২৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ঃ একনজরে এদিন
প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান পাবনার নগরবাড়িতে এক সমাবেশে ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ২৯ তারিখের মধ্যে তাদের ক্যাম্প ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন নির্দেশ অমান্য করলে তিনি দালাল বলে গণ্য হবেন। তিনি দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন ছাত্র মুক্তিযোদ্ধাদের এখন থেকেই লেখা পড়ায় মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন মুক্তিযোদ্ধারা পুলিশ বা রক্ষীবাহিনীতে যোগ দিতে চাইলে তাদের সাদরে গ্রহন করা হবে। যারা বেকার তারা যেন গ্রামে ফিরে যায় এবং কৃষিকাজে যেন মনোযোগ দেয়। সময় আসলেই মুক্তিযদ্ধাদের চাকুরীর জন্য ডাকা হবে। সকল চাকুরীতেই মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা থাকবে। তিনি বলেন যারা আমার এ নির্দেশ অমান্য করবে তারা রাজাকার আলবদর হিসেবেই গণ্য হবে। তিনি বলেন এ শ্রেণীর লোকেরাই ১৬ ডিসেম্বরের পর হতে সারা দেশে লুটপাটের সাথে জড়িত। তিনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কঠোর হস্তে দমন করার জন্য জনগনের প্রতি আহবান জানান। চাকুরীর ক্ষেত্রে তিনি তদবির করা থেকে বিরত থাকার জন্য জনগনের প্রতি আহবান জানান তিনি বলেন তদবির করলে চাকরি হবে না।
কৃষকদের তিনি কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটানোর আহবান জানান। তিনি বলেন আপনাদের কাজ করতে হবে ফসল ফলাতে হবে আমি কিছু দিতে পারবো না। বিদেশী সাহায্যের চেষ্টা করছি স্বাধীনতা বিকিয়ে তো সাহায্য নিতে পারিনা। তিনি বলেন হানাদার বাহিনী সব শেষ করে দিয়ে গেছে। তাদের হাতে নিহত ত্রিশ লক্ষ লোকের পরিবার আমার দিকে চেয়ে রয়েছে। আমি তাদের মুখে অন্ন দিতে পারছি না।
তিনি পাবনায় একটি বাধ নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধন করেন। ৫০ লাখ টাকা বেয়ে নগরবাড়ি থেকে বেড়া পর্যন্ত ১৪ মেইল ব্যাপী এ বাধ নির্মিত হচ্ছে। সভায় পানি সম্পদ মন্ত্রী খন্দকার মস্তাক আহমদ বক্তৃতা করেন।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ রুশ মৈত্রী সমিতির এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান এক বানী দেন। বানীতে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সোভিয়েত সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান টেলিভিশনে তার প্রস্তাবিত সোভিয়েত ইউনিয়ন সফরের উপর একটি আগাম তথ্যচিত্র দেখেন।
বুল্গেরিয়ান বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের নেতা জনাব পিতকেভ অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিনের সাথে দেখা করেছেন।