You dont have javascript enabled! Please enable it! জি এম সৈয়দ - সংগ্রামের নোটবুক

জি এম সৈয়দ
জি এম সৈয়দ একজন সিন্ধ জাতীয়তা বাদী নেতা ছিলেন ।১৯৪৭ এর পর তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টি নামে একটি দল করেছিলেন ।সিন্ধু প্রাদেশিক পরিষদে ১৯৫৩ সালে এম এল এ হন । ১৯৫৫ সালে পশ্চিম পাকিস্তান একিভুত সংসদের এম পি হন ।পরে আওয়ামী লীগের সাথে কিছুদিন থাকার পর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি নামে দলে যুক্ত হন । ১৯৬৯ সালে সিন্ধু ইউনাইটেড ফ্রন্ট নামে একটি দল গঠন করেন ।১৯৭০ এর নির্বাচনে পশ্চিম পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের সাথে জোট করে নির্বাচন করার কথা থাকলেও জোট আর করা হয় নি ।তার দল পূর্ব পাকিস্তানের ন্যায় সঙ্গত দাবির প্রতি সব সময় সহানুভুতি ছিল।৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১। সিন্ধুর প্রবীণ জাতীয়তাবাদী নেতা জি এম সৈয়দ ঢাকায় এসে নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর বাসভবনে দেখা করেন। দুই নেতার সঙ্গে কথা হয় চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। আলোচনার একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করে জি এম সৈয়দ বললেন, ভুট্টো সামরিক শাসকদের সঙ্গে মিলে চক্রান্ত করছেন। ওদের আসল উদ্দেশ্য হলো, আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা। সৈয়দের প্রত্যাশা, ‘যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, তাহলে আমরা এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারব; যাতে নির্যাতিত সিন্ধ, বালুচ ও পাঠানদের অধিকার রক্ষা হবে। একটি বহুজাতিক ইউনিয়নের মধ্যে তারা বসবাস করতে পারবে।’
১৯৬৬ সালে লাহোরে বিরোধী দলের নেতাদের এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম ছয় দফা প্রস্তাব পেশ করেন। রক্ষণশীল দলগুলোর নেতারা ছয় দফা নিয়ে আলোচনায় আপত্তি জানালেও সিন্ধুর জাতীয়তাবাদী নেতা জি এম সৈয়দ ও আবদুল মজিদ সিন্ধিসহ অনেকেই সমর্থন করেছিলেন। এ ব্যাপারে সৈয়দের ভাষ্য: শেখ মুজিবের ছয় দফা প্রস্তাব যেমন পূর্ব বাংলায় ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিল, তেমনি সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও সীমান্ত প্রদেশের মানুষও স্বাগত জানিয়েছিল। এরপর পশ্চিম পাকিস্তানে এক ইউনিটের বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার হয়। ১০ আগস্ট ১৯৬৬ সিন্ধু মুত্তাহিদা মাহাজ-এর উদ্যোগে শেখ মুজিবকে করাচির মেট্রোপলিটন হোটেলে একটি সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সেখানে জি এম সৈয়দ বলেন, ‘আমরা আপনার ছয় দফাকে সমর্থন করি। কেননা, এতে প্রতিটি প্রদেশের বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের কথা আছে। এর পাশাপাশি এক ইউনিট–বিরোধী আন্দোলনে সমর্থন চাই।’
জি এম সৈয়দের মতে, ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণার পর পাঞ্জাবি সামরিক ও বেসামরিক আমলা চক্র ভুট্টোকে নকল হিরো বানিয়ে মাঠে নামায়। ৯ মার্চ ১৯৬৯-এ মুত্তাহিদা মাহাজ সভা ডেকে শেখ মুজিবের ছয় দফার অনুসরণে আরেকটি দাবিনামা পেশ করে, যাতে এক ইউনিট ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত করা, সিন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তি, গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছিল; যা আওয়ামী লীগের ছয় দফার কাছাকাছি।

ছবিতে বঙ্গবন্ধুর বাম হাতের সাথে বসা ব্যক্তি জি এম সৈয়দ