বাংলাদেশের ‘বিহারী’-রা কোথায় যাবে?
স্টাফ রিপােটার
পূর্ববঙ্গ থেকে পানজাবি মুসলমানরা তাদের পরিবারের লােকজনদের পশ্চিম পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কারণ তারা ধরেই নিয়েছে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে তারা থাকতে পারবে না। পাক ফৌজ হঠে গেলেই তাদের পরিণাম ভয়াবহ। কিন্তু মুশকিল হয়েছে পূর্ববঙ্গের বিহারী মুসলমানদের। পশ্চিম পাকিস্তান তাদের গ্রহণ করতে রাজি নয়। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে গেলে ধরা পড়ে মুক্তি ফৌজের হাতে। এপারে এলে ‘অবাঞ্ছিত’ বিদেশী হিসাবে কারাবাস।খবরটি শরণার্থীদের কাছে পাওয়া যায়। তারা বলেছেন, এতদিন পূর্ববঙ্গে বিহারী মুসলমানরা নিষ্ঠার সঙ্গে পাক ফৌজের সহযােগিতা করেছে। বাঙালী নিধন যজ্ঞে মদত জুগিয়েছে। এখন বুঝছে শুধু ফৌজের আশ্রয়ে থাকা চলবে না। এরই মধ্যে কয়েক জন মীরজাফর খতম হয়েছে। তাই তারা এসে বাংলাদেশের বাঙালী মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক প্রচারের চেষ্টায় মেতেছে। বলছে, মুক্তি ফৌজ তাদের (অবাঙালী মুসলমানদের) মারেনি-পূর্ববঙ্গের হিন্দুরা মেরেছে পাক জঙ্গীচক্রও হিন্দুদের নাম করে বিজ্ঞপ্তি ছাড়ছে-অমুকের নেতৃত্বে বিহারী মুসলমানদের উপর হামলা হয়েছে।কিন্তু এই অপপ্রচারে বাংলাদেশের বাঙালী মুসলমানদের বিভ্রান্ত করা যাচ্ছে না। তারা সাফ বলে দিচ্ছেন, আমরা জানি কী হয়েছে। তাছাড়া আমাদের লড়াই পানজাবি, বিহারী, হিন্দু বা মুসলমানের স্বাধীনতা সংগ্রামবিরােধী তাদের বিরুদ্ধে।
২২ মে ‘৭১
Reference: ২২ মে ১৯৭১, দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা