কবরী চৌধুরী কলকাতায়
বিশেষ প্রতিনিধি
দক্ষিণ কলকাতায় এক বাড়িতে কবরী চৌধুরীর দেখা পেলাম। ঢাকা থেকে আগরতলা হয়ে এখানে। পৌঁছেছেন। কবরী সেখানকার সবচেয়ে নামী এবং সবচেয়ে দামী চিত্রাভিনেত্রী। স্বামী এবং দুই পুত্রও সঙ্গে এসেছেন।স্বামী তীর্থ চৌধুরী ঢাকার বিশিষ্ট চিত্র প্রয়ােজক। ১৯৬৩ সাল থেকে ছবির ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত। কবরী দেবীও ওই বছরেই ছবির জগতে আসেন। ছবির সূত্রেই ওদের প্রথম পরিচয়, পরে পরিণয়। দুই পুত্র অঞ্জন আর রঞ্জনও ছবিতে নেমেছে।
পথের দুঃখের কথা বলছিলেন কবরী চৌধুরী। পরনে ছেড়া শাড়ি ছেড়া ব্লাউজ (ছদ্মবেশী না হয়ে উপায় ছিল না), পায়ে হেঁটে পঞ্চাশ মাইল পথ পার হতে হয়েছে। তার ওপর সারা রাস্তা মুষলধারেবৃষ্টি। এই বৃষ্টিই অবশ্য পাক হানাদারদের অবিশ্রান্ত গােলাবৃষ্টির কবল থেকে পরােক্ষভাবে ওদের রক্ষা করেছে। ১৩ এপ্রিল ওরা চট্টগ্রাম ছেড়েছেন। ঢাকা ছাড়তে হয়েছিল আরও কয়েক দিন আগেই। ১৫ এপ্রিল ওরা ত্রিপুরা সবরুম বর্ডার দিয়ে কপর্দকহীন হয়ে আগরতলায় পৌঁছেন।
সীমান্তের জনসাধারণ ওদের সঙ্গে অকুণ্ঠ সহযােগিতা করেছেন। কৃতজ্ঞতার সঙ্গে বললেন সে কথা। ওই বাংলার মুক্তিফৌজের সম্পর্কেও কবরী দেবীর কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই। জয় ওদের অনিবার্য। খুব জোর দিয়ে কথাটা বললেন। বিদায় নিতে উঠে দাঁড়ালাম করজোড়ে কবরী দেবী হাসলেন।
১ মে ‘৭১
Reference: ১ মে ১৯৭১, দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা