২২ মার্চ ১৯৭১ঃ আজকের এদিনে শেখ মুজিব
মুজিব ইয়াহিয়া ভুট্টো ত্রিপক্ষীয় বৈঠক
সকালে রমনার প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান, শেখ মুজিব ও জুলফিকার আলী ভুট্টো আলোচনা বৈঠকে মিলিত হন। আজ ছিল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ষষ্ঠ দফা বৈঠক। বৈঠক প্রায় সোয়া ঘন্টা স্থায়ী হয়। পরবর্তী বৈঠক ২৩–২৪ তারিখের যে কোন একদিন হতে পারে। সে বৈঠকে উপদেষ্টারাও থাকিবেন।
সংবাদ মাধ্যম গুলো প্রকাশ করে ইয়াহিয়া খান বেতার ভাষণে সমাধানের একটি ঘোষণা দিতে পারেন এবং এর আগে তিনি সকল দলের সাথে বৈঠকে বসতে পারেন। এ জন্যই তিনি শাহ আহমেদ নুরানী এবং কাইউম খানকে ঢাকায় তলব করেছেন। জামাত এববং জমিয়তের নুরানী গ্রুপ বাদে সবাই ঢাকায় অবস্থান করছেন। নুরানী আগামীকাল ঢাকায় পৌছবেন।
ভূট্টো প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে হোটেলে ফিরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে তিনি তাদের পরে সাক্ষাৎ দিবেন বলে জানিয়েও পরে আর কথা বলেননি।
ত্রিপক্ষিয় বৈঠক চলাকালেই প্রেসিডেন্ট এর মুখপাত্র বিপুল সংখ্যক সাংবাদিকদের বলেন ২৫ তারিখের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আবারো স্থগিত করা হয়েছে, এ ব্যাপারে আজ রাতেই প্রেসিডেন্ট একটি ঘোষণা দিবেন।
প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে ফিরে শেখ মুজিব
প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে নিজ বাসভবনে ফিরে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমি আগেই বলেছি আমাদের দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে বসতে পারিনা। অধিবেশন স্থগিত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন তাই নাকি? দেশের দুই অংশের নেতাদের সাথে আলোচনা করে অধিবেশন স্থগিত করা হয়েছে এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন ইহা সঠিক নয়।
তিনি বলেন সাত কোটি বাঙ্গালী যখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তখন আমি অবশ্যই দাবী আদায় করে ছাড়ব। ২৩ বছর মার খেয়েছি আর মার খাতে রাজি নই। তিনি জনগণকে যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।
ক্যান্টনমেন্টে ইয়াহিয়া
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান দুপুরে ক্যান্টনমেন্টে যান এবং সেখানে উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের সাথে কয়েক ঘণ্টা ব্যাপী বৈঠক করেন।
নোটঃ ২২ তারিখেই ত্রিপক্ষিয় একটা সমঝোতা হয়েছিল। বৈদেশিক বাণিজ্য আংশিক মেনে বাকী সব মেনে একটি খসড়া চূড়ান্ত হয়েছিল। এই মানাটা ছিল লোক দেখানো এবং সেনা বৈঠকেই তা প্রত্যাখ্যাত হয় ফলে ২৩–২৫ তারিখে আর বৈঠক আগায়নি। আওয়ামী লীগ বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছিল ফলে ২৩ তারিখে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে।