে হবে। এসব চলতে পারে না আই এ্যাম গোয়িং ফর দ্যাট। টাকা নাই, পয়সা নই, খাবার নাই, এটা নাই, এটা নাই সব ভাঙ্গতে হবে। ডাবল ট্রিপল, এন্ড দ্যাট। এক এক নোট লিখে নিয়ে আসে। আমি বলেছি এস্টাবলিশমেন্টের সাহেবরা আছেন। এখান থেকে আরম্ভ করে সেকশন আফসার, তারপর ডেপুটি সেক্রেটারি, সেক্রেটারি তারপর আসে আমার কাছে এইটুকু নোট, ঐটুকু ফাঁক তা সত্বেও এসবের প্রয়োজন নাই, সোজাসুজি কাম চালান। কর্পোরেশন করেছি অলরেডি দুটি কর্পোরেশন করে ফেলেছি। এভরি কর্পোরেশন ডাইরেক্টলি আন্ডার দি মিনিস্টার থাকবে। লেট দি মিনিস্টার গেট ওয়ার্ক ফ্রম জয়েন্ট সেক্রেটারি। বৃটিশ আমলে সেই ঘুণে ধরা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সিস্টেম দিয়ে বাংলার মানুষের মঙ্গল হতে পারে না। ইট মাস্ট গো। সেই জন্য অমূল পরিবর্তন দরকার হয়ে পড়েছে। দ্যাট ইজ অলসো এ রেভল্যুশন। আজকে এই যে নতুন এবং পুরানো যে সমস্ত সিস্টেমে আমাদের দেশ চলছে, এর জন্য আমাদের আত্বসমালোচনার প্রয়োজন আছে। আত্মসমালোচনা না করলে আত্মশুদ্ধি করা যায় না। আমরা ভুল করেছিলাম। আমাদের বলতে হয় যে, ভুল করেছি। আমি যদি ভুল করে না শিখি, ভুল করে শিখবো না, সে জন্য আমি সবই ভুল করলে আর সকলই খারাপ কাজ করবে, তা হতে পারে না। আমি ভুল নিশ্চই করবো, আমি ফেরেস্তা নই, শয়তানও নই। আমি মানুষ, আমি ভুল করবোই। আমি ভুল করলে আমার মনে থাকতে হবে, আই ক্যান রেকটিফাই মাইসেলফ। আমি যদি রেকটিফাই করতে পারি, সেখানেই আমার বাহাদুরি আর যদি গো ধরে বসে থাকি যে, না, আমি যেটা করেছি, সেটাই ভালো, দ্যাট ক্যানট হিউম্যান বিং। ফেরেস্তা হইনি যে সব কিছু ভালো হবে। হতে পারে, ভালো হতে পারে। উই উইল রেকটিফাই ইট। এই সিস্টেম ইনট্রোডিউস করে যদি দেখা যায় যে, খারাপ হচ্ছে, অল রাইট, কেরটিফাই ইট। কেননা আমার মানুষকে বাঁচাতে হবে। আমার বাংলাদেশে শোষণহীন সমাজ গড়তে হবে। আমরা নতুন ল্যান্ড সিস্টেম এ আসতে চাচ্ছি। আমরা কো-অপারেটিভে আসতে চাচ্ছি। দিজ ইউনিয়ন কাউন্সিল ওলড বৃটিশ ইউনিয়ন কাউন্সিল। যেখানে যা দেওয়া হয়, অর্ধেক থাকে না, সাথে সাথে সাফ। সেজন্য একমাত্র উপায় আছে যে আমরা যে আজকে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ এবং থানা কাউন্সিলের মাধ্যমে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে দেশের মঙ্গল হতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। এজন্য ডেডিকেটেড ওয়ার্কারের দরকার। এটা উইদাউট ডেডিকেটেড ওয়ার্কার হতে পারে না। সেই জন্য আজকে আমি চাচ্ছি, আর্মির মধ্যে হোক, নেভির মধ্যে হোক, এয়ারফোর্সের মধ্যে হোক, বিডিআর হোক, রক্ষীবাহিনী হোক, পুলিশ হোক, সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন হোক, পলিটিসিয়ান হোক, যেখানেই হোক, ভালো লোক যেখানে আছে, তাদের এক জায়গায় করে কাজে লাগাতে হবে। যাও, ওখানে বসো, কাজ করে নিয়ে এসো। আমার তো দরকার নাই, খালি খালি বসে আর্মির অতো পয়সা খরচ করবার তো দরকার নাই। আই ওয়ান্ট মাই আর্মি এ পিপলস আর্মি। আই ডু নট ওয়ান্ট মাই আর্মি টু ফাইট এগিনিস্ট এনিবডি, বাট আই ওয়ান্ট মাই আর্মি টু ফাইট এগেইনস্ট এনিমি। বাট আই ওয়ান্ট মাই আর্মি ডিপেন্ড মাইসেলফ এন্ড এ্যাট দি সেম টাইম টু ওয়ার্ক।
আর একটা ফ্যাশন আছে আমাদের, এই কাজটা তো ফুড ডিপার্টমেন্টের এটা কালচারের, আমার তো না, এটা তো ইরিগেশনের, আমার তো না। ডিস্টিক ভশনে সব জায়গাতে হয় কি? একজন বড় অফিসার। আমরা যখন কোথাও যাবো দেখব যে রাস্তায় একটা ইট পড়ে আছে, ঐটা আমার ডিপার্টমেন্টের না তা বলে পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম। হোয়াট ইজ দিস? দিস মেন্টালিটি মাস্ট বি চেঞ্জড। প্রত্যেকটি লোক, প্রত্যেকটি কাজই আমার, মাটি কাটা আমার কাজ, ফ্যাক্টরিও আমার কাজ, রাস্তা বানানোও আমার কাজ। আমি একটা হাই অফিসিয়াল, আমি একটা পলিটিসিয়ান, আমি একটা পলিটিক্যাল ওয়ার্কার, আমি একটা এম.পি, আমি দেশের একটা কর্মচারী, একজন পুলিশ অফিসার, আই হ্যাভ মাই রেসপনসিবিলিটি। এখন চুরি হচ্ছে, এখানে অন্যায় হচ্ছে, এখানে খারাপ হচ্ছে, এটা বলার অধিকার আমার থাকবে। দেখার অধিকার থাকবে সেইজন্য আজকে যদি পলিটিক্যাল অর্গানইজেশন স্ট্রং না করা হয়-ভিলেজ লেভেল থেকে আরম্ভ করে শেষ পর্যন্ত যাকে ওয়াচ ডগ বলা হয়, তা যদি না থাকে, তাহলে দেশের মঙ্গল করা যায় না শুধু সরকারি কর্মচারীর ওপর নির্ভর করে। দেয়ার মাস্ট বি এ ব্যালেন্স, দেয়ার মাস্ট বি পিপলস মবিলাইজেশন। আমাদের হোল কান্ট্রিকে মবিলাইজ করতে হবে ফর ডেফিনিট পারপাস। দেখুন, বাংলাদেশের কৃষকও পিছিয়ে নাই। আমি সার দিতে পারি নাই। যা সার দিয়েছি তার থার্টি পারসেন্ট চুরি হয়ে গেছে। স্বীকার করেন? আমি স্বীকার করি। আমি মিথ্যা কথা বলতে পারবো না। মিথ্যা বলে একদিনও হারাম এ দেশের প্রেসিডেন্ট থাকবো না। আমার যে সার আমি দিয়েছি, তার কমপক্ষে থার্টি পারসেন্ট ব্ল্যাক মাকেটিং এ চুরি হয়ে গেছে। আমি যে ফুড দিই, তার কুড়ি পারসেন্ট চুরি হয়ে যায়। আমি যে মাল পাঠাই গ্রামে গ্রামে তার বিশ পারসেন্ট পচিশ পারসেন্ট চুরি হয়ে যায় সব চুরি হয়ে যায়। হুহট আমি তো হুহট পয়দা করি না, খুব কমই করি, তবু কোন বাজারে হুইট পাওয়া যায় না। গভর্ণমেন্ট গোডাইনের হুহট? সার তো আমি ওপেন মার্কেটে বিক্রি করি না, তবু কোন বাজারে সার পাওয়া যায় না? লেট আস ডিসকাস দিস ম্যাটার। দেয়ার শ্যাল বি এ ফ্রি ডিসকাশন। আমাদের একটি জিনিস মনে রাখা দরকার যে লোক হাসতে হাসতে জীবনের মায়া কাটিয়ে ফাসি পর্যন্ত যেতে পারে, যে জানে গুলি হয়ে এক ঘন্টা পর মারা যেতে পারে, সেই মানুষ ক্ষমতার জন্য মিথ্যা কথা বলবে