ডিজেলের অভাবে স্কুলের পাঠ্যবই এখনও সবখানে পৌছেনি।
১২ মে ১৯৭২ | দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময়
বাংলাদেশ স্কুল টেক্সট বুক বাের্ড এখনও সব জায়গায় পাঠ্যপুস্তক পৌছাতে পারেনি। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বল্পমূল্যের বই এখন পর্যন্ত মাত্র সতেরটি মহকুমায় পৌছানাে হয়েছে।
পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য বই পাঠানাে হয়েছে উনিশটি মহকুমায়। আরাে অনেক মহকুমায় বই পাঠানাে হয়েছে, তবে তা এখনও গিয়ে পৌঁছেনি। আবার অনেক মহকুমায় এখনও বই পাঠানােই হয়নি। এ ব্যাপারে বাের্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন যে, কেবলমাত্র যানবাহনের অভাবেই তারা বই পাঠাতে পারছেন না। সম্প্রতি ডিজেলের অভাবে স্বাভাবিক ট্রাক চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে আছে, ফলে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহের কাজও অব্যাহত হচ্ছে না। অবশ্য যেসব মহকুমায় রেলপথে যােগাযােগ করা সম্ভব, সেসব স্থানে বই পাঠানাের ব্যবস্থা হচ্ছে। টেক্সট বুক বাের্ড গত ৫ মে থেকে পুস্তক বিতরণের কাজ শুরু করেছে। বাের্ড বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৮০ লাখ ও স্বল্পমূল্যে বিতরণের জন্য ২৫ লাখ বই ছাপিয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কত সংখ্যক বইয়ের প্রয়ােজন বাের্ড কর্তৃপক্ষ সে সম্পর্কে কোনাে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে নি। যে পরিমাণ বই ছাপানাে হয়েছে তা যদি চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয় তাহলে বাের্ডকে নতুন করে আরও বই ছাপাতে হবে। তবে বাের্ড কর্তৃপক্ষ মনে করেন যে, আগামি বছর এ ধরনের কোনাে অসুবিধায় আর পড়তে হবে না। কেননা এ বছরের অভিজ্ঞতায় তারা আসছে বছরের প্রয়ােজনীয়তা নিরূপণ করতে পারবেন।
শিক্ষকদের অভিযােগ: এদিকে স্কুল শিক্ষকরা অভিযােগ করছেন যে তারা বই পাচ্ছেন না। বছরের অর্ধেক প্রায় শেষ হতে চললাে। এখনও যদি তারা ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে বই তুলে দিতে না পারেন তাহলে পড়াশুনা হবে কখন। ঢাকা শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলের শিক্ষকরা জানান যে তারা ব্যাংকে নিয়মিত ধর্না দিয়েও বই পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে ব্যাংকের লােকেরা বলছেন যে, তারা বাের্ডের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক বই পাচ্ছেন না। তাদেরকে যা সরবরাহ করা হচ্ছে তারা তাই বিক্রি করছেন। উল্লেখ্য যে, স্বল্পমূল্যের পাঠ্যপুস্তক বিক্রয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সােনালী ব্যাংককে। ঢাকা শহরে সােনালী ব্যাংকের তিনটি শাখা থেকে বই বিক্রি করা হচ্ছে।৪৩
Reference:
১২ মে ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, p 347-348
ছবি – শিক্ষামন্ত্রী ইউসুফ আলী