You dont have javascript enabled! Please enable it! 1973 | ১৯৭৩ সালে লন্ডনে যুদ্ধখেলায় যুক্ত জেনারেল জিয়াউর রহমান | একটি অতীত ঘটনার দৃশ্য - শশাঙ্ক ব্যানার্জী - সংগ্রামের নোটবুক

১৯৭৩ সালে লন্ডনে যুদ্ধখেলায় যুক্ত জেনারেল জিয়াউর রহমান | একটি অতীত ঘটনার দৃশ্য – শশাঙ্ক ব্যানার্জী

কিভাবে লন্ডনের একটি রেস্টুরেন্টের আড্ডায় রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের সুযােগ সন্ধানী পরিকল্পনা প্রকাশ হয়ে পড়ে এবং কিভাবে বাংলাদেশে সামরিক একনায়কতন্ত্র ফিরে আসে যা শতাব্দীর এক চতুর্থাংশ সময় স্থায়ী হয়, সেই গল্প।

সামরিক, আধা সামরিক এবং কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানের যুদ্ধের খেলার জড়িত হওয়া কোন অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। পরিস্থিতির ভিত্তিতে ঘরে বসে পূর্ববর্তী হুমকি বিবেচনায় তারা একটি সম্পূর্ণ মডেল তৈরী করে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক, প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক স্বার্থ নীরিক্ষা শেষে তারা ভিন্ন নীতি খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।

১৯৭৩ সালের বসন্তে এইরকমই একটি যুদ্ধ খেলা শুরু হয়। স্থান ছিল লন্ডন। প্রধান চরিত্র ছিল বাঙলাদেশের ডেপুটী চিফ অফ আর্মি স্টাফ স্বয়ং। প্রচন্ড ঝুঁকি নিয়ে নিজের গলা বাড়িয়ে আমি তার সাথে একটি কথােপকথনে অংশ নিয়েছিলাম। আমার সাথে থাকা কিছু ইন্টেলিজেন্সি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আমি এই কাজে অগ্রনী হই।

কিন্তু এই অসাধারণ গল্পটি বলবার আগে আমি একটি সতর্ক বার্তা পাঠাতে চাই। জাতীয় প্রসঙ্গ ও যে প্রেক্ষিতে যুদ্ধ খেলাটি শুরু হয়েছিল তা ভালমত বােঝা যাবে তখনই যখন ঘটনাটিকে গত শতকের ষাটের দশক ও সত্তরের দশকে যুক্তরাষ্ট্র ও সােভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে চলমান স্নায়ু

১৮৮

যুদ্ধের প্রেক্ষিতে বােঝার চেষ্টা করা হবে। ভারত সে যুদ্ধের মাঝখানে পড়ে গিয়েছিল নিজের ইচ্ছায় বা হঠাৎ সুযােগে নয় বরং তখনকার পরিস্থিতি বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতকে নিয়ে গিয়েছিল বেড়ার ওপাশে সাম্যবাদী সােভিয়েত ইউনিয়নের সাথে একটি ঐক্যের মধ্যে। পৃথি বীর সবচেয়ে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক যুক্তরাষ্ট্র ভারতের মিত্রও ছিলনা, বন্ধুও। ছিল না। সম্পর্ক ছিল রেষারেষির। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জোট অংশিদার ছিল। সামরিক একনায়কতান্ত্রিক দেশ পাকিস্তান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার নেতৃ ত্ব ভারত ও সােভিয়েত ইউনিয়নের সাথে সম্পর্কিত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু ছিলনা। প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭১ সালে ভারত ও বাংলাদেশের নেতৃত্ব নিয়ে। রাগান্বিত ছিল। কারণ তারা মস্কোর সহায়তায় পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করেছিল। যা SEATO এবং CENTO এর সদস্য এবং পশ্চিমের সম্মিলিত নিরাপত্তা জোটের মূল্যবান অংশ।

যদিও যুদ্ধ পরবর্তী দৃশ্যপট ছিল সম্পূর্ণ অন্যরকম। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়ই একটি বহুতল বিশিষ্ট কৌশলগত সম্পর্ক তৈরীর ঘােষণা দিয়েছিল। অনেক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও, মনে হচ্ছিল অতীতের তিক্ততা মাটি চাপা পড়েছে এবং আবহাওয়া ইতিবাচক। নতুন ধারায় দুই দেশেরই লক্ষ্য পূরণ হবার সম্ভাবনা ছিল। যুক্তরাষ্ট্র তখন বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একজন বন্ধু। হিসেবে বিবেচনা করত।

১৯৭৩ সালে পরিস্থিতি ছিল ভীষণ আবেগময়। পাকিস্তান একটি যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল চিরশত্রু ভারতের কাছে। অর্ধেক অঞ্চল চলে গিয়েছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে। পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা ঘােষণা করেছিল বাংলাদেশ নাম নিয়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার নেতা মুজিবুর রহমান পাকিস্তানে সবচেয়ে ঘৃণ্য ব্যক্তি ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের চোখেও তিনি এই রকমই ছিলেন।

পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মােড়লরা ভেবেছিলেন মুজিব, যার প্রশাসন চালানাের কোনাে অভিজ্ঞতাই নেই বাঙলাদেশের মতাে একটি জটিল সত্বার দেশ চালাতে সমর্থ হবে না এবং তারা আশা করেছিল তিনি বিপদ বুঝে পাকিস্তানের কাছে ফিরে যাবেন এবং অনুরােধ করবেন তাকে বাঁচানাের। ভূট্টোর ১৯৭২ সালের পাকিস্তান বাংলাদেশ মৈত্রী প্রস্তাবটি তখনও টেবিলে ছিল। জেনারেলদের যে বিষয়টি প্রচন্ড রাগিয়ে দিয়েছিল তা হল মুজিব স্থিত

১৮৯

হচ্ছিলেন এবং রাওয়ালপিন্ডি উদ্ভাবিত ‘fiefdom’-এর ওপর প্রভাব বিস্তার করছিলেন। তারা ভয় পাচ্ছিলেন যে রাজনৈতিকভাবেই পূর্ব পাকিস্তানকে তারা চিরতরে হারাচ্ছেন।

বিচক্ষণ গােয়েন্দা তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল যে রাওয়ালপিন্ডির হেডকোয়ার্টারের জেনারেলরা হতাশা ও ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে গােয়েন্দা প্রধানের সাথে আলােচনা করেছে মুজিবুর রহমানকে নিশ্চিহ্ন করে দেবার বিষয়ে। হত্যাকান্ডের গন্ডগােলের মধ্যে একজন জেনারেল এর সামরিক ক্ষমতাগ্রহন ঘটতে পারে কি না সে বিষয়েও আলােচনা চলছে। সামরিক লােকগুলাে গােপনে একটি জনপ্রিয়তা যাচাই ক্যাম্পইনও করতে চাইছিল যাতে এই বিশেষ অপারেশনের প্রস্তুতি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। এর মাঝে বাঙলাদেশের অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপহয়ে উঠছিল। চারপাশে গরম বাতাস বয়ে চলেছিল। ঐ সব রিপাের্ট কি বিশ্বাসযােগ্য ছিল? স্বাভাবিকভাবে কিছুটা তাে বটেই, কিন্তু পাকিস্তান এমন এক অসাধারণ দেশ যেখানে যে কোন কিছুই সম্ভব। যা কমতি ছিল তা হল এই রিপাের্ট গুলির যথার্থতা কষ্টিপাথরে যাচাই করে নেবার সুযােগ ছিল না। প্রতিরােধে যাবার মত তথ্য ছিল না, ছিল শুধু রাওয়ালপিন্ডির ঘটনা প্রবাহের টুকরাে টুকরাে রিপাের্ট। কিন্তু হত্যা প্রচেষ্টার রিপাের্টটি নয়াদিল্লী বেশ গুরুত্বের সাথে নিয়েছিল। বেশ কয়েক বছর পর ২০১১ সালের মার্চে লন্ডনের একটি অনুষ্ঠানে বাঙলাদেশের একজন মাঝবয়সি ভদ্রমহিলার সাথে আমার প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আলাপ হয় যিনি নিজেকে বাঙলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উত্তরাধিকারী বলে দাবী করেন। তিনি বেশ। বাচাল রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন যার আনন্দের স্মৃতি বলতে ছিল সেই সময় যখন বাঙলাদেশ পাকিস্তানের অংশ ছিল। বেশ ক্ষোভ নিয়ে তিনি আমাকে বলেছিলেন যে ১৯৭৫ সালে কর্ণেল ফারুক রহমান ও মেজর শরিফুল হক ডালিমের গুলিতে যখন মুজিব মারা যান তখন তিনি এতটাই অজনপ্রিয় দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ ছিলেন যে কেউ মুজিবের জন্য একফোটা চোখের জল ফেলেনি। তার কথায় আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম যে পাকিস্তানের মুজিব বিরােধী প্রচারণা একটা অংশের মনে কি ধরণের ধারণা তৈরী করেছে। মুজিবের যত আত্মত্যাগ, মানুষের জন্য ভালােবাসা এবং দেশের মানুষ তাঁকে কতটা ভালােবাসতাে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল এই শত্রুতাপূর্ণ প্রচারণায়।