না। এটা আপনাদেও জেনে রাখা উচিৎ। এইগুলো কি করে আপনারা করবেন। এই এগ্রিকালচার আমার নয় – চুরি হোক, এই ফুড আমার নয়, চুরি হচ্ছে হোক; এটা আমার নয়, চুরি হচ্ছে হোক – এসব চলতে পারে না। নেশন মাস্ট বি ইউনাইটেড এগিনিস্ট করাপশন। পাবলিক ওপিনিয়ন মবিলাইজ না করলে শুধু আইন দিয়ে করাপশন বন্ধ করা যাবে না এবং সেই সাথ সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে। ঘুণে ধরা সিস্টেম দিয়ে করাপশন বন্ধ করা যায় না।
এই সিস্টেমই হলো করাপশনের পয়দা। এই সিস্টেম করাপশন পয়দা করে এর করাপশন চলে। সেই জন্য আমার দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক। ভেঙ্গে ফেলে সব নতুন করে গড়তে হবে। নিউ সিস্টেম করতে হবে। সেই জন্য আমি কো-অপারেটিভ-এ গিয়েছি। আমি জাম্প করতে চাই না। আমি জাম্প করবার মানুষ নই। আমি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখি ১৯৪৭-৪৮ সালে। কিন্তু আমি ২৭ বছর পর্যন্ত স্টেপ বাই স্টেপ মুভ করেছি। আমি জানি, এদের সাথে মানুষ থাকতে পারে না। আমি ইম্পেশেন্ট হই না। আমি এডভেঞ্চারিস্ট নই। আমি খোদাকে হাজের-নাজের জেনে কাজ করি। চুপি চুপি আস্তে আস্তে মুভ করি। সব কিছু নিয়ে। সেই জন্য আমি বলে দিয়েছি ৬০টা ৭৫কি ১০০টা কো-অপারেটিভ করাবো। এই কো-অপারেটিভে যদি দরকার হয়, সেন্ট্রাল কমিটির এক-একজন মেম্বার এক-একটা চার্জে থাকবেন। লেট আস স্টার্ট আওয়ার সেলভস। ১১৫ জন সেন্ট্রাল কমিটির মেম্বার আছে। এর মধ্যে ১০০কি ৭০ জনকে এক-একটা কো-অপারেটিভের চার্জ দিয়ে দেব সুপারভাইজিং অফিসার করে। লেট আস স্টার্ট। ওয়ান্স ইউ আর সাকসেসফুল এবাউট দিস মালটিপারপাস সোসাইটি, দেশের মানুষকে একতাবদ্ধ করা যাবে।
বদমায়েশ একদল লোক-জমি সব শেখ সাহেব নিয়ে যাবে বলে তারা প্রপাগান্ডা করে। জমি নেবো না। তোমরা চেষ্টা করবে, একসাথে ফসল উৎপাদন করবে, তোমার শেয়ার তুমি নেবে। তবু এগিনিস্টে প্রপাগান্ডা করে। জমি নেবো না, জমি থাকবে। কিন্তু জমির একটা লিমিট আছে তোমাদের রাখার। আইন হয়েছে, ১০০ বিঘার বেশি রাখতে পারবে না। সেটা আমরা ফলো করবার চেষ্টা করবো এবং আস্তে আস্তে যদি ফ্লাড বন্ধ করতে পারি, সেচের ব্যবস্থা করতে পারি, ফার্টিলাইজার দিতে পারি, নিশ্চয়ই আমরা চিন্তা করবো, আরো কত দুর কি করতে পারি। কেননা, আমার দেশের জমির মধ্যে পার্থক্য আছে। এখন আমি যদি সুনামগঞ্জের জমি যেখানে তিন বছর বন্যা হয়, এক বছর ফসল হয় নর্থ বেঙ্গলের জমি আর বরিশালের জমি, চিটাগাং হিল ট্রাকটের জমি, আর অন্য সব জমি এক পর্যায়ে দেখতে চাই তাহলে অসুবিধা হবে। আমার স্টাডির প্রয়োজন আছে। কোন জায়গায় কতো পরিমাণ ফসল হতে পারে। আজকে কো-অপারেটিভ যদি আমরা করতে পারি, সেখানে যদি ফার্টিলাইজার দিতে পারি, রেশন কার্ড দিতে পারি তাহলে চুরিটা কম হবে। সেখানে যদি ওয়াকর্স