You dont have javascript enabled! Please enable it!

ভাষা আন্দোলনকালীন ১৪৪ ধারার সেই নোটিশটি

ভাষা আন্দোলনের ব্যাপকতা আঁচ করতে পেরে পূর্ববঙ্গ সরকারের পক্ষে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোরেশী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এক মাসের জন্য ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেন। সমাবেশ ও শােভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়। মাইকে ১৪৪ ধারা জারির ঘঘাষণা প্রচার করা হয় শহরে এবং একই সাথে সরকারি নির্দেশ ভঙ্গ করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। এ সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে—
“ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গতকাল বুধবার ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করিয়া এক মাসের জন্য ঢাকা শহরে সভা, শােভাযাত্রা প্রভৃতি নিষিদ্ধ করিয়াছেন। আদেশজারির কারণস্বরূপ তিনি বলেন যে, একদল লােক শহরে সভা, শােভাযাত্রা ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের প্রয়াস পাওয়ায় এবং তদ্দ্বারা জনসাধারণের শান্তি ও নিরাপত্তা বিনষ্ট হওয়ার আশংকা থাকায় এই ব্যবস্থা অবলম্বিত হইয়াছে। কোতয়ালী, সূত্রাপুর, লালবাগ, রমনা ও তেজগাঁও থানার অন্তর্গত সমুদয় এলাকায় ইহা প্রবর্তিত হইয়াছে।”
[সূত্র : দৈনিক আজাদ, ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২]
সরকার কর্তৃক আন্দোলনকে দমন করার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করায় সর্বত্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ছাত্রসমাজের মধ্যে আতঙ্ক ও উত্তেজনা দু’টোই বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনাে কোনাে হলে নেতৃবৃন্দ বৈঠকে মিলিত হয়ে পরিস্থিতি পর্যালােচনা করেন। ফজলুল হক মুসলিম হলে আবদুল মােমিনের (নেত্রকোনা) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই সময় হল ছাত্রসংসদের ভিপি শামসুল আলম এবং জিএস আনােয়ারুল হক খান দু’জন সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সদস্য ছিলেন। সভায় আবদুল মােমিনকে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ এবং শামসুল আলমকে হলের ছাত্রদেরকে উক্ত সিদ্ধান্ত অবহিত করার দায়িত্ব দেয়া হয়।
(সূত্র : স্মৃতিচারণ : ৮০, এ্যাডভােকেট গাজীউল হক, পৃ. ১৪০] একই স্মৃতিচারণে গাজীউল হক উল্লেখ করেন যে, ওই দিনই সন্ধ্যায়। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ফকির শাহাবুদ্দিন আহমদ এর (পরবর্তীতে বিচারপতি) সভাপতিত্বে আরেকটি সভায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তা সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদকে জানানাে হয়।

Reference:

ভাষা আন্দোলন বায়ান্ন পূর্ব, গোলাম কুদ্দুস, pp 248-249, নালন্দা, ২০১৮

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!