পাকিস্তানের সীমাহীন ক্রোধের বাইরে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে দেখছিল দক্ষিণ এশিয়ার এই ঘটনা প্রবাহকে? মিত্র পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে

১৯০

জড়ানাে ও তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেবার জন্য ভারতের ওপর নাখােশ হবার সাথে সাথে ওয়াশিংটন এ সাফল্যকে ভালাে চোখে দেখেনি। এ ছিল কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মত। ওয়াশিংটনের হতাশায় পরিচয় পাওয়া যায় যখন তারা আনবিক শক্তি সম্পন্ন সম্পূর্ণ ৭ম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে নিয়ে আসে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলাে এটা যে রাগের মাথায়ও একটা গুলিও তারা বর্ষণ করেনি। নয়াদিল্লীর প্রাথমিক দৃষ্টিভঙ্গী ছিল এই যে যুক্তরাষ্ট্র আক্রমনে যায়নি মূলত ভারতের প্রতি তার সম্মান থেকে। যাই হােক, ভুলে গেলে চলবেনা ১৯৭১ সালের শান্তি, বন্ধুত্ব ও সহযােগিতার ভারত-সােভিয়েত চুক্তির কথা। এই চুক্তি ভারতের অঞ্চলিক মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ক্রোধান্বিত ছিলেন যখন ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গোপসাগরে Uss Enteprise এর উপস্থিতি অগ্রাহ্য করে ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেন পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তাদের আত্মসমর্পনে বাধ্য করতে।

ভারতের রাস্তা ঘাটেও ৭ম নৌবহর একটি কৌতুকের বিষয় হয়ে ওঠে। মানুষের জনপ্রিয় উক্তি ছিল, এটা এলাে, এটা দেখলাে, এটা অপেক্ষা করে রইলাে তারপর একটাও গুলি না করে ফিরে গেল। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চীনের সামনে এটা ছিল বিশাল একটা পরাজয় যার সাথে সামরিক একনায়ক ইয়াহিয়া খানের তখন আরেকটি মিটিং হয়েছে।

বামপন্থীদের মধ্যে বিশ্বাস ছিল চিলির নেতা সালভাদর আলেন্দেকে হত্যা করার পর CIA এবার শেখ মুজিবকে হত্যা করার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। এইসব গুজব ভারতে আতঙ্কের সৃষ্টি করছিল।
নব গঠিত বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর ডেপুটী চিফ অফ আর্মি স্টাফ ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান। মুজিব ব্যক্তিগতভাবে তাকে নিয়ােগ দেন বাঙলাদেশের স্বাধীনতায় তার আনুগত্যের স্বীকৃতি হিসেবে।

শেখ মুজিব খুব দ্রুতই বাঙলাদেশের জন্য জোটবিরােধী নীতি তৈরীতে মন দিয়েছিলেন। বাঙলাদেশ স্বাধীনতা বিষয়টিতে ভারতের কাছে ঋণী ছিল। যে, ভারত তার নিজস্ব নিরাপত্তার প্রশ্ন তুচ্ছ করে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এই বিষয়টির স্বীকৃতি দেয় বাঙলাদেশ। সােভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনের বিষয়টিরও যথেষ্ট প্রশংসা করা হয়। মুজিবের মাথায় তখন পরিকল্পনা আসে যে বাঙলাদেশের ক্রম বিকশিত জোটবিরােধী নীতির অংশ  

১৯১

হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করা উচিত। তাই তিনি ডেপুটী চিফ অফ আর্মি স্টাফ কর্ণেল জিয়াউর রহমানকে তাঁর ব্যক্তিগত প্রতিনিধি হিসাবে ১৯৭৩ সালের শুরুতে ওয়াশিংটন পাঠান। জিয়াউর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে পেন্টাগন সিআইএ এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর প্রধানদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরী করেন।

যুক্তরাষ্ট্র সফরে তার দায়িত্ব পালন শেষে তিনি ঢাকায় ফেরার পথে লন্ডনে কিছুদিনের যাত্রা বিরতি দেন। আর লন্ডনে এই যাত্রাবিরতির সময়েই জিয়াউর রহমান আমার সাথে দেখা করতে চান। আমি সেইসময় লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনের এ্যাটাশে হিসাবে দায়িত্ব পালন করছি। লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের সৈয়দ আব্দুস সুলতানের মাধ্যমে তার মেসেজটি আমার কাছে আসে। নটিং হীল গেটে হাই কমিশন অফিসে আমি জিয়াউর রহমানের সাথে দেখা করি। যা ঐ দিন আমার আতিথ্যে একটি ব্যক্তিগত মধ্যাহ্ন ভােজে এসে শেষ হয়। পরদিন তার সাথে আমার দ্বিতীয় মিটিং হয়, এবার তিনি খাবারের আয়ােজন করেন।

আমার সাথে মিটিং এর উদ্দেশ্য ছিল ফারুক রহমানের একটি সুটকেস ও কর্ণেল ব্যাটন ফেরত নেয়া যা আমার বাসায় ছিল। ফারুক রহমান পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ছিলেন, যিনি সৌদি সামরিক বাহিনীর ট্রেনিং অফিসার হিসাবে সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন। তিনি তখন। লন্ডন সফরে ছিলেন যখন ২৫ মার্চ ১৯৭১ পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক গভর্নর হিসাবে জেনারেল টিক্কা খান বিশ্ববিদ্যালয়ে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন।

খুব আবেগী মানুষ লে. কর্ণেল ফারুক রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর ম্যাসাকারের প্রতিবাদে জোট পরিবর্তন করেন। এবং বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে মনােনিবেশ করেন। আমার সাথে যখন তার দেখা হয় তখন আমি তাকে বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরীর সাথে দেখা করতে বলি যিনি লন্ডন থেকে মুক্তির সংগ্রাম পরিচালনা করছিলেন। তার সাথে আমার যােগাযােগ ছিল ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হবার আগ পর্যন্ত।

ফারুক রহমান ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ রাতে আমার বাসায় আমার সাথে দেখা করেন এবং যুদ্ধ ক্ষেত্রে যাবার জন্য আমাকে একটি পাসপাের্টের ব্যবস্থা

১৯২

করে দিতে বলেন। তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে মিলে যুদ্ধ করতে। চাচ্ছিলেন। আমি সাথে সাথেই আমার চ্যানেল ব্যবহার করে ভারতীয় সামরিক বাহিনী কর্তৃপক্ষের সাথে যােগাযােগ করি এবং কর্ণেল ফারুক রহমানের যুদ্ধ ক্ষেত্রে পৌছানাের বিষয়টিতে অনুমােদন চাই। তিনি ভারত-পূর্ব পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধ ক্ষেত্রে চলে যাবার আগে নিরাপদে রাখার জন্য তার স্যুটকেস ও রেজিমেন্ট ব্যাটনটি আমার কাছে রেখে যান। তিনি বলেন যদি তিনি যুদ্ধে বেঁচে যান তবে ভবিষ্যতে কোন এক সময় এগুলাে নিয়ে যাবেন।