প্রোগ্রামের টাকা দিতে পারি, চুরিটা কম হবে। একটা সিস্টেমের মধ্যে আসতে পারি। চিৎকার করে, গালাগালি করে কাজ হবে না। এই যে পলিটিক্যাল পার্টি এটা খুব ইমপরট্যান্ট জিনিস। এর মেম্বারশীপ ইচ্ছা করলেই পাওয়া যায় না। মেম্বার বেছে বেছে নিতে হবে। গলায় সাইনবোর্ড লাগিয়ে বলবে, আমি মেম্বার, আমাকে একটা পারমিট দাও, সেটা হবে না। মেম্বার যে হবে তার একটা কার্য থাকবে। প্রাইমারী মেম্বার থাকবে অনেক। এছাড়া আমি আপনাদের মেম্বার করে দিয়েছি। আপনাদের জন্য কৃষক, লেবার অর্গানাইজেশন হচ্ছে লেবার পলিসি করতে হবে, প্ল্যান করতে হবে। কোন ঢাকঢাক গুড়গুড় থাকবে না। এই আমার আছে এই তোমার ডেভেলপমেন্ট, এই ইনকাম করতে পারলে এই তোমরা পাবে। দিতে চাই আমি তোমাদের লাভের জন্য। ওদেরও দিতে হবে। তোমরা মানষের বাস করবে। তাদের দিতে হবে, যাতে কৃষক কৃষকের মতো বাস করতে পারে। তার লেখাপড়া করবে নতুন সিস্টেমে। আমরা একটা নতুন এডুকেশন সিস্টেম করতে বলেছি। কেরানি পয়দা করে লাভ হবে না। মানুষ পয়দা করতে হবে। নতুন এডকেশন সিস্টেম করতে পারি কিনা, আমরা তা দেখছি। দেশে সার্বিক অবস্থা। ইমপ্রুভ করতে সময় লাগবে। তিন বছর, সাড়ে তিন বছর একটা দেশের জীবনে কিছই না। আমাদের ইকনমিক কন্ডিশন ভালো নয়। আমাদের মাল বিদেশ থেকে বেশি আনতে হয়। কমিট করতে গেলে ফাইন্যান্স মিনিস্টার সাহেব আমার কলাম ধরে। বসেন। মহাবিপদ আমাকে নিয়ে। টাকা পাওয়া যাবে না।
দেশের ট্যাক্স, জাতীয় আয় বাড়াতে পারলে দেশের আয়ও বাড়ে ইনশাআল্লাহ। আমরা কতকগুলো স্টেপ নিয়েছি, ইকনমিক স্টেপ। তাতে আমরা এটুকু বলতে পারি যে, আমরা যে একটা ভীষণ খারাপ অবস্থায় পড়েছিলাম গত বছর, ইনশাআল্লাহ অতখানি খারাপ অবস্থায় এ বছর নাই। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমি এখন এখানে বেশি কিছু বলতে চাই না। ফাইন্যান্স মিনিস্টার এ মাসের ২৩ তারিখে পালামেন্টে বক্তৃতা করবেন। নিতে সেদিন বলবেন। তবে, অমি এটুকু বলতে পারি। আমাদের ইকনমিক কন্ডিশন ইজ নট সো ব্যাড এ্যান্ড ইট উইল ইমপ্রুভ ডে বাই ডে। কারণ, দেশের মানুষের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরে আসছে, তারা কাজ করছে, ফ্যাক্টরিতে কাজ হচ্ছে, কৃষক ভাইরা সবাই কাজে এ্যাডভান্স করেছে, দেশের মানুষও এগিয়ে এসেছে। ইনশাআল্লাহ আই সি এ ব্রাইট অব মাই কান্ট্রি। তবে এখানে যে শোষণহীন সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কথা আমরা বলেছি, সে অর্থনীতি আমাদের, সে ব্যবস্থা আমাদের। কোন জায়গা থেকে হায়ার করে অনে, ইমপোট করে এনে কোন ইজম চলে না। এ দেশে কোন দেশে চলে না। আমার মাটির সাথে, আমার মানুষের সাথে, আমার কালচারের সাথে, আমার ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে, আমার ইতিহাসের সাথে যুক্ত করেই আমার ইকনমিক সিস্টেম গড়তে হয়। কারণ আমার এখানে মানুষের কালচার কি, আমার ব্যাকগ্রাউন্ড কি, তা না জানলে হয় না। ফান্ডামেন্টালি আমরা একটা শোষণহীন সমাজ গড়তে চাই, আমার এ একটা সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি গড়তে চাই। বাট দি সিস্টেম ইজ আওয়ার্স। উই ) টু ইমপোর্ট ইট ফ্রম এনিহোয়ার ইন দি ওয়ার্লন্ড। এটা আমার মত, পার্টির মত।
আমরা কারো বিরুদ্ধে কোন কিছু বলতে চাই না। আমাদের একটা ফ্যাশান হয়ে গেছে যে, এ ওর বিরুদ্ধে গালাগালি করে ও অন্য একজনের বিরুদ্ধে গালাগালি করে। বাংলাদেশের মাটিতে যেন একটা হটবেড অব ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্স হয়ে গেছে। এ ওরে গালাগালি করে, ও এরে গালাগালি করে। আমার মাটিতে বসে গালাগালি দরকার কি বাবা। যারা যারা দেশে গিয়ে গালাগালি করো। একটা ডিপ্লোম্যাটিক ডেকোরাম আছে। এক দেশে দাড়িয়ে অন্য দেশের বিরুদ্ধে কথা বলা চলে না। আমার দেশে তোমার কি ভালো, সেটা বল। আই বিলিভ ইন পজিটিভ অ্যাপ্রচ নট এ নেগেটিভ অ্যাপ্রচ। সেজন্য আমার পাটিতে আপনারা যারা আছেন, আসুন, আমরা পজেটিভ অ্যাপ্রচ নিই। আমি যখন খুব ইয়ং ছিলাম, আমার নেতা সোহরাওয়ার্দী সাহেবকে কেউ গালাগালি করলে আমি রাগ করে তার কাছে যেতাম। তিনি হেসে বলতেন, থাক বলতে দাও। ওতে কি হবে। উনি আমাকে বলেছেন, থিংক ফর এ পজিটিভ অ্যাপ্রচ দ্যান এ নেগেটিভ অ্যাপ্রচ। আমার লাইফকে আমি ঐ দৃষ্টিতেই দেখেছি।
যখন আমি ৬-দফা দিলাম, আমার বিরুদ্ধে যখন বক্তৃতা আরম্ভ করলো সকলে মিলে, আমি কিন্তু কারো বিরুদ্ধে কোন কথা বললাম না। আমি চলে গেলাম দেশের মানুষের কাছে। গিয়ে ৬-দফার প্রচার আরম্ভ করে দিলাম। আমি যখন পার্টি রিভাইভ করলাম, আমার বিরুদ্ধে বক্তৃতা হলো। কিন্তু আমার চলে গেলাম পিপলের কাছে। পিপল আমাকে গ্রহণ করে নিলো। কাউকে গালাগালি করে লাভ নাই। আমি বিশ্বাস করি, ক্যাম্বােডিয়া, আই শুড রিকগনাইজ ইট। আই ডােন্ট কেয়ার এনিবডি ইন দি ওয়ার্ল্ড হোয়েদার এনিবডি ইজ স্যাটিসফায়েড অর এনিবডি ইজ আনহ্যাপি অর এনিবডি ইজ হ্যাপি। আই ফিল দ্যাট দে আর ফাইটিং ফর দেয়ার ওন লির্বাটি। আই এ্যাম উইথ দেম। আই সাপোর্ট পিআরজি। আই গিভ দেম রিকগনিশন বিকজ আই এ্যাম এ সাফারার, আই অ্যাম এ সাফারার ফর জেনারেশন টু জেনারেশন ফর দিস বেঙ্গলি নেশন। যে যুদ্ধ করছে তার মাতৃভূমির জন্য, তাকে সমর্থন দেবো। তাই বলে আমি অন্যকে গালাগালি করবো না। এই জিনিসটি আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো। আজকে আপনারা মনে রাখবেন যে, নতুন আর্মি, নেভি, এয়ারফোর্স, সরকারি কর্মচারী, বেসরকারি কর্মচারী, পলিটিশিয়ান, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, ডক্টরস, ইঞ্জিনিয়ারস যদ্দর সম্ভবপর এদের রাখার চেষ্টা করেছি। পলিটিশিয়ানদের মধ্যে অনেক এক্সপিরিয়েন্সড আমার