শিকাগো সান টাইমস
সোমবার. জুন ২৮, ১৯৭১
পাকিস্তানী সৈন্যদের গ্রাম আক্রমণ – প্রচুর লোক নিহত
বলিয়াদি , পূর্ব পাকিস্তান (এপি) – পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি দল রবিবার সন্ধ্যার আগে জলমগ্ন গ্রামের হিন্দু এলাকার বাসিন্দাদের হত্যা করে, ঘরবাড়ি লুণ্ঠন করে এবং বাজার জ্বালিয়ে দেয়।
২০ মিনিট পরে ২৪ জন পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্য ও ডজন খানেক সম্মুখ সেনা চলে যায়। তাদের সদর দপ্তর আমাদের পশ্চিমে । তাদের কমান্ডার যিনি নিজে তার নাম বলেন মেজর ওমর তিনি সাংবাদিকদের জানান এটি ছিল আমাদের ‘’রুটিন টহল।’’
আরেকজন মেজর যিনি নাম বলতে চাননি – তিনি একটি নীল টুপিবিশেষ পড়া ছিলেন এবং নগ্নপদে ছিলেন। তার লোকদের কাছে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ও ছাতা ছিল বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য।
একটি পরিদর্শনে দেখা যায় তারা তিনটি লাশ ফেলে যায় এবং গ্রামের কিছু বাড়ি এখনো জ্বলছিল।
কিছু বয়সী নারী ও শিশু মৃত্যু শোকে বলছিল “তারা সবকিছু নিয়ে গেছে”।
একজন মুসলিম বাসিন্দা জানান এখানে প্রায় ১০০ পরিবার ছিল যারা পাটক্ষেত দিয়ে পালিয়ে চলে গেছে।
একজন সাদা দাড়ি ওয়ালা মানুষের লাশ একটি পাতির উপর শোয়ানো আছে এবং সেটা দোচালা ঘরের নিচে রাখা ছিল। তার পিঠে গুলি লেগেছিল।
গ্রামবাসীরা জানান, ৫ ঘণ্টার যুদ্ধের এই ৩ লাশের পাশাপাশি আরও ৫/৬ জন মারা গেছেন।
আক্রমণ হচ্ছিল ঢাকার উত্তরে প্রায় ১ ঘণ্টার রাস্তা পেরিয়ে যেখানে চার ব্রিটিশ সাংসদদের পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি তদন্ত করতে এসেছিলেন – তারা শেষ দিনে ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন। এছাড়া একই সময়ে আরও জাহাজ এসেছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গোলাবারুদ এবং স্পেয়ার্স বহন করে। এটি পশ্চিম পাকিস্তানের করাচির দিকে যাচ্ছিল।
ঘেরাও করা শহরটি বিচারপতি বি কে সিদ্দিকীর বাড়ি, যিনি বাংলার প্রধান বিচারপতি যিনি মার্চ এর শুরু থেকে আইনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তিনি প্রদেশের নতুন সামরিক গভর্নর হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে শপথ করানো থেকে বিরত থাকেন।
মুসলমান গ্রামবাসী ও অনেক ছাত্র যারা ২৫ মার্চ থেকে ঢাকা থেকে পালিয়ে গেছে তারা জানায় শুক্রবার থেকে আর্মি পেট্রোল ঢাকার আশেপাশে ৬ কিলোমিটারের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে টহল দিচ্ছে – অনেক সময় তারা নৌকায় করে আসছে।
ওইসব গ্রামের দিকে তাকালে সকাল থেকে গুলির শব্দ ও ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে।
গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করে টাঙ্গাইলের ২৪ মাইল উত্তরএ ব্রহ্মপুত্র নদের উপর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কার্যকলাপ এর রিপোর্ট পেয়ে পাকসেনারা এগুলো শুরু করেছে।