এই স্যুটকেসটি জিয়াউর রহমানের সাথে আমার সিরিয়াস একটি আলােচনা শুরু করিয়ে দেয় প্রধানমন্ত্রী মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিষয়ে। ভারতে চলমান গুজব যে মুজিবুর রহমানকে হত্যার বিষয়টি নিলামে উঠেছে। এই বিষয়টির প্রেক্ষিতে আমাদের আলােচনা হয়েছিল। আলােচনার মাঝখানে আমি নিজে বােঝার তাগিদে কর্নেল জিয়াউর রহমানের কাছে। অনুমতি চাইলাম তাকে একটা বা দুটো অপ্রিয় প্রশ্ন করার। আমি তাকে বললাম যে শেখ মুজিবের জীবন নিয়ে আমার শঙ্কা ব্যক্তিগত, কারণ আমরা বেশ দীর্ঘদিনের পুরােনাে বন্ধু । তিনি বললেন যে হাই কমিশন বিষয়টি তাকে জানিয়েছে।

অত্যন্ত চাতুর্যের সাথে প্রশ্ন করার আগে আমি তাকে বললাম যে প্রশ্নের জবাব দিতে আরাম বােধ না করলে তাকে কিছুই বলতে হবে না। তারপর জানতে চাইলাম ছয় সপ্তাহের ওয়াশিংটন সফরে তিনি কার কার সাথে দেখা করেছেন? তিনি আমাকে বললেন যে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ডিফেন্স সেক্রেটারি থেকে শুরু করে নীচের দিকের অনেক সিনিয়র অফিসিয়ালের সাথে দেখা করেছেন। আমি আরাে জানতে চাইলাম যেহেতু তিনি তার পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে তাই পুরােনাে দিনের কথা ভেবে তার নিশ্চয়ই ইচ্ছে করেছিলাে ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসের মিলিটারি এ্যটাশের সাথে দেখা করায়? প্রথমে কিছুটা দ্বিধা করলেও তিনি সায় জানালেন।

অনেকখানি নার্ভাস থাকলেও আমি সরাসরি আসল বিষয়ে চলে এলাম। আমি তার কাছে জানতে চাইলাম যে উপমহাদেশের রাজনৈতিক আবহাওয়া যখন কালাে মেঘে ঢাকা এবং মুজিবকে হত্যার সম্ভাব্য তৎপরতা চলছে তখন। ছয় সপ্তাহের জন্য দেশের ডেপুটি চিফ অফ আর্মি স্টাফকে দেশের বাইরে পাঠানাে কি প্রয়ােজনহীনভাবে সমস্যা ডেকে আনা নয়? আমি অবশ্য প্রথমেই

১৯৩

তাকে বলে নিয়েছিলাম যে আমি একটি তাত্ত্বিক পরিস্থিতি বিচার করছি, ব্যক্তিগত নয়। আমি যখন দেখলাম তিনি মনক্ষুন্ন নন আমি জানতে চাইলাম তার মতাে একজন মানুষ যদি কোনাে ইন্টেলিজেন্সি এজেন্সির অপারেশনাল। প্রধান হন তবে কি তিনি এই সম্ভাবনা বিচার করবেন না যে যখন একজন যােগ্য প্রার্থী হাতে আছে তখন ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের বিরক্তি উৎপাদনকারী ঝামেলার ব্যক্তিকে সরিয়ে দেয়া যায়। চিলির সালভাদার আলেন্দেকে হত্যা একটি বিষয় ছিল, আর ওয়াশিংটনে পাকিস্তানের মিলিটারি এ্যটাশের সাথে দেখা করা ছিল আরেকটি। তিনি একজন পরিণত কুটনীতিকের মতই আমার প্রশ্নের জবাব দিলেন। তিনি বেশ হাসতে হাসতে বললেন এভাবে ভাবতে পারছি কারণ আমার আসলেই একটি উর্বর মস্তিষ্ক আছে। তিনি সাথে সাথেই মিটিং শেষ করে দিতে পারতেন কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে তিনি তা করেননি।