পুরানো বন্ধুরা আছেন যারাঁ আগে আমাদের সাথে ছিলেন। কিছুদিন ডিফারেন্ট পার্টি করেছেন। আগে আমরা এক জায়গায়ই ছিলাম। মধ্যে ভাগ হয়ে গেলাম, এটা সব জায়গায় হয়। আবার আমরা এক হয়েছি। সেকেন্ড রেভল্যুশণ ইজ নট দি এন্ড। সেকেন্ড রেভুলুশন যে করেছি আমি, চারটা প্রোগ্রাম দিয়েছি, এটাই শেষ নয়। প্রোডাকশন, ন্যাশনাল ইউনিটি এ্যান্ড ফ্যামিলি প্ল্যানিং এগুলো করলেই আরো একটা শোষণহীন সমাজ ব্যবহাগ পারবে-খানে তেমন বাস করতে পারবে। এটাই হলো আমার সেকেন্ড রেভুলুশনের মূল কথা। সেজন্যই আমি সেকেন্ড রেভল্যুশনের ডাক দিয়েছি।
আজ আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি, আমার বহু সহকর্মী-যাদের সাথে আমি দুর্দিনে কাজ করেছি, বিপদের দিনে কাজ করেছি, ১৯৪৭, ৪৮, ৪৯ সালে, তারা আজকে এখানে এসেছেন। মাঝখানে এদিক ওদিক ছুটে গিয়েছিলেন অনেকে। ডিফারেন্স অব ওপিনিয়ন এর জন্য। আজকে আমরা আবার এক হয়েছি, সরকারি কর্মচারীরা এক হয়েছি। আজকে সকলে মিলে যার যা কর্তব্য আছে করুন। সেই সাথে করাপশনের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান। সারা বাংলাদেশের টুয়েনটি থেকে থার্টি পার্সেন্ট দুঃখ দুর হয়ে যাবে মানুষের। এজন্য লেট আস টেক ওথ টুডে; যে নিজেরা আমরা করাপ্ট প্র্যাকটিস না করি, তাই আবার অন্য কেউ করলে আমরা সহ্য করি না। উই মাস্ট মবিলাইজ দি পিপল এগেইনস্ট করাপশন। এটা যদি করতে পারি, দেখবেন, অনেক প্রবলেম আমরা সলভ করতে পারবো। এ জন্যই আজকে আমাদের মবিলাইজ করতে হবে পিপলকে। আমাদের সোশ্যালি বয়কট করতে হবে-যে লোকটা ঘুষ খায় তাকে সোশ্যালি বয়কট করতে হবে যে লোকটার মাইনে হাজার টাকা, কিন্তু ব্যয় করে পাঁচ হাজার টাকা, তাকে যে লোকটা ইনকাম তিন হাজার টাকা, কেমনে করে সে ব্যয় করে ১৫ হাজার টাকা। এই জিনিসটা সমাজের কাছে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে এবং তাহলেই সমাজ তথা পিপলের আপনাদের ওপর আস্থা ফিরে আসবে।
আমি মাঝে মাঝে আল্লাহর কাছে বলি যে, গেছি চট্রগ্রাম, চট্রগ্রাম থেকে গেছি সেখানে বেতবুনিয়া সে গ্রামের মধ্যে লাখ লাখ লোক দুই পাশে বসে আছেন, ওরা এসেছে আমাকে দেখার জন্য। মনে মনে আমি বলি যে আমি কি করেছি ওদের জন্য? আমার দুঃখ হয় স্টিল দে লাভ মি। দুনিয়ার নিয়মই এই। ভালোবাসা পেতে হলে ভালোবাসোতে হয় এবং সে ভালোবাসা সিনসিয়ারলি হওয়া দরকার। তার মধ্যে যেন কোন খুঁত না থাকে। ইফ ইউ ক্যান লাভ সামবডি সিনসিয়ারলি, ইউ উইল গেট দি লাভ অব সামবডি। দেয়ার ইজ নো ডাউট এবাউট ইট। আমার জীবনে আমি দেখেছি, লাখ লাখ লোক দু’পাশে দাড়িয়ে কি করুণ অবস্থার মধ্যে, আমি তো কল্পনাও পারি না হোয়াই দে লাভ মি সো মাচ? আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করি, মবিলাইজ দি পিপল এ্যান্ড ডু গুড টু দি হিউম্যান বিইংস অব বাংলাদেশ। আনফরচুনেট পিপল হ্যাভ সাফার্ড লং-জেনারেশন আফটার জেনারেশন। এদের মুখে ফোটাতে হবে, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে, এদের খাবার দিতে হবে।
