You dont have javascript enabled! Please enable it!

আটক বন্দীদের মুক্তি দাবী

(আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রথম বিবৃতি।)

১৪ এপ্রিল ১৯৫৩

ঢাকা।

 

সম্প্রতি চাঁদপুর, যশোর ও রংপুর সফরে গমনের পূর্বে আমি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী সহ সকল রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দান সম্পর্কে জনাব নূরুল আমিনের সহিত সাক্ষাৎ করি। অন্যান্য নেতাও আমার সঙ্গে ছিলেন। জনাব নূরুল আমিন আমাদিগকে বলেন যে, সরকার রাজনৈতিক বন্দীদের ক্রমে ক্রমে মুক্তি দানের নীতি অবলম্বন করিয়াছেন। আমরা তাহাঁকে রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তিদান ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তা বুঝাইয়া দেই এবং তিনি আমাদিগকে এই আশ্বাস দেন যে, বিষয়টি পূর্বাপেক্ষা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হইবে। কিন্তু প্রায় তিন সপ্তাহ পূর্বে জনাব নূরুল আমিনের সহিত আমাদের সাক্ষাৎকারের পর এযাবৎ আর কাহাকেও মুক্তি দেওয়া হয় নাই দেখিয়া আশ্চর্য হইতেছি। গত মাসখানেক যাবত রোজা রাখা ও শুধু পানি দিয়া এফতার করার দরুন জেলে মওলানা ভাসানী ও অন্যান্যের স্বাস্থ্যের অবস্থার অত্যন্ত অবনতি হইয়াছে।

 

সরকার দীর্ঘদিন যাবত দেশে রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয় নাই। তদুপরি তাহারা বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে নেতাদের গ্রেফতার অভিযান নূতন করিয়া শুরু করিয়াছেন। উদাহরণস্বরূপ চাঁদপুর, বরিশাল ও কুষ্টিয়ার বিষয় উল্লেখ করা যাইতে পারে। বিরোধীদলকে দমাইয়া রাখিবার জন্য সরকার সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজকেও কাজে লাগাইয়াছেন। সভাসমিতি, বিক্ষোভ ও ধর্মঘট প্রভৃতিতে যোগদানের জন্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে ছাত্রদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা অবলম্বনে বাধ্য করিয়াছেন।

 

সরকার সম্প্রতি সকল বিভাগে একই নীতি অবলম্বনেরও সিদ্ধান্ত লইয়াছেন। ইহার ফলে যাহারা বেকার হইয়া পড়িবে বর্তমান অধিক সংকটের দিনে তাহাদের দুর্দশার সীমা থাকিবে না। সরকারের এইসব কার্যকলাপ দেশের সর্বোত্র অসন্তোষের সৃষ্টি করিবে।

 

আমি সরকারের নিকট অবিলম্বে বিনাবিচারে আটক সকল রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তি দাবী করিতেছি।

 

আওয়ামীলীগ ওয়ার্কিং কমিটি ১৭ ই এপ্রিল তারিখে প্রদেশের সকল বন্দিমুক্তি ও প্রার্থনা দিবস হিসেবে সিদ্ধান্ত করিয়াছেন। এই দিবসকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য আমি সকল ইউনিটের প্রতি আবেদন জানাইতেছি।

 

 

Reference:

দৈনিক আজাদ, ১৫ এপ্রিল ১৯৫৩

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!