আমি জানতে চাইলাম একজন উচ্চ পদস্থ আর্মি অফিসারের জায়গা থেকে ফারুক রহমানের মত অধিনস্ত কর্মচারীর স্যুটকেস নেবার মত তুচ্ছ। কাজ কেন করছেন তিনি? আমি মনে মনে ভাবলাম তবে কি তিনি কোন একটি ভালাে সময়ে বিশাল কোন অপারেশন ব্যবহারের জন্য ফারুক রহমান নামের গুটিটি তৈরী রাখছেন? তবে কি কোন বৃহত্তর পরিকল্পনা আছে? পাকিস্তানী ট্রেনিং ইনসটিটিউটে প্রশিক্ষিত, সামরিক একনায়কদের ভূমিতে লালিত হওয়ায় খুব বেশি কি কল্পনা করা হয়ে যায় যদি ভাবি যে তারও হয়তাে গােপন উচ্চাকাঙ্ক্ষা আছে সামরিক কু’র মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করার? গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একজন নেতাকে হত্যা করার বিষয়টি এমন একজনের মাথায় আসতেই পারে।

পাকিস্তানী মিলিটারী এ্যটাশের সাথে তার কি কথা হয়েছিলাে জানতে আমার খুব কৌতুহল হচ্ছিল। কিন্তু যখন আমি দেখলাম যে সে বিষয়ে কথা বলতে তিনি খুব নার্ভাস হয়ে যাচ্ছেন তখন আমি আর কথা বাড়ালাম না।

কথা শেষ করার পরে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ার মত অবস্থায় চলে। গিয়েছিলাম। একটি দেশের একজন VIP, আর্মির ডেপুটী চি এর সাথে আমি কথা বলছি । আমি পদে তার চেয়ে বেশ কয়েক ধাপ নিচে ছিলাম এবং আমি বিদেশী একটি রাষ্ট্রের প্রতিনিধি। আমি জানতাম এটি একটি বেসরকারী। মিটিং কিন্তু আমি যা করেছিলাম তার জন্য নিজেকে ক্ষমা করতে পারছিলাম

১৯৪

না। আমি যা বলেছি তা একজন সিনিয়র সামরিক অফিসারের আমাকে গুলি করে মেরে ফেলার মত উস্কানিমুলক।

কিন্তু আমাকে ভীষণ অবাক করে দিয়ে মুখােমুখি এই কথােপকথনে জিয়উর রহমান ভীষণ ঠান্ডা ছিলেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি ছিল যে তিনি তার দ্বিতীয় এপয়ন্টমেন্টটি বাতিল করে দেননি যখন তার ফারুক রহমানের স্যুটকেসটি নেবার কথা। তিনি তার মধ্যাহ্ন ভােজের কথা রেখেছিলেন, ফারুকের স্যুটকেসটি সংগ্রহ করেছিলেন এবং ব্যাক্তিগতভাবে তা বহন করে। রেস্টুরেন্ট থেকে ঠিক পাশের দালানের হাই কমিশন অফিস পর্যন্ত হেঁটে গিয়েছিলেন। আমার জন্য এই ঘটনাটির গভীর তাৎপর্য ছিল।

আমার খোঁচাখুচির জবাবে তিনি এক ধরণের স্থির নীরবতা এটে রেখেছিলেন মুখে। একটি মাত্র কথা তিনি নার্ভাস হয়ে বার দুই বলেছিলেন যে “আপনার ঈশ্বর প্রদত্ত উর্বর কল্পনাশক্তি আছে” এই বিষয়ে তার চূড়ান্ত মন্তব্য ছিল “একটি স্যুটকেস নিয়ে আপনি আমার সাথে রসালাে যুদ্ধ খেলা খেললেন, তাই না?” আমি তার কথায় সায় জানালাম, আমি আমার প্রগলভতার জন্য ক্ষমা চাইলাম এবং আমরা বিদায় নিলাম মুখে ঠান্ডা হাসি নিয়ে।