যদি আমরা একটা শোষণহীন সমাজ গড়তে পারি, যদি করাপশন বন্ধ করতে পারি, আমি বিশ্বাস করি, ইনশাআল্লাহ বাংলার মাটিতে যা এখনো আছে, তাতে সাড়ে ৭ কোটি লোক হলেও বাংলার মানুষ না খেয়ে মরতে পারে না। আই হ্যাভ সীন দ্যাট।
আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই। কারণ, আই হ্যাভ বিকম ইমোশনাল। আগষ্ট মাসে আমি আপনাদের সভা ডাকছি উইথ ডেফিনিট এজেন্ডা। ফুড, এগ্রিকালচার, ইন্ডাস্ট্রি, এডুকেশন, কো-অপারারেটিভ সমস্ত প্রোগ্রাম দিয়ে তারপর আমি আপনাদের এই হাউসটাকে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে দিচ্ছি। আপনারা ডিভাইড হয়ে যাবেন। সব কিছু ডিভাইড হয়ে গেলে তখন এই কমিটিতে বা গ্রুপে সেক্রেটারিয়েট থেকে লোক আসবে, গভর্ণমেন্ট থেকে লোক আসবে, ডিপার্টমেন্ট থেকে আসবে, পলিটিক্যাল ওয়ার্কার আসবে, সমস্ত ফ্যাক্টস-ফিগার নিয়ে। এই জায়গাতে কোথায় ডিফেক্ট হয়েছে, কোন জায়গাতে ইমপ্রুভ করতে পারি, সে সম্পর্কে আপনারা একটা সাজেশন দেবেন।। তখন কেন্দ্রীয় কমিটি কার্যনিবাহী কমিটির কাছে সুপারিশ পেশ করবে, এবং ঐ কমিটি সরকারকে এটা কার্যকরী করতে অনুরোধ করবে। আপনাদের অনেক কষ্ট দিলাম। বেয়াদবি মাফ করবেন। লেট আস ওয়ার্ক। টুগেদার, উই আর নাউ ওয়ান পার্টি। পার্টি মানে কি, জানেন? এভরি পার্টি ওয়ার্কার ইজ লাইক মাই ব্রাদার, ইজ লাইক মাই সন। আই ক্রিয়েটেড এ ফ্যামিলি, হোয়েন আই অরগ্যানাইজড আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশে এমন কোন জায়গা নাই যেখানে আমি যাইনি। আর পলিটিক্যাল পার্টি মিনস এ ফ্যামিলি যার মধ্যে আছে আইডিওলজিক্যাল এফিনিটি। সেজন্য পার্টিতে উই আর ওয়ান ফর সাম পার্টিকুলার পারপাসেস, হোয়্যাররেভার উই আর। আমাদের আদর্শ হলো বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ইজ্জত সহকারে দুনিয়াতে বাঁচিয়ে রাখা, বাংলার দুঃখী মানুষকে পেট ভরে খাবার দিয়ে শোষণমুক্ত সমাজ গঠন করা, যেখানে অত্যাচার অবিচার জুলুম থাকবে না, দুর্নীতি থাকবে না। লেট আস অল ট্রাই ফর দ্যাট। আসুন, আমরা চেষ্টা করি সে সম্পর্কে সকলে মিলে।
আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ।
Reference:
দৈনিক বাংলা, ২০ ও ২১ জুন ১৯৭৫
বঙ্গবন্ধুর ভাষণসমগ্র ১৯৪৮-১৯৭৫, ফারজানা ইয়াসমিন, ড রাজিবুল বারী, সংগ্রামের নোটবুক
এই দেশ এই মাটি (প্রবন্ধ, বক্তৃতা, বাণী, নির্দেশ ও সাক্ষাৎকার) – শেখ মুজিবুর রহমান, পৃষ্ঠা – ৩০৯-৩২০, আবুল মাল আব্দুল মুহিত, আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, মো জাহিদ হোসেন, ২০০৮, বঙ্গবন্ধু ললিতকলা একাডেমী