ত্রিপুরায় চোরাবাজার দমন ও রেলপথ সংস্থাপন
বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে সমর্থনের অঙ্গ
লােকসভা সদস্য বীরেন দত্তের বিবৃতি
আমরা আজ লে, গভর্নরের নিকট এক স্মারকলিপিতে কয়েকটি দাবি করেছি। আমরা মনে করি মুক্তিসংগ্রামীদের জন্য ওষুধ-পত্র, খাদ্য ও সর্বপ্রকার প্রয়ােজনীয় সরবরাহের জন্য, অগৌণে আগরতলা পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারিত করা হােক।
বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি ত্রিপুরার জনগণের অফুরন্ত সমর্থন থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামের পটভূমিতে একে সংগঠিত করার কঠোর দায়িত্ব থেকে যাচ্ছে। আমরা ত্রিপুরার সংগ্রামী জনগণকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে বিভিন্ন দল, চক্র ও প্রশাসনের অংশগুলাে, দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী, চোরাকারবারীরা নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্য ও চালের দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দিয়ে ত্রিপুরার জনজীবন বিপর্যস্ত করে দিতে উদ্যত হয়েছে। এরা পাকিস্তানি সামরিক চক্রের এজেন্ট হিসেবেই ত্রিপুরার মতাে একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকাতে বাংলার মুক্তি সংগ্রামের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় সরকার রেলপথ ও যােগাযোেগ ব্যবস্থাকে দ্রুত উন্নত করার পরিবর্তে বেসরকারি বিমানে যাত্রীর ভাড়া ১৫০ টাকা হারে গ্রহণের অনুমতি দিয়ে ভয়াবহ মুনাফাবাজির নজির সৃষ্টি করে দুষ্কৃতিকারীদের প্রেরণা দিচ্ছে।
অগৌণে এই সব দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য ব্যাপক জনমত সংগঠিত করা প্রয়ােজন। মুক্তিকামী বাংলার এই প্রচণ্ড আত্মত্যাগী সংগ্রামকে নিজেদের মুক্তি সংগ্রামের অঙ্গ হিসেবে গ্রহণ করে সর্বত্যাগী আন্দোলন সংগঠিত করে তুলুন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণে পূর্ণাঙ্গ রাজ্য সংক্রান্ত বিল উত্থাপনের বিষয় সংযােজন দাবি
ত্রিপুরাকে পূর্ণাঙ্গ রাজ্য ঘােষণা সংক্রান্ত বিল লােকসভার এই অধিবেশনে উত্থাপন করার বিষয়ে রাষ্ট্রপতির ভাষণে উল্লেখ না থাকায় ত্রিপুরা থেকে নির্বাচিত এমপি, কমরেড বীরেন দত্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে লােকসভায় এই বিষয়ে সংযােজনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন। কমরেড দত্ত, উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় আঞ্চলিক কমিটি গঠন এবং অনুন্নত ত্রিপুরার জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দের বিষয়ও রাষ্ট্রপতির ভাষণে সংযােজিত করার দাবি জানান।
সূত্র: দেশের ডাক
০৯ এপ্রিল, ১৯৭১
২৬ চৈত্র, ১৩৭৭