এই বিষয়টি উল্লেখযােগ্য যে কর্ণেল জিয়াউর রহমান সেই পরিস্থিতিতে আমার মােটা দাগের প্রশ্ন একবারের জন্যও থামিয়ে দেবার চেষ্টা করেননি যদিও সেগুলি খুব ভদ্র ভাষায় করা ছিল। আমি আশা করেছিলাম একজন সামরিক অফিসার বেশ ঋজু এবং আনন্দময়। কিন্তু দুটি মিটিং এর ফলে জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আমার যে ধারণা হয়েছিল তা হল তিনি চঞ্চল চোখের চতুর একজন মানুষ যা মুজিবের নিরাপত্তা প্রশ্নে আমার মতে চিন্তার কারণ।

বাঙলাদেশের ডেপুটি চিফ অব আর্মি ষ্টাফ কর্ণেল জিয়াউর রহমানের সাথে লন্ডনে আমার সাক্ষাতের বিষয়বস্তু নিয়ে, এবং তার সম্পর্কে আমার মতামতসহ একটি রিপাের্ট খুব দ্রুত তৈরী করে আমি দিল্লী পাঠাই। আমি আমার আশঙ্কা নিয়ে কোনাে শব্দ সাজাইনি। এটি শুধুমাত্র দেখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাঠানাে হয়। মুজিব এর জবাবে বলেন, ‘জিয়াউর রহমান আর ফারুক রহমানের মত ছেলেরা আমার নিজের ছেলের মতাে। আর ছেলেরা কখনও পিতা-মাতাকে হত্যা করে না। অন্যান্য অনেক গােয়েন্দা সংস্থা থেকে মুজিবের জীবন সংক্রান্ত বিষয়ে একই রকম তথ্য  

১৯৫

জেনারেল জিয়াউর রহমান আসছিলাে কিন্তু তিনি এসব বিশ্বাস করতে রাজি ছিলেন না এবং তাঁর এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা বাড়ানাের প্রস্তাবও গ্রহণ করেননি।

***

১৯৭৩ সালে মুজিব সাধারণ নির্বাচনের ডাক দেন এবং নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেন। কিন্তু তার পরপরই বাংলাদেশ গভীর সংকটে পড়ে। পরপর দুটি মারাত্মক প্রাণঘাতি বন্যা ও দুর্ভিক্ষ প্রায় ১ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ে। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে পাঁচ হাজার রাজনৈতিক হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। সরকার দ্রুত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছিল এবং মুজিব উপলব্ধি করেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে তিনি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না। ঝাড়া দিয়ে উঠে মুজিব তৈরী করেন বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ অথবা বাকশাল। এর উদ্দেশ্য ছিল একদলীয় শাসন ব্যবস্থায় বিভিন্ন জেলায় স্থানীয় কমিটি তৈরী করা যা গর্ভনরের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এটি ছিল মুজিবের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভুল। এটা অনেকটা ভারতে মিসেস গান্ধীর জরুরী অবস্থা ঘােষনার মতই ছিল। সামরিক। বাহিনী কিংবা বিরােধী দল কেউ-ই এই বিষয়টিকে ভালােমত গ্রহণ করেনি। আর এভাবেই সামরিক বাহিনীর চেন অফ কমান্ডের কোন এক জায়গায় মুজিবকে হত্যা করার গােপন ষড়যন্ত্র শুরু হয়। এরপর আসে সামরিক ক্যু।

১৫ আগস্ট ১৯৭৫ কর্ণেল ফারুক রহমান, তার সাথে মেজর শরিফুল হক ডালিম, রিসালদার মােসলেউদ্দিন এবং বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর আরাে কিছু অফিসার মিলে ভাের বেলার এক রক্তাক্ত সামরিক কু-এ রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে ঢাকায় তাঁর বাসায় গুলি করে হত্যা করে। তাঁর সম্পূর্ণ পরিবারকে তার সাথেই হত্যা করা হয়।

তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও তার ছােটবােন শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান কারণ ঐ সময় তারা দেশের বাইরে ভ্রমণ করছিলেন। কর্ণেল জিয়াউর রহমানের খুব বেশি সময় লাগেনি নিজেকে জেনারেল পদে উন্নিত করে ১৯৭৬ সালের

১৯৬

নভেম্বরে সামরিক একনায়ক হিসাবে বাংলাদেশের ক্ষমতা হাতে তুলে নিতে।

১৫ আগস্ট ১৯৭৫ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের পয়ত্রিশ বছর পরে পাঁচ সাবেক সামরিক অফিসারকে দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত করে ২৮ জানুয়ারী ২০১০ তারিখে ফাঁসিতে ঝােলানাে হয়। পাঁচ জনের চারজন। হল কর্ণেল ফারুক রহমান, কর্ণেল মহিউদ্দিন আহমেদ, মেজর বজলুল হুদা, কর্ণেল মহিউদ্দিন এবং কর্ণেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান। পঞ্চম অভিযুক্ত ব্যক্তি আব্দুল আজিজ পাশা কেনিয়ায় নির্বাসিত অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে।

বাকি থাকা আসামীদের ছয় জন বিদেশে পালিয়ে যায়। সবচেয়ে জরুরী মেজর শরিফুল হক ডালিম। মনে করা হয় সে কানাডার লুকিয়ে আছে। অন্যরা নূর চৌধুরী, খন্দকার আব্দুর রশিদ, এম এ রশিদ চৌধুরী, মােসলেউদ্দিন এবং আব্দুল মাজেদ।

মনে রাখতে হবে ১৯৭৩ সালে লন্ডনে জিয়াউর রহমানের সাথে আমার আলােচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল কর্ণেল ফারুক রহমান। আমি জানি না কেন যেন আমার মনের খুব গভীরে এই লােকটা সম্পর্কে একটা। ননাংরা মনােভাব তৈরী হয়েছিলাে যে মুজিব হত্যার জন্য কর্ণেল জিয়াউর রহমান কর্ণেল ফারুক রহমানকে ব্যবহার করে কোন বড় অপারেশনের পরিকল্পনা করছেন। আর কি ভাবে সেই ভয় সত্যি হয়ে গেল। আমার জীবনের সবচেয়ে অনুতাপ মৃত্যুর দিন পর্যন্ত আমাকে ভােগাবে যে আমার। সাবধানতা সত্ত্বেও মুজিব আমার উপদেশ গুরুত্বের সাথে গ্রহন করেননি, পরিনতিতে আমি মুজিবের মূল্যবান প্রাণ বাঁচাতে পারিনি। যখন দেশের তাকে সবচেয়ে বেশি প্রয়ােজন তখনই তিনি সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন। মানুষের কল্যানে তিনি তার সবটুকু করতে তৈরী ছিলেন। যখন আমি ফারুক রহমান ও শরিফুল ডালিমের হাতে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর খবর পাই, তখন আমার মনে হয় মানুষ এত নিষ্ঠুর আর দয়াময়াহীন কিভাবে হতে পারে!

বাঙলাদেশের সামরিক একনায়ক হিসাবে জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসন পাঁচ বছর স্থায়ী হয়। তাকেও হত্যা করা হয় ১৯৮১

১৯৭

জেনারেল জিয়াউর রহমান সালের ৩০ মে। অনেকে বলে তার সহকর্মীদেরই একজন এই হত্যাকান্ড ঘটায়। তার উত্তরসুরি জেনারেল হুসাইন মােহম্মদ এরশাদ তার পর ক্ষমতায় আসেন। ১৯৯০ সনে জনতার অভ্যুত্থান এবং সামরিক অস্থিরতা তাকেও ক্ষমতা থেকে নীচে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। এরশাদের পরে ক্ষমতায় আসেন খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমানের বিধবা স্ত্রী।

***

* পাদ টীকাঃ বিশ্বস্ত সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ: মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) এস. এইচ. এম. বি. নূর চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর বুকে গুলি চালিয়েছিল। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নূর চৌধুরী বর্তমানে (২০১১ সাল) কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের জন্য অপেক্ষারত বলে জানা গেছে।

রেফারেন্স – ভারত, মুজিবুর রহমান, বাঙলাদেশের স্বাধীনতা ও পাকিস্তান – শশাঙ্ক ব্যানার্জী