১০ মার্চ ১৯৭১ঃ আজকের এদিনে শেখ মুজিব
শেখ মুজিবুর রহমানের বিবৃতি
ঢাকায় শেখ মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা অনিচ্ছাই আজ শেষ কথা বাংলাদেশের জনগণের নামে আমি যে নির্দেশ দিয়েছি সচিবালয়–সহ সরকারি ও আধাসরকারি অফিস আদালত, রেলওয়ে ও বন্দরগুলোতে তা পালিত হচ্ছে। যারা মনে করেছিলেন যে শক্তির দাপটে আমাদের উপর তাদের মত চাপিয়ে দিবেন বিশ্ব এর দরবারে তাদের চেহারা আজ নগ্ন ভাবে ধরা পড়েছে। বিশ্ব জনমত বা পশ্চিম পাকিস্তানের চিন্তাশীল মানুষের কাছে তারা বাংলার নিরীহ নিরস্র মানুষের উপর শক্তির নগ্ন প্রয়োগের যৌক্তিকতা প্রমানে ব্যর্থ হয়েছেন।
এতদসত্তেও বিবেক বর্জিত সেই শক্তি তাদের বেপরোয়া পথই সমানে অনুসরন করে চলেছেন। তারা ইতিমধ্যে অস্র সস্র আনয়ন করছেন। তাদের কার্যক্রমে বিদেশীদের মনে অজানা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে তারা দলে দলে বাংলাদেশ ত্যাগ করছেন। তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের সমালোচনা করে বলেন তিনি তার স্টাফদের নিরাপত্তার কথা বলে সরিয়ে নিতে চাচ্ছেন এতে তার দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না কারন যে হুমকি আজ উদ্যত হয়েছে তা গণহত্যার হুমকি সে হুমকি বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্য জাতিসংঘ সনদের সংরক্ষিত মৌলিক মানবাধিকার অস্বীকৃতির নামান্তর।
তিনি বলেন স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বসবাস করার অধিকার লাভ ও মুক্তিলাভের জন্য যে কোন ত্যাগ ও সংগ্রাম করার জন্য বাঙ্গালীরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশের মানুষের দৃঢ় মনোবল বিশ্ব এর যে কোন দেশের জনগনের প্রেরনা হওয়া উচিত।
লন্ডন টাইমসের সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাৎকারে শেখ মুজিব
সকালে শেখ মুজিবুর রহমান স্বীয় বাসভবনে লন্ডন টাইমসের সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন, সাতকোটি বাঙালি আজ নিজেদের অধিকার সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন। যে কোন মূল্যে তারা এই অধিকার আদায়ে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বাঙালিরা অনেক রক্ত দিয়েছে। বাঙ্গালিরা এবার এই রক্ত দেয়ার পালা শেষ করতে চায়। বাংলার মানুষ তাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির জন্যই সাম্প্রতিক আন্দোলনে জড়িত হয়েছে। তিনি এদেশের মানুষের প্রকৃত অবস্থা বিদেশে তুলে ধরার জন্য তার প্রতি আহবান